চলতি বছর দেশের ৪ রাজ্যে হতে চলেছে বিধানসভা নির্বাচন(Assembly Election)। এই তালিকায় রয়েছে কর্ণাটক(Karnataka), মধ্যপ্রদেশ(Madhya Pradesh), রাজস্থান(Rajsthan) এবং ছত্তিশগড়(Chattishgar)। ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এই রাজ্য রাজ্য বিজেপির কাছে অ্যাসিড টেস্ট। কিন্তু বিজেপির আশঙ্কা এই চার রাজ্যের মধ্যে ৩ রাজ্যেই হারতে চলেছে বিজেপি(BJP)। এই আশঙ্কার অন্যতম কারণ অবশ্যই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তবে হারের আশঙ্কা বুকে চেপে থাকলেও মুখে জয়ের আত্মবিশ্বাস ফুটিয়ে তুলতে কোনও ঘাটতি রাখতে চাইছে না গেরুয়া শিবির।
বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, কর্ণাটক, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে রীতিমতো টানাটানি শুরু হয়েছে বিজেপির অন্দরে। তাতেই আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। কর্নাটকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে। কিন্তু গত তিন মাস ধরে তিনি আবার সক্রিয়। সম্প্রতি দিল্লির কর্তাদের তোয়াক্কা না করে বেনজিরভাবে পুত্রের নির্বাচনী কেন্দ্রের নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। যা বিজেপির সাংগঠনিক নিয়ম বিরুদ্ধ। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন কর্ণাটকে তিনিই শেষ কথা। বোম্মাইকে নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষ চরমে। সবমিলিয়ে এই রাজ্যে হারের আশঙ্কায় ভুগছে বিজেপি। অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশে আশঙ্কা বাড়ছে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধ্রিয়াকে নিয়ে। কমলনাথের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। সিন্ধ্রিয়ার লক্ষ্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়া। এদিকে বিজেপির প্রথম পছন্দের শিবরাজ সিং চৌহানের মুখ্যমন্ত্রী পদ ক্ষোভ বাড়াবে সিন্ধ্রিয়ার। তবে বর্তমান অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রীকে একেবারেই চটাতে নারাজ বিজেপি। ফলস্বরুপ এই দ্বন্দ্বেই হারের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন বিজেপি।
পাশাপাশি রাজস্থান রাজনীতিতে মোদি ও শাহকে একেবারেই গ্রাহ্য করেন না বসুন্ধরা রাজে। জয়পুরে থেকে দূরে, ঢোলপুরের প্রাসাদে বসেই তিনি দলের সিংহভাগ বিধায়ককে নিয়ন্ত্রণ করেন। রাজস্থানে অন্তত ৪৬ জন বিধায়ক তাঁর শিবিরে। তিনি যে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন, সেকথাও প্রায় ঘোষণা করে দিয়েছেন। অন্তর্দ্বন্দ্ব ঠেকাতে তাই এবার রাজস্থানে নিয়ে যাওয়া হতে পারে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে। কিন্তু ভোটের আগে নয়। তাহলে বসুন্ধরার রোষ নেমে আসবে ভোটব্যাঙ্কে। সব মিলিয়ে হারের শঙ্কায় ত্রস্ত বিজেপি। ছত্তিশগড়ে আবার ক্ষমতা হারানোর পর একসময়ের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী জনপ্রিয় রমণ সিংকে গত ৫ বছর ধরে সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি মোদির দল। তাই সেখানে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার মতো মুখ নেই। সবমিলিয়ে আসন্ন ৪ রাজ্যের নির্বাচনে জয় নিয়ে বেশ চাপে বিজেপি। আর এই নির্বাচনে যদি গেরুয়া শিবির সাফল্য না পায় সেক্ষেত্রে ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে কুর্সি দখলের সম্ভাবনা সরে যাবে আরও দূরে।