বকেয়া কোথায়? সংসদে তৃণমূল সাংসদদের প্রশ্নের মুখে কার্যত মুখ লুকোনোর চেষ্টা গিরিরাজের

মুখ লুকোনোর জায়গা পাচ্ছেন না কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিং (Giriraj Singh)। বুধবার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বে তৃণমূলের (TMC) লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদদের প্রতিনিধি দলকে এড়ালেও, বৃহস্পতিবার সংসদে তৃণমূল সাংসদদের মুখোমুখি পড়ে যান গিরিরাজ। আর সেখানেই ১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে তাঁর কাছে জবাব চান তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee)-সহ অন্যান্য নেতারা।

কেন্দ্রীয় গ্রামন্নোয়ন মন্ত্রকের কাছে ১০০ দিনের কাজের জন্য প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা পাওনা রাজ্যের। দাবি আদায় কলকাতার রেডরোডে টানা দুদিন ধর্নায় বসেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এরপরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের সাংসদরা বুধবার কৃষি ভবন অভিযান করেন। কিন্তু গিরিরাজ সিং তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি। মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, দিল্লিতে (Delhi) নেই মন্ত্রী। ছিলেন না প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনও। সচিবের সঙ্গে দেখা করে দাবি সনদ দিয়ে আসে তৃণমূল। অভিষেক তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, রাজ্যে বকেয়া নিয়ে কোনও জবাব নেই বলেই মুখ লুকিয়েছেন মন্ত্রীরা।

বৃহস্পতিবার সকালে সংসদে পৌঁছন গিরিরাজ। তাঁকে দেখতে পেয়েই প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ট্রেজারি বেঞ্চের দিকে এগিয়ে যান। সঙ্গে যান মহুয়া মৈত্র, প্রতিমা মণ্ডল, অসিত মাল, আবু তাহের-সহ অন্যান্য তৃণমূল সাংসদরাও। গিরিরাজ সিংকে ঘিরে ধরে তাঁরা প্রশ্ন করেন, আগাম সময় নেওয়া থাকলেও কেন তিনি তৃণমূল সংসদের সঙ্গে দেখা করেননি! এমনকী প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতিও সেখানে ছিলেন না। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি জানতে চান, তিনি নাকি বিহারে গিয়েছিলেন! গিরিরাজের কথায়, বিহার থেকে দিল্লি আসতে আর কত সময় লাগে? পাল্টা তৃণমূল সাংসদরা প্রশ্ন করেন, আপনি আমাদের সঙ্গে দেখা করলেন না কেন? এই প্রশ্ন শুনে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান গিরিরাজ। মুখ বাঁচাতে গিরিরাজ বলেন, রাজ্য বকেয়া টাকার যে হিসেব দিয়েছে তাতে অসঙ্গতি রয়েছে। তৃণমূল সাংসদরা পাল্টা বলেন, অসঙ্গতি থাকলে আলোচনা করুন। কিন্তু টাকা আটকে রেখেছেন কেন? এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। কবে, রাজ্যের বকেয়া মেটানো হবে- বারবার জিজ্ঞাসা করেন তৃণমূল সাংসদরা। রীতিমতো বিব্রত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কার্যত পালিয়ে বাঁচেন তিনি।

বুধবারই ১০-১৫ দিনের মধ্যে রাজ্যের বকেয়া মেটানোর বিষয়ে উদ্যোগ না নিলে ১০০দিনের কাজের বঞ্চিতদের দিয়ে দিল্লি ঘেরাও করার হুঙ্কার দেন অভিষেক। তারপরের দিনই গিরিরাজকে সামনে পেয়ে জবাব চাইছেন তৃণমূল সাংসদ। তৃণমূল সংসদের স্পষ্ট উত্তর, “যারা দুর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করুন। কিন্তু সবার টাকা এই ভাবে আটকে রাখা যাবে না।” বিষয়টি ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন গিরিরাজ সিং। যদিও তাঁর আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন সুদীপ-সহ তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূল সাংসদ অসিত মাল বলেন, “গিরিরাজ সিং বুধবারেও সংসদে ছিলেন, বৃহস্পতিবারও সংসদে ছিলেন, তা সত্বেও তিনি তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ এড়িয়ে গেলেন। এর থেকেই বোঝা যায় রাজ্যের বকেয়া পাওনা নিয়ে তার কাছে কোনও সদুত্তর নেই।”

Previous articleWeather Update : সকালে বাইরে নয়, আগামী সপ্তাহ জুড়ে তাপপ্রবাহের সত*র্কতা
Next articleসরকারি স্কুলে ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ বাড়াল পর্ষদ!