“উনি কি হরিদাস পাল?” মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সুজনের স্ত্রীর চাকরির তদন্ত চান ব্রাত্য

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তী কোন পদ্ধতিতে কলেজে ক্লার্কের চাকরি পেয়েছিলেন? তিনি কি কোনও পরীক্ষা দিয়েছিলেন? তিনি কী ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন? কিছু নথি পেশ করে এমনই প্রশ্ন তুলেছিলেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ-সহ আরও অনেকে। তাঁরা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আবেদনও করেন।

আজ, শুক্রবার বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী’র চাকরি বৈধ কিনা তা খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। তদন্তের কথাও শোনা গেল তাঁর মুখে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেই গোটা বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন ব্রাত্য বসু।

এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিএমকে তোপ দাগেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “সরকারি ভাবে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে এই সাংবাদিক বৈঠক করছি। সিপিএম রাজনৈতিক দল নয়। একটা সভা। অ্যাটিটিউড। যার প্রধান লক্ষণ কাজ না করে বড় বড় কথা বলা। অন্যের কাজে খুঁত ধরা। কুৎসা করা তাদের ট্র্যাডিশনে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল সেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীও এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও একই কাজ করে যাচ্ছে সিপিএম।”

সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরি প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু বলেন, “সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী কোন কলেজে চাকরি করেন, কাল অবধি জানতামই না। ওদের মতো কে কখন ট্রেনে, বাসে যাতায়াত করছে, বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করছে, আমরা তার খোঁজ করি না। আমাদের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক কিছু তথ্য সামনে এনেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও।” এরপরই শিক্ষামন্ত্রীর সংযোজন, “১৯৭৯ সালে তৈরি হয়েছিল কলেজ সার্ভিস কমিশন। তখনও গ্রুপ সি এবং ডি-কে ওরা কলেজ সার্ভিস কমিশনের আওতায় আনেনি। নথি থেকে তাই পরিষ্কার নয় যে, ওঁর (সুজনের স্ত্রী) ক্ষেত্রে পরীক্ষা বা ইন্টারভিউ হয়েছিল কি না।”

সুজনের স্ত্রীর চাকরি নিয়ে তদন্ত হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন ব্রাত্য। তাঁর কথায়, “তদন্ত করতে হবে কি না, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই ঠিক করব। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী যদি বলেন, আমার কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত করছ কেন, তাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে আগে জানাব।’’ গত ১২-à§§à§© বছর ধরে কেন এই নিয়ে মুখ খোলেনি বর্তমান সরকার, সেই কারণও জানিয়েছেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘উনি অবসর নিয়েছেন ২০২১ সালে। এই সরকারের বেতন নিয়েছেন এবং এখন পেনশন নিচ্ছেন। ১২-à§§à§© বছর ধরে এ নিয়ে আমরা কোনও কথা বলিনি। কারণ আমরা বদলা নয়, বদল চাই।’’

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বারবার তৃণমূল সরকার, মুখ্যমন্ত্রী ও শাসক দলের নেতাদের কটাক্ষ করেছে সিপিএম। কুৎসিতভাবে ব্যক্তি আক্রমণ করছে। যা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, “সিপিএম হুমকি দিচ্ছে। কী বলতে চায়, ওদের কেউ স্কুল, কলেজে চাকরি করেননি? আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনেককে জানি, যাঁদের পরিবারের সদস্যেরা চাকরি পেয়েছেন।’’ ব্রাত্য এও বলেন, ‘‘শ্বেতপত্রে সব লেখা থাকবে। তৃণমূল এক বারও বলেনি দুর্নীতি ছিল। সেই শ্বেতপত্রের ভিত্তিতে যদি কখনও কেউ মামলা করেন, আদালত যদি তদন্তের নির্দেশ দেয়, যদি দেখা যায় হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী বঞ্চিত?” এর পরেই তাঁর কটাক্ষ, ”কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়বেন না।”

সুজন চক্রবর্তীর একটি টুইটের জবাবও এদিন দিয়েছেন ব্রাত্য। সিপিএম নেতা খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ”উনি কে হরিদাস পাল? প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী? পলিটব্যুরো সদস্য? প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নিজের তুলনা করছেন? দলে কী জায়গা রয়েছে ওঁর? সকাল থেকে বাইট দেওয়ার জন্য বসে থাকেন। যা হয়েছে, তা কাল পার্থ ভৌমিক বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন। বাকিটা শ্বেতপত্রে প্রকাশ করা হবে।”