আঙুল ফুলে থাকায় পার্থর আংটি খোলা যায়নি, জেল সুপারের যুক্তিতে অসন্তুষ্ট বিচারক

বেশ কয়েকদিন আগে ভার্চুয়াল শুনানিতে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে আংটি দেখে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারক। এর কারণ দর্শানোর জন্য জেল সুপারকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।বুধবার আদালতে হাজিরা দিয়ে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বললেন,জেলে ঢোকার সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আঙুল ফোলা ছিল। আর সেই কারণেই তাঁর আঙুল থেকে আংটি খোলা সম্ভব হয়নি!

জেল সুপারের যুক্তি শুনে কলকাতা নগর দায়রা আদালতের বিচারকের জানতে চান, ৯ মাসেও কেন সেই আংটি খোলা গেল না।ক্ষুব্ধ বিচারক বললেন, ৯ মাসে আপনি যেটা করতে পারলেন না আদালতের তরফে ৯ মিনিট ৯ সেকেন্ডে তা করে ফেলা সম্ভব হল।

প্রসঙ্গত,নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে পার্থ বিগত ৯ মাস ধরে জেলবন্দি। জেলের মধ্যেও আঙুলে আংটি পরে থাকা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি। নিয়ম না মেনেই দীর্ঘ ৯ মাস ধরে জেলের মধ্যে হাতে আংটি পরেই থাকতেন তিনি।ভার্চুয়াল শুনানির সময়, আদালতে বিষয়টি নিয়ে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন ইডির আইনজীবী। তার বক্তব্য ছিল, ‘জেল কোড’ অনুসারে সংশোধনাগারে কোনও অলঙ্কার পরা যায় না। কিন্তু পার্থ সেই নিয়ম ভেঙেছেন।যদিও আদালতের হস্তক্ষেপের পরই দুদিন আগে ফের আদালতে প্রবেশের সময় দেখা যায় যে পার্থর হাতের আংটি, নানান তাগা উধাও।

পার্থের আঙুল ফুলে থাকার তত্ত্ব খাড়া করে তাঁর আংটি খোলা যায়নি বলে আদালতে যতই সাফাই দিন না কেন প্রেসিডেন্সির জেল সুপার, তা আদৌ আদালত যে মানেনি তা বিচারকের মন্তব্যেই স্পষ্ট।আর স্বয়ং পার্থ যুক্তি দিয়ে আদালতে দাবি করেছিলেন, স্বাস্থ্যের কারণেই ওই আংটি তিনি পরে রয়েছেন। তাঁকে জেলে কেউ আংটি পরতে বারণ করেননি।

আদালতের নির্দেশ মেনে এদিন জেল সুপার পার্থর হাত থেকে আংটি না খোলার কারণ সবিস্তারে লিখিত আকারে জমা দেন।অবশ্য জেল সুপারের দেওয়া জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালতের মধ্যেই তাঁকে দশ মিনিট সময় দিয়ে আর কোনও বক্তব্য থাকলে তা লিখিত আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।জবাব লিখিত আকারে দেওয়ার পরেও জেল সুপারকে বিচারক প্রশ্ন করেন, আপনি কি নিজেই জেলে আইন তৈরি করছেন?

বুধবার আদালতে পার্থের আংটি বিতর্ক নিয়ে জোরালো সওয়াল করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। তার দাবি, কোনও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগ উঠলে রাজ্যের কারা আইন অনুযায়ী, অভিযুক্তকে রাজ্যের মধ্যে বা ভিন্‌রাজ্যের জেলে স্থানান্তরিত করা যায়। কিন্তু পার্থের ক্ষেত্রে সেটাও করা হয়নি।এক্ষেত্রেও প্রভাবশালী তত্ত্ব খাড়া করে আদালতে প্রশ্ন তোলেন ইডির আইনজীবী।

প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের জেল সুপারের যুক্তি প্রসঙ্গে ইডির আইনজীবী  বলেন, উনি এমন একজন জেল সুপার, যাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশও অমান্য করেন তিনি। ২০০০ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। একটা অদৃশ্য হাত কাজ করছে।তাই তাকে অন্যত্র বদলি করা যায় না।

 

 

Previous articleশততম ‘মন কি বাত’: কমিউনিটি রেডিও স্টেশনগুলিকে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের নির্দেশ কেন্দ্রের
Next articleটাকা হাতে থাকলে তবেই প্রতিশ্রুতি: নদী ভাঙন রোধে টাস্ক ফোর্স তৈরির নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর