“দেখলে মনে হবে বৈষ্ণব, আসলে ভণ্ড”, দুর্নীতির ঝুলি খুলে সুজনকে খোঁচা শোভনদেবের

সুজন চক্রবর্তীর ও তাঁর পরিবারের লোকেদের চিরকুটে চাকরি কেলেঙ্কারি ক্রমশ ফাঁস হচ্ছে। আর সিপিএম জমানায় নিয়োগ দুর্নীতি, স্বজন পোষণের যে ব্যাপকতা ছিল তার নগ্ন ছবি প্রকাশ পাচ্ছে

নব্বইয়ের দশকে যখন বামেরা বঙ্গ রাজনীতিতে মধ্য গগণের সূর্য, ঠিক সেই সময় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থেকে বিধানসভা ভোটে গোহার হারিয়ে ছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ফলে সুজনকে হাড়ে হাড়ে চেনেন শোভনদেববাবু। শুধু শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় নয়, বারুইপুর, সোনারপুর, যাদবপুরের মানুষ সুজনের নানা ধরণের কীর্তিকলাপের সঙ্গে পরিচিতি।

সম্প্রতি সুজন চক্রবর্তীর ও তাঁর পরিবারের লোকেদের চিরকুটে চাকরি কেলেঙ্কারি ক্রমশ ফাঁস হচ্ছে। আর সিপিএম জমানায় নিয়োগ দুর্নীতি, স্বজন পোষণের যে ব্যাপকতা ছিল তার নগ্ন ছবি প্রকাশ পাচ্ছে। বাম আমলে যোগ্যদের বঞ্চিত করে শুধু সুজনবাবুর পরিবারের প্রায় ১৪জনের চিরকুটে চাকরি হয়েছে বলে অভিযোগ। ঠিক সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে এবার রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নিশানায় সুজন চক্রবর্তী। তাঁকে “ভণ্ড” বলে খোঁচাও দিলেন শোভনদেব। সুজনকে নিশানা করে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নিশানায় বলেন, “এখন দেখলে মনে হয় পাক্কা বৈষ্ণব, কোনওদিন একটা পিঁপড়েও মারেনি। এই ভণ্ডদের থেকে সাবধান থাকবেন।”

পাশাপাশি শোভনদেব বলেন, বাম আমলে একাধিক ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষা দফতরে অবৈধভাবে পলিটেকনিক কলেজে অধ্যাপক নিয়োগ করা হয়েছে। নম্বর কম থাকলেও মিলেছে চাকরি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রজত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়োগ নিয়েও এদিন আরও একবার সরব হন তিনি। তাঁর কথায়, “বেআইনি কাজগুলো বাম আমলে কম হয়নি। নিজেদের লোকেদের চাকরি দিয়েছে। ওদের মুখপত্রে যতজন কাজ করত, প্রত্যেকের স্ত্রী বা ছেলে সরকারি চাকরি, স্কুলে চাকরি পেয়েছে। আমার বিধানসভার সব বক্তব্যগুলো বের করছি আমি। ২০০১ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে ডিপার্টমেন্ট অব টেকনিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিংয়ে অধ্যাপক পদে প্রায় ২০০ লোক নেয়। এ গ্রেড অফিসারের সমতুল এই পদ। অথচ যারা পেল তাদের ৬০ শতাংশ নম্বর নেই। পরে এদের লেকচারার পদে নিয়মিত করা হল। সবটাই পিছন দরজা দিয়ে লোক ঢোকানোর জন্য। পরবর্তীকালে কমিটি তৈরি করে এদের স্থায়ীও করে দেয়। সেই ফাইলের পুরো কপি আছে আমার কাছে।”

কিন্তু এতদিন পর কেন সিপিএম তথা বামেদের বিরুদ্ধে নামানো হচ্ছে অভিযোগের ঝুলি? শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের যুক্তি, “আমরা বদলা নয়, বদল চাই স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলাম। তাই কিছু বলিনি। বললে তো আরও অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে।”

Previous articleবামেরা ছিল ‘লাটসাহেব’, দুয়ারে পরিষেবা দিই আমরা: খেজুরির মঞ্চে মন্তব্য মমতার
Next articleরাজ্যে কলেজে স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু, প্রধান শিক্ষক পদ নিয়েও তৎপরতা