Friday, May 9, 2025

জীবন পাল্টে গিয়েছে তারকেশ্বরের মামনির, সৌজন্যে মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড

Date:

Share post:

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড সংসারের হাল ফিরিয়ে দিয়েছে তারকেশ্বরের বাসিন্দা মামনির। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ফেরাতে মায়ের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিল তারকেশ্বর ব্লকের বালিগড়ি ২ এর বাসিন্দা মামনি দাস। সংসার চালাতে মামনিকে দায়িত্ব নিতে হয় বাবার মৎস্য চাষের। কিন্তু এক সময় অর্থের অভাবে মাছ চাষ টিকিয়ে রাখাই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল মামনির কাছে। এরপর দুয়ারে সরকার শিবিরে গিয়ে মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করেন মামনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড পেয়ে তার থেকে ঋণ নিয়ে বর্তমানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মামনি দাস ও তার পরিবার।

বালিঘড়ি ১ এর বাসিন্দা, পাচুগোপাল লোহার। নিজের এবং লিজ নেওয়া এই মোট ২২ বিঘা পুকুরে মাছ চাষ করতেন পাঁচুগোপাল লোহার। ২০১৪ সালে জুলাই মাসে হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় পাচুগোপাল লোহারের। এরপরই অসহায় মায়ের পাশে দাঁড়াতে ছুটে আসেন ছোট মেয়ে বিবাহিত মামনি দাস। যদিও পাঁচুবাবুর মৃত্যুর পর পুকুরের মালিকরা মহিলাদের পুকুর লিজ দিতে সাহস করছিলেন না। এরপর ২০২২ সালে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে মাছ চাষের ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করেন মামনি। তারপর কয়েক মাস পরেই ব্যাংক থেকে যোগাযোগ করা হয় মামনির সঙ্গে। এরপর এই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি হাওড়া থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উদ্বোধনের দিন তারকেশ্বরের মামনির হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্রেডিট কার্ড।

মামনি জানাই ছোট থেকেই বাবার মাছ চাষে ব্যবসা চোখের সামনে দেখে বড় হয়েছে সে। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর কিভাবে ব্যবসা চালানো হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছিল মামনি। মামনি আরো জানান আমাদের নিজস্ব দুটি পুকুর রয়েছে আয়তন ৭ বিঘা। আর লিজ নেওয়া আছে ছটি পুকুর। যার মোট আয়তন ১৫ বিঘা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দেওয়া ক্রেডিট কার্ড থেকে ব্যাংক থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ পাই। সেই ঋণ পাওয়ার পর পুকুরের মালিক ভরসা পায় আমাদের ওপর। বাঁকুড়া থেকে মাছের ডিম এনে পুকুরে চারা মাছ তৈরি করে তা বিক্রি করা হয় বর্ষার মরশুমে। বছর শেষে ফাল্গুন চৈত্র মাস নাগাদ বড় মাছ পুকুর থেকে তোলা হয়। ঋণের টাকা থেকে জাল কেনা হয়েছে হারি মেরামত করা হয়েছে। রুই কাতলা মৃগেল বাটা সিলভার কাপ চাষ হয় আমাদের পুকুরে। বার্ষিক ১ লক্ষ আশি হাজার টাকা নিট মুনাফা।

তারকেশ্বরের মামনি আরও জানান বর্তমানে সরকারি সহযোগিতায় আমরা স্বাবলম্বী হতে পেরেছি। আমাদের মত অসহায় মানুষদের কথা ভেবে এই ধরনের প্রকল্প করার জন্য মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে জানাই ধন্যবাদ। রাজ্য সরকারের মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড সংসারের হাল ফিরিয়ে দিয়েছে আমাদের। এই ক্রেডিট কার্ড না পেলে বাবার মৃত্যুর পর হয়তো সংসার চালানো দায় হয়ে যেত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার ধন্যবাদ জানাচ্ছে মামনি ও তার পরিবার।

আরও পড়ুন- কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে দেড় কোটি পত্রাঘাত, দিল্লিতে ২ লক্ষ মানুষের জমায়েতের টার্গেট: অভিষেক

spot_img

Related articles

নগদ উদ্ধারকাণ্ডে বিচারপতি ভার্মার ইমপিচমেন্ট সুপারিশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির

শীর্ষ আদালতের বিচারপতির বাড়ি থেকে উদ্ধার কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা, গত মার্চ মাসে এই ছবিটা উঠে আসার পরই বিচারপতি...

শুক্রবার ভোরে রামগড় BSF ক্যাম্পে পাক-ড্রোন হামলা ব্যর্থ করল ভারতীয় সেনা

কোনও ছাড় নয়। পাকিস্তানজুড়ে প্রত্যাঘাত ভারতের। এমনকি দেশের মাটিতে পাকিস্তানের আঘাতের হাত থেকে রক্ষা করছে ভারতীয় সেনা (Indian...

বিশ্বকবির জন্মদিনে রবীন্দ্র কবিতায় শ্রদ্ধা মুখ্যমন্ত্রীর, সমাজমাধ্যমে পোস্ট অভিষেকের 

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে (Rabindranath Tagore Birth Anniversary) কবিগুরুর লেখা কবিতা পোস্ট করেই শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী...

পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর ড্রোন হামলা প্রতিহত, প্রেস বিবৃতিতে জানালো ভারতীয় সেনা

সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন (Ceasefire Violation) করে সীমান্তের লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুক্রবার...