বাংলা মেধা-বুদ্ধি দিয়ে নিজেরটা করে নিতে পারে: পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের ইট গেঁথে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর

জমি আন্দোলনের সিঙ্গুর থেকেই ৩ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প ১২ হাজার কিলোমিটার পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের শিল্যানাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সড়ক, আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) বঞ্চনার বিরুদ্ধে ফের সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, “এই যে গোটা রাজ্যে ১২ হাজার রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ হবে সেখানে ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-মজুরদের ব্যবহার করা হবে।’ মমতার কথায়, “কেন্দ্রীয় সরকারকে বুঝিয়ে দিতে হবে, বাংলার বুদ্ধি আছে, মেধা আছে। আমরা আমাদেরটা নিজেরা করে নিতে পারি।“

 

রাজ্যের ২২হাজার ৩০হাজার গ্রামে রাস্তা তৈরি হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমাদের সরকার আসার পর থেকে মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে চলেছে। ইতিমধ্য দুয়ারে সরকার প্রকল্পের মাধ্যমে ৯০ শতাংশ মানুষের হাতে প্রকল্পের সুবিধা তুলে দিয়েছে, দিদি সুরক্ষা কবচেও আমরা নতুন করে ২ লক্ষ আবেদনপত্র পেয়েছি। রাজ্যবাসী প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে যাবেন। যারা এখনও লক্ষ্মীর ভান্ডারে আবেদন করেননি তাঁরা দরখাস্ত করুন“। একইভাবে স্বাস্থ্যসাথীও সুবিধা পাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন জানান।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে বলেন, “যেভাবে দিনের পর দিন গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করছে কেন্দ্রীয় সরকার, তার জন্য সাধারণ মানুষের পক্ষে জীবনধারন করাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা আমাদের সাধ্যমতো উন্নয়নের কাজ করে চলেছি।“ রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান দিয়ে তিনি জানান, “এই জেলায় আরামবাগে আমরা প্রফুল্লচন্দ্র সেনের নামে মেডিক্যাল কলেজ করছি, শ্রীরামপুরের সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল করেছি ন্যায্য মূল্যের দোকান করেছি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র করেছি ফুরফুরা রাধানগর রাস্তার উপরে মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর সেতু করেছি, বলাগরে ইকো ট্যুরিজম পার্ক করেছি, খুব শীঘ্রই তা চালু হবে । মহেশের জগন্নাথ মন্দিরের সংস্কার করেছি রাধাবল্লব মন্দিরের সংস্কার করেছি চন্দন নগরের নিউ দিঘা পর্যটন কেন্দ্র করেছি, ওখানকার লালদিঘির সংস্কার করেছি অত্যন্ত সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্য দিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে অথচ আমাদের ন্যায্য পাওনা কেন্দ্রীয় সরকার বারবার আবেদন সত্ত্বেও পাওনা টাকা দিচ্ছে না। হুগলির আলু চাষীরা যাতে আলুর ন্যায্য দাম পান তার জন্য আমরা আলু প্রোকিরয়মেন্ট করছি। এর ফলে চাষীরা উৎপন্ন ফসলের দাম বেশি পাবে।“

সিঙ্গুরের (Singur) মাটিতে দাঁড়িয়ে জমি আন্দোলনের কথা স্মরণ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “এই সিঙ্গুরে আমি ১৪ দিন ধরে অনিচ্ছু চাষীদের সমর্থনে জমি আন্দোলনে অনশন করেছি। সেদিন আমাদের উপর নানাধরনের সমস্যা সৃষ্টি করেছিল নানা পক্ষ থেকে কিন্তু শেষমেষ আমরাই জয়ী হয়েছিলাম। সেদিনের সেই সমস্ত ঘটনার সাক্ষী এই জেলার সাংবাদিকরা, সেদিন আমার সঙ্গে তারা দিনরাত ছিল, তারা জানেন সেই সমস্ত দিনের কথা।“ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গুরে চাষযোগ্য জমি ফেরত দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, পাঠ্যবইয়ে স্থান পেয়েছে সিঙ্গুর আন্দোলন।

সিঙ্গুরের মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে ঘিরে গত দুদিন ধরে সাজো সাজো রব পড়েছিল। এদিন, প্রায় ভোর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হন রতনপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ শোনার জন্য। গরমকে উপেক্ষা করে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছিল এদিনে পুরো অনুষ্ঠানটি তদারক করেন সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

Previous articleসিঙ্গুর হবে কর্মসংস্থান: পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের সূচনা করে টুইট মুখ্যমন্ত্রীর
Next articleবাদশাহী বাংলোর ঝলক দেখালেন গৌরী, ‘ডিসকাউন্ট’ দাবি শাহরুখের !