তৃণমূলে নব জোয়ার, পঞ্চায়েতে প্রার্থী বাছবেন স্থানীয় মানুষ: যুগান্তকারী ঘোষণা অভিষেকের

অভিষেক চাইছেন ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হোক। পরিষেবা যাতে উন্নত থেকে উন্নততর হয় তার চেষ্টা করা হবে। মানুষের কাছে তাঁর আবেদন, এলাকার কথা ভেবে ভোট দিন। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট দেবেন না।

পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রার্থী বাছবেন স্থানীয় মানুষ। যুগান্তকারী ঘোষণা করলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। একেই তিনি বলছেন তৃণমূলে নব জোয়ার। বুধবারই জন সংযোগ যাত্রার কথা ঘোষণা করেন ছিলেন তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই মতো বৃহস্পতিবার, তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে জোড়া কর্মসূচি ঘোষণা করেন অভিষেক। প্রথমেই তিনি বলেন, দুটি কর্মসূচি হবে। গ্রামবাংলার মতামত ও জন সংযোগ যাত্রা। দুমাস ধরে এই কর্মসূচি চলবে। ”নিজেদের পছন্দের প্রার্থী বেছে নেওয়ার সুযোগ এর আগে বাংলা কেন, ভারতে কখনও কোথাও হয়নি। এটা হবে মানুষের পঞ্চায়েত। ৬০ হাজার গ্রামীণ বুথে মানুষের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই হবে। গোপন ব্যালটে আপনারা পছন্দের প্রার্থীকে আমি দু’মাস রাস্তায় থাকব। কলকাতায় ফিরব না।”

অভিষেক বলেন, ২৫ এপ্রিল থেকে জনসংযোগ যাত্রা প্রচারাভিযান শুরু হচ্ছে। তৃণমূলে নব জোয়ার। মূল লক্ষ্য মানুষের পঞ্চায়েত গড়া। তৃণমূলের প্রার্থী কে হবেন- তা বাছবেন স্থানীয় মানুষই। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানান, অবাধ-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাই তাঁদের লক্ষ্য। অভিষেকের মতে, রাজনৈতিক দলের থেকে মানুষের ঠিক করা উচিত, তাঁদের প্রতিনিধিতে হবেন। নিজের স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে যারা কাজ করবে তাঁদেরই প্রার্থী করা হবে বলে জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

২৫ থেকে শুরু হয়ে ২ মাস চলবে কর্মসূচি। ২৪ তারিখ থেকে বেরিয়ে ২ মাস রাস্তায় থাকবেন। অভিষেকের কথায়, খুব গরম। কষ্ট হবে। কিন্তু কোনও কিছু শুরু করতে গেলে কষ্ট করতেই হবে। দিনহাটা থেকে শুরু করে সাগরে শেষ হবে এই জন সংযোগ যাত্রা।

২৪ তারিখ বেরিয়ে বাগডোগরায় পৌঁছবেন। সেখান থেকে কোচবিহারে গিয়ে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেবেন। ২৫ তারিখ থেকেই কর্মসূচি শুরু হবে। প্রতিদিন ৩-৫টা সভা হবে। সন্ধেয় ক্যাম্পে তৃণমূলের অধিবেশন। বুথ সভাপতি থেকে শুরু করে সব জেলা নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন। এরপর সেখানেই গোপন ব্যালটে ভোট হবে। কাকে প্রার্থী চান- জানাতে পারবেন সবাই। ব্যালটে কারও নাম থাকবে না। এটাই গ্রামবাংলার মতামত। এরপরে হবে নৈশভোজ। সংবাদমাধ্যমও সেই অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে পারবে। সরাসরি টিএমজে অফিশিয়ালেও নিজের মতামত জানানো যাবে। রাতে ক্যাম্পেই থাকবেন অভিষেক।

অবাধ ও সুষ্ঠু পঞ্চায়েত ভোটই লক্ষ্য। বারবার বুঝিয়ে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বাম আমলকে তোপ দেগে তিনি বলেন, “সিপিএম আমলে কীভাবে ভোট হত আমরা দেখেছি, রক্তস্নাত ভোট হত”। এদিন ফের অভিষেক বলেন, বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে না পারলে, তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তাঁদের মনোনয়ন জমা দেওয়াবেন।

অভিষেক চাইছেন ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হোক। পরিষেবা যাতে উন্নত থেকে উন্নততর হয় তার চেষ্টা করা হবে। মানুষের কাছে তাঁর আবেদন, এলাকার কথা ভেবে ভোট দিন। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট দেবেন না।

কর্মসূচির মধ্যেই যদি পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা হয়? অভিষেকের কথায়, ”যখনই পঞ্চায়েত ভোট হবে আমরা প্রস্তুত। ভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গেলেও মানুষের মধ্যে যাব।” কোথাও কোনও ভুল-ত্রুটি হলে তা নির্দিষ্ট করে শুধরে দেওয়া হবে বলেও জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

 

Previous articleবিতর্কের মাঝেই পাওয়ারের বাড়িতে আদানি, চলল দীর্ঘ বৈঠক
Next articleশাহকে ফোন মমতার! মামলা হলে শুভেন্দুকে ল্যাজেগোবরে করার হুঁশিয়ারি অভিষেকের