বামেরা ছিল ‘লাটসাহেব’, দুয়ারে পরিষেবা দিই আমরা: খেজুরির মঞ্চে মন্তব্য মমতার

পঞ্চায়েত নির্বাচনের(Panchayeet Election) আগে জেলা সফরে বেরিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সোমবার খেজুরি(Khejuri) সরকারি পরিষেবা প্রদান মঞ্চে উপস্থিত হয়ে ১ দিনে ৩ লক্ষ মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকল রাজ্যবাসীকে আবেদন জানালেন দুয়ারে সরকার(Duare Sarkar) ক্যাম্পে গিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে প্রাপ্য পরিষেবাগুলি যেন গ্রহণ করেন মানুষ। একইসঙ্গে আগের বাম সরকারকে তোপ দেগে এদিন মমতা বলেন, “এবার দুয়ারে সরকার বুথে-বুথে হচ্ছে। আগে লাট সাহেবের মতো কলকাতায় বসে থাকত রাজ্য সরকার। তারা গ্রামে যেত না। আমাদের সরকার আপনার বুথে এসে পরিষেবা দিচ্ছে।”

তৃণমূল সরকারের আমলে মানুষের স্বার্থে যে সমস্ত সরকারি প্রকল্প আনা হয়েছে তার কিছুটা বিবরণ দিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের সেবায় এই সরকার সর্বদা নিয়োজিত জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব কিছুতে এই সরকার মানবিকভাবে মানুষের পাশে। এরপরই স্বাস্থ্যসাথী, সবুজ সাথী, কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো একের পর এক প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে জানান, আগে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলেই লক্ষ্মীর ভান্ডার পাওয়া যেত। তবে এই নিয়মে আমরা বদল করেছি। এখন থেকে সব মহিলারা এই সুবিধা পাবেন। ৬০ বছর বয়স হলে ১ হাজার টাকা করে লক্ষ্মীর ভান্ডার পাবেন, আলাদা করে বার্ধক্য ভাতার আবেদন করতে হবে না। ৩ কোটি ছেলে মেয়েকে স্কলারসিপ দিয়েছি ঐক্যশ্রী প্রকল্পে। এবছর ৪০ লক্ষ পাবে। ওবিসি ছেলে মেয়েদের জন্য কেন্দ্র স্কলারশিপ বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু চিন্তা নেই রাজ্য সরকারের মেধাশ্রী পাবেন আপনারা। ১০ লক্ষ ছেলে মেয়েকে লোন দেব ভবিষ্যৎ প্রকল্পে ৫ লক্ষ টাকা লোন পাবেন। ১০ লক্ষ টাকা করে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড সকলের জন্য, তপশিলী ও আদিবাসীদের জন্য এটার পাশাপাশি আরও একটা লোন রয়েছে বিদেশে পড়তে গেলে। সম্প্রতি চালু হওয়া ‘আপন বাংলা’ অ্যাপের কথাও এদিন বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আপনার সমস্যা জানান এই অ্যাপে আমরা দেখে নেব কীভাবে সাহায্য করা যায়।

এই সব প্রকল্পের পাশাপাশি সোমবার ৩ লক্ষের বেশি মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। যে সব প্রকল্পে যত মানুষকে সরকারি পরিষেবা দেওয়া হল মঞ্চ থেকেই তার তালিকা দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা ঘোষণা করেন, “আজ ৬৫ লক্ষ মা বোনেরা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প পেলেন, ৬৮ হাজার ছাত্র-ছাত্রী সবুজসাথী প্রকল্পে সাইকেল পাবেন, ১৭ হাজার কৃষকবন্দু প্রকল্প পাবেন, ১৮ হাজার মানুষ খাদ্যসাথী প্রকল্প, ২৮ হাজার জনকে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প, ৭ হাজারের বেশি বিনামুল্যে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প, ৮ হাজারের বেশি মানুষ পেলেন কন্যাশ্রী প্রকল্প, ১৭ হাজার মৎস্যজীবী রেজিস্ট্রেশন, ৩৭ হাজার জনকে দেওয়া হল বিধবা ভাতা, ১০ হাজার জনকে মুরগি ছানা বিতরণ, ৩ হাজারের বেশি মানুষকে মানবিক ভাতা দেওয়া হল। এছাড়াও কৃষি সরঞ্জাম, মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড, চোখের আলো চশমা, জমির পাট্টা, সংখ্যালঘু ঋণ, আরটিজেন ক্রেডিট কার্ড, পাওয়ারটিলার, জয় জোহার, তপশিলি বন্ধু মিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া হল।”

Previous articleদু.র্নীতির বিরুদ্ধে সিবিআই-র পাশে কেন্দ্র! মোদির মন্তব্যে তীক্ষ্ণ ‘খোঁচা’ তৃণমূলের
Next article“দেখলে মনে হবে বৈষ্ণব, আসলে ভণ্ড”, দুর্নীতির ঝুলি খুলে সুজনকে খোঁচা শোভনদেবের