Thursday, August 28, 2025

পঞ্চায়েত ভোট ভুলে শাহের নজর লোকসভায়, বাংলার নির্বাচিত সরকারকে ফেলার ‘হু.মকি’!

Date:

বাংলায় পঞ্চায়েত ভোট দুয়ারে কড়া নাড়ছে। যে কোনও দিন ঘোষণা হয়ে যাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে বাংলায় প্রচারে এসে পঞ্চায়েত নিয়ে একটা কথাও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বলতে শোনা গেল না। বরং তিনি পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বাংলায় এসে ২০২৪-এর লোকসভার প্রচার করে গেলেন।

শুক্রবার বীরভূমের সিউড়ির সভা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২০২৪-এর লোকসভায় বাংলা থেকে ৩৫ আসন চাইলেন। লোকসভায় টার্গেট বেধে দিয়ে গেলেন অনুব্রতহীন বীরভূম থেকে। এমনকী তিনি বললেন , ২০২৪-এ ৩৫ আসন দিন, ২০২৫-এ তাহলে তৃণমূল সরকার থাকবে না।বিজেপির হাত ধরেই উৎখাত করা হবে ঘাসফুল শিবিরকে।
একইসঙ্গে তিনি বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন পঞ্চায়েত-টঞ্চায়েত কিছু নয়, তাদের টার্গেট ২০২৪।

নরেন্দ্র মোদিকে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আনতে বাংলার মানুষের কাছে ৩৫টি আসন চাইলেন। তার অর্থ, ২০২৪-এ বিজেপির টার্গেট ৪২-এ ৩৫। আর ২০২১-এ বিজেপি বিধানসভায় খাড়া করেছিল ২০০ আসনের টার্গেট।

‘অব কী বার ২০০ পার’- এই ছিল বিজেপির স্লোগান। কিন্তু সেই স্লোগান ভোটের বাজারে হিট হলেও, ভোটের ফলে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। বিজেপি ২০০-র স্বপ্ন দেখলেও তা থেমে গিয়েছিল ৭৭-এ।

তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, ”৩৫ আসন টার্গেট! একটা আসন পেতে কালঘাম ছুটবে। শূন্য থেকে এক হবে কি না, ভেবে দেখুন।”

শুক্রবার সিউড়ির জনসভায় অমিত শাহ বলে গেলেন, ২০২৫ সালেই তৃণমূলকে উৎখাত করতে হবে অর্থাৎ ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল সরকার ফেলে দেওয়ার কথা শোনা গেল শাহর মুখে। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু তেমনটা হবে না। পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির প্রতিনিধিই হবে।

এ থেকে স্পষ্ট, বিজেপি পঞ্চায়েত ভোটকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। পঞ্চায়েত ভোটে যাই হোক না কেন, তাদের লক্ষ্য ২০২৪। তাদের লক্ষ্য নরেন্দ্র মোদিকে আরও একবার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসানো। আর তা করতেই এক বছর আগে থেকেই সুর বেধে দিয়ে গেলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

অমিত শাহের এই হুঁশিয়ারি নিয়ে পালটা ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব তুলে ধরে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে উনি একটি নির্বাচিত সরকার ফেলার চক্রান্ত করছেন। লোকসভা আর বিধানসভার মধ্যে কীসের মিল? আসলে ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়ছে। কারণ বাংলা বিরোধী যে চক্রান্ত চলছে, তার পিছনে যে ওরাই আছে, তা আবার সামনে চলে এল।”

অমিত শাহর বক্তব্যের পালটা দিতে  তৃণমূলের চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, পার্থ ভৌমিক, সুখেন্দুশেখর রায়রা একযোগে  তাঁর কাছে তৃণমূলের করা পাঁচ প্রশ্নের উত্তর চেয়েছেন।  সকলেরই বক্তব্য, আবাস যোজনার টাকা, ১০০ দিনের কাজের টাকা কবে পাবে রাজ্য? সারদা কাণ্ডে সিবিআইয়ের এফআইআরে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে বিজেপি, এসব প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন তাঁরা। অমিত শাহর বক্তব্যকে ‘অগণতান্ত্রিক’ বলে ব্যাখ্যা করেছে তৃণমূল শিবির।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাংলায় বিজেপির বুথ সশক্তিকরণ কর্মসূচি ধাক্কা খেয়েছে। সার্বিকভাবে ৫০ শতাংশ বুথে তাঁরা কমিটি গঠন করতে পারেনি। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ৫০ শতাংশ বুথ কমিটি থাকলেও দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে কোথাও ৩০-৩৫ শতাংশ বুথ কমিটি রয়েছে, কোথাও রয়েছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ।এখন বুথ কমিটি গড়তে শোচনীয় ব্যর্থ হওয়ার পর পঞ্চায়েত ভোটকে জলাঞ্জলি দিয়ে ২০২৪-কে টার্গেট করে কতটা সফল হবে বিজেপি, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।

 

Related articles

আজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে মেগা সমাবেশ, শহরে ঢল পড়ুয়াদের

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহানগরীর রাস্তায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড়, সকলের গন্তব্য গান্ধী মূর্তির পাদদেশ। আজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) প্রতিষ্ঠা...

সাত লুকের ‘বহুরূপ’ সোহমের, চ্যালেঞ্জ নিয়ে চমকে দিলেন অভিনেতা

যা কখনও হয়নি তা এখন হবে, এবার হবে। সেলিব্রেটিদের রিল - রিয়েলের আলাদা রূপ আর লুক নিয়ে কম...

উন্মুক্ত শৌচমুক্ত ৯৪ পুরসভা, স্বচ্ছতার শংসাপত্র বাংলাকে

শহরাঞ্চলে আর খোলা শৌচের দৃশ্য নেই। পুরসভাগুলির উদ্যোগ এবং পুর দফতরের তদারকিতে উন্মুক্ত শৌচমুক্ত হয়েছে কলকাতা সহ রাজ্যের...

ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে দ্রুত ইআরও–এইআরও নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের 

ফাঁকা পড়ে থাকা একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও) এবং অ্যাসিসটেন্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (এইআরও) নিয়োগের...
Exit mobile version