সুপার এমারজেন্সি, শুভেন্দুর পর্দা ফাঁস করে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে তৃণমূলের নিশানায় ইডি-সিবিআই

একই দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা হলে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না ইডি বা সিবিআই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিডিয়া ট্রায়াল করে শুধু তৃণমূলের বদনামের চেষ্টা

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে শুধু একটি দলকেই নিশানা করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি। দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা ও বিধায়ককে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু, একই দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা হলে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না ইডি বা সিবিআই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিডিয়া ট্রায়াল করে শুধু তৃণমূলের বদনামের চেষ্টা। আজ, মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে তথ্য সহ সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই অভিযোগে সরব হলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও শশী পাঁজা।

সাংবাদিক সম্মেলনে ব্রাত্য বসু প্রশ্ন তোলেন, ”নিয়োগ দুর্নীতিতে যাদের নাম উঠে আসছে তাদের মধ্যে শাসক দলের নেতাদেরই ডাকা হচ্ছে। কিন্তু বাকিদের ডাকা হবে কবে?” এই প্রসঙ্গে শশী পাঁজা টেনে আনেন প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে পাওয়া বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের নামের দলিলের প্রসঙ্গ। নারদায় শুভেন্দু অধিকারীর টাকা নেওয়ার ভিডিও পোস্ট করেছিল বিজেপি। কিন্তু এখন গেরুয়া শিবিরে যাওয়ায় সব ওয়াশিং মেশিন বলে কটাক্ষ করেন শশী পাঁজা।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী দলবদলু হিমন্ত বিশ্বশর্মা সারদা কেলেঙ্কারিতে সরাসরি যুক্ত। অথচ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে যখন প্রশ্ন করা হচ্ছে, তখন সাংবাদিক সম্মেলনে মুচকি হেসে তিনি সেটা এড়িয়ে যাচ্ছেন, এই সেই প্রশ্নও তোলেন শশী পাঁজা। পাশাপাশি তাঁর দাবি, তৃণমূলের যাঁরা যাঁরা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দলীয় দফতর থেকে কোনও টাকা উদ্ধার হয়নি।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ”সারদা নারদা মামলায় এখনও ট্রায়াল শুরু হয়নি। এসএসসি তালিকা তৃণমূলের কিছু যোগ সূত্র রয়েছে। সিপিএমের বাড়ির লোক রয়েছে। বিজেপির বাড়ির লোক রয়েছে। কুণাল ঘোষ নিজে ৫৫ জনের তালিকা দেখিয়েছেন। যাতে কাঁথি, পটাশপুর, খেজুরি সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকার চাকরিপ্রার্থীরা সেই তালিকায় আছেন, যাদের নাম শুভেন্দু সুপারিশ করেছিলেন। সেই তালিকায় রয়েছে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ সঞ্জীব সুকুলের নাম। তাহলে তাঁকে কেন ডাকা হবে না?”

এখানেই শেষ নয়, তিনি বলেন, ”তৃণমূলের সঙ্গে ১৫-২০ জনের যোগ সূত্র পেয়ে তদন্তে নেমেছে। কিন্তু সিপিএমের যোগ নিয়ে কেন তদন্ত হবে না?” বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন শশী পাঁজাও। তিনি বলেন, ”গ্রুপ-সি তালিকায় তো বিজেপি নেতা দুলাল বরের মেয়ে আছে। কালনা হিঙ্গগঞ্জের সিপিএম নেতার ছেলে আছে। কেন এদের নিয়ে তদন্ত হবে না?”

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বলেন, “মোট ৩৫০ কোটি টাকার দুর্নীতি। ইতিমধ্যে ১২০ কোটি টাকা ইডি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাহলে বাকী টাকা কোথায়, এটাই বের করার কাজ হল ইডির। কিন্তু গণমাধ্যমে তারা সূত্র ভাসিয়ে দিচ্ছেন। শশীদি বললেন খাপ পঞ্চায়েত করা হচ্ছে, মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। আমাদের অপরাধ হলে আমরা ৩ বারের নির্বাচিত সরকার। গরিবের সরকার। অনেক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছেন। করুন। কিন্তু বিজেপি যেসব নেতার নাম ধরে বলা হচ্ছে তাদের কি একবারও ডাকবেন না? আমাও চাই তদন্ত দ্রুত শেষ হোক। ২০১৩ বা ২০১৪ সালে সারদা মামলা শুরু হয়েছিল। নারদা মামলা হয়েছিল ২০১৬ সালে। কোনও ট্রায়াল এখনও হয়নি। তাহলে বিচার চাইলে দ্রুত ট্রায়াল হোক।”

প্রসঙ্গত, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুভেন্দুর সরাসরি যোগ ও অযোগ্যদের সুপারিশ নিয়ে যে ৫৫ জনের তালিকা প্রকাশ করেছিলেন, এদিন তার সঙ্গে আরও ৭টি নামের তালিকা প্রকাশ করে তৃণমূল। যাঁরা সরাসরি সিপিএম অথবা বিজেপি নেতাদের পরিবারের কিংবা তাঁদের ঘনিষ্ঠ।

সিপিএম এবং বিজেপির সঙ্গে যুক্ত আরও ৭জন অযোগ্যদের তালিকা—

 

Previous articleআন্তর্জাতিক ট্রাই নেশন টুর্নামেন্টের জন্য ২৩ জনের অস্থায়ী দল ঘোষণা করলেন স্টিমাচ
Next articleকমিশনের ভোটার তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিরোধীরা, তৃণমূল কর্মীদের সতর্কবার্তা সুব্রতর