Wednesday, December 3, 2025

শনির দশা সংস্থার! ‘মডেল গুজরাট’ থেকেও মুখ ফেরাল আদানি গ্রুপ  

Date:

Share post:

হিন্ডেনবার্গ (Hindenburg Case) মামলায় আগেভাগেই শেয়ার দরে কারচুপি ও আর্থিক প্রতারণা মামলায় মুখ পুড়েছে ভারতের অন্যতম পরিচিত সংস্থা আদানি গ্রুপের (Adani Group)। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সাম্প্রতিক সময়েও এশিয়ার প্রথম ও বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীতম ব্যক্তি ছিলেন গৌতম আদানি (Goutam Adani)। তবে সেই সময় এখন অতীত। বর্তমানে গভীর সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে আদানি গ্রুপ। ইতিমধ্যে সংস্থার একাধিক বড় প্রকল্প অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই স্থগিত প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে কয়লা (Coal) ও পিভিসি (Polyvinyl Chloride) প্ল্যান্টের মত বড় প্রকল্প। আর সেই তালিকায় এবার নয়া সংযোজন গুজরাট (Gujrat)। জানা গিয়েছে, মোদি রাজ্যের মুন্দ্রায় আদানি গ্রুপের একাধিক ‘উন্নয়নমূলক’ কাজ চলছিল। যার মধ্যে ছিল পিভিসি প্ল্যান্টও। কিন্তু সম্প্রতি আদানি গ্রুপ অনির্দিষ্টকালের জন্য এই প্রকল্পটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর আদানি গোষ্ঠীর এমন পাত্তারি গুটিয়ে ফেলাকেই এবার নিশানা করেছেন বিরোধীরা।

বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে আদানি গোষ্ঠীকে বাড়বাড়ন্তের ছাড়পত্র দিলেও হিন্ডেনবার্গ মামলায় আখেরে যে কেন্দ্রের মুখ পুড়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর আদানি গোষ্ঠী বিপাকে পড়তেই কার্যত তাদের থেকে দূরত্ব বজায়ের চেষ্টা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী বারবার শিল্প, উন্নয়নের বুলি আওড়ালেও নিজের রাজ্যের এমন অবস্থা দেখে বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, পিভিসি প্ল্যান্টের প্রকল্পটিতে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।

ইতিমধ্যে প্ল্যান্টের নির্মান কাজের জন্য সংস্থাটি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI) সহ সাত থেকে আটটি ব্যাঙ্কের একটি কনসোর্টিয়াম থেকে ১৪ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য আলোচনাও শুরু করেছিল। কিন্তু সব চেষ্টাই কার্যত বিফলে গেল। জানা গিয়েছে আদানি গোষ্ঠীর এই প্রকল্পের জন্য তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনাও ইতিমধ্যে বাতিল করে দিয়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়, আদানি গ্রুপ ৭ হাজার কোটি টাকার কয়লা প্ল্যান্ট কেনার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীর অংশীদারিত্বের জন্য বিড করার পরিকল্পনাও আপাতত বাতিল করেছে বলে খবর।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গের রিসার্চে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতি (Account Fraud), স্টক ম্যানিপুলেশন (Stock Manipulation) এবং অন্যান্য কর্পোরেট গভর্নেন্স ল্যাপসের অভিযোগে প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরেই আদানি গ্রুপের শনির দশা শুরু হয়। আর সেই রেশ এখনও চলছে। যার ফলস্বরূপ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তার প্রভাব পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে দেশের একাধিক জায়গায় মনস্থির করা প্রোজেক্ট থেকেও হাত সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে আদানি গোষ্ঠী। তবে আদানি গ্রুপ সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়েছে, সংস্থার প্রতিটি স্বাধীন পোর্টফোলিও কোম্পানির ব্যালেন্স শীট খুবই শক্তিশালী। তবে আপাতত গুজরাটের কাজ স্থগিত রেখে স্টকহোল্ডারদের (Stockholder) দিকেই মনোযোগ দিতে চায় তারা।

 

 

spot_img

Related articles

জেলা সফরে বহরমপুরে মুখ্যমন্ত্রী: বুধের সভার জন্য প্রস্তুত মালদহের গাজোল

মঙ্গলবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক শেষেই জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী। পৌঁছে যান মুর্শিদাবাদে বহরমপুরে। বুধবার সকালে  তিনি হেলিকপ্টারে করে উড়ে...

নিভৃতে… খাদ্যহীন! যার জন্য দেশে সূ্ত্রপাত ‘নারী আন্দোলনে’র, সেই ‘মথুরা’ই দুরবস্থায় মহারাষ্ট্রে

সেই সালটা ১৯৭২। এখন ২০২৫। মাঝে পেরিয়েছে ৫৩ বছর। এর মধ্যে তাঁকে ভুলেই গিয়েছে গোটা দেশ। হঠাৎ মনে...

বুধেই ভাগ্য নির্ধারণ! বাংলাদেশে বসে ফেরার অপেক্ষায় অন্তঃসত্ত্বা সোনালি

বাংলাদেশে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। ফলে জেলমুক্তি ঘটেছে। কিন্তু নিজের দেশে, নিজের ঘরে ফেরা কবে? আজও জানেন না বীরভূমের...

প্রশাসনিক গতি ফেরাতে যাদবপুরে দুই মাসের অস্থায়ী রেজিস্ট্রার সেলিম বক্স মন্ডল

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্ম দীর্ঘদিন ধরে রেজিস্ট্রার শূন্য থাকার কারণে বিঘ্নিত হচ্ছিল। কর্মসমিতির বৈঠক হলেও রেজিস্ট্রার অনুপস্থিত থাকায়...