গঙ্গা ভাঙন রোধে রাজ্যের তরফে প্রতি বছর ৫০ কোটি করে দেওয়ার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

আক্ষেপ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভাঙন রোধে কিছু করলে সেই টাকা জলে চলে যাচ্ছে। ৫ বছরে ১০০০ কোটি টাকা খরচ করেছি, সব টাকা জলে যাচ্ছে।

মালদহ এবং মুর্শিদাবাদের গঙ্গা ভাঙন রুখতে অভিনব উদ্যোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার, মালদহে (Maldah) প্রশাসনিক বৈঠক থেকে গঙ্গা ভাঙন (Erosion of the Ganges) রোধে ১০ বছরের প্রকল্প নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাঙন রুখতে প্রতি বছর রাজ্য সরকারের তরফে ৫০ কোটি করে দেওয়ার ঘোষণা করেন তিনি। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, যারা টেন্ডার পাবে, তাদের ২০ বছরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে হবে।

মালদহ, মুর্শিদাবাদ দুজেলাতেই ভাঙন একটি জ্বলন্ত সমস্যা। এদিনের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী এবিষয়ে নির্দেশ দেবেন বলে আগেই প্রত্যাশা ছিল। বৈঠকের শুরুতেই গঙ্গার ভাঙন নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেন মমতা। অভিযোগ করেন, ভাঙন রোধে কেন্দ্রের তরফে কোনও আর্থিক সহায়তা মেলে না। কপালেশ্বরী-কেলেঘাই নদীর ভাঙন রোধে রাজ্য টাকা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দেয়নি। এরপরেই আক্ষেপ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভাঙন রোধে কিছু করলে সেই টাকা জলে চলে যাচ্ছে। “৫ বছরে ১০০০ কোটি টাকা খরচ করেছি, সব টাকা জলে যাচ্ছে।” ৫০ বছর পড়ে রয়েছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না। কেন্দ্রের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার ১০০০ কোটি টাকা খরচ করে ফেললেও কেন্দ্রের তরফে কোনও সাহায্য পাওয়া যায় না। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, রাজ্যের তরফে গঙ্গার পাড় বাঁধাতে এবং নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করতে ৫০ কোটি টাকা করে বছরে দেওয়া হবে। মমতা সাফ জানিয়ে দেন, “এমন ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করান, যিনি অন্তত ২০ বছরের দায়িত্ব নেবেন। শুধু বোল্ডার ফেলে চলে যাবে, এমনটা করলে হবে না।” এর পাশাপাশি ভূমিক্ষয় রুখতে ভেটিভার ঘাস এবং ম্যানগ্রোভ চারা রোপণের নির্দেশ দেন তিনি। বর্ষা আগেই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

নদীভাঙনে বাড়ি তলিয়ে যাওয়া এড়াতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের নদীর ধারের বাসিন্দাদের সতর্ক করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ”দেখুন, যাতে কেউ নদী থেকে অন্তত ৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাড়ি করতে না পারে।” যাঁরা গঙ্গাভাঙনের ফলে বাড়ি হারিয়েছেন, তাঁদের সরকারের তরফে পাট্টা দিয়ে জমি দেওয়া বা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী।

গঙ্গাভাঙনের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে নীতি আয়োগের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রসংঘ বা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের থেকে মানবিক কারণে সহায়তা চাওয়ার আর্জি জানানোর কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

 

 

Previous articleরেডিওর সব ভাষার ঘোষক-ঘোষিকাকে ‘আকাশবাণী’ বলার নির্দেশ প্রসার ভারতীর
Next articleমহরতেই প্রকাশ্যে দেবের ‘ সত্যবতী’! আঁটঘাট বেঁধেই ফ্লোরে ‘খোকাবাবু’