Sunday, November 9, 2025

মুখ ফিরিয়েছে মানুষ, নেই কর্পোরেট চাঁদাও, কমেছে লেভি! খরচ তুলতে গাড়ি বিক্রি করছে সিপিএম

Date:

Share post:

বাংলার বুকে একটানা ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। প্রায় সাড়ে তিনদশক ক্ষমতায় থাকার সুবাদে কয়েকশো কোটির সম্পত্তি করেছিল সিপিএম। ফুলেফেঁপে উঠেছিল আলিমুদ্দিন থেকে শুরু করে জেলায় জেলায় প্রাসাদপম অট্টালিকার মতো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত পেল্লাই সব পার্টি অফিস। রাজ্য, জেলা থেকে জোনাল, লোকাল কমিটির নেতাদের জন্য নামিদামি চার চাকার গাড়ি। সেইসঙ্গে সর্বহারা পার্টির কোষাগারে কোটি কোটি টাকা। শুধুমাত্র একটি জেলা কমিটির যা সম্পদ ছিল, সেটা অনেক প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের মোট সম্পত্তির থেকেও কয়েকগুণ বেশি।

শাসক দল থাকাকালীন বাংলায় সিপিএমের এই বিপুল সম্পত্তির উৎস ছিল কর্পোরেট জগতের শিল্পপতিরা, মুখপাত্র ও পার্টির কর্মসূচিতে বছরের পর বছর সরকারি বিজ্ঞাপন, পার্টি সদস্যদের থেকে লেভি আদায়, সর্বোপরি রাস্তাঘাটে দাঁড়িয়ে কৌটো নাড়িয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায়। সেইসঙ্গে তোলাবাজি, হুমকি, সিন্ডিকেট তো ছিলই।

কিন্তু এখন সিপিএমের না আছে সেই রাম, না আছে অযোধ্যা। ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বিপুল আয়ের উৎসও ক্রমশ কমতে থাকে। নামে রেজিমেন্টেড পার্টি হলেও দলে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। কেউ দলবদলে শাসকদলে নাম লেখান, কেউ আবার সদস্যপদ নবীকরণ না করে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। ফলে ২০১১ সালের পর থেকেই ভিতরে ভিতরে সিপিএমের রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়।

সদস্য পদ কমায় লেভি সংগ্রহ তলানিতে ঠেকেছে সিপিএমের। মুখ ফিরিয়েছেন কর্পোরেট জগতের মানুষ থেকে শিল্পপতিরা। অন্যদিকে, মানুষের বিশ্বাস-ভরসা হারিয়ে কৌটো নেড়ে উঠছে না চাঁদাও। বন্ধ সরকারি বিজ্ঞাপন থেকে আয়ও। ক্ষমতা হারিয়ে তোলাবাজি, চোখরাঙানিও এখন বন্ধ। সিপিএমের লাগাতার রাজনৈতিক রক্তক্ষরণ অব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পার্টির খরচ জোগাতে এখন বিক্রি করতে হচ্ছে পাপের টাকায় করা একের পর এক গাড়ি।

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে গাড়ি বিক্রি করছে পূর্ব বর্ধমান জেলায় সিপিএম। পার্টির ৬টি গাড়ি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা কমিটি। একটা সময় অবিভক্ত বর্ধমান জেলার সিপিএমের লেভির সিংহভাগই আসত খনি ও শিল্পাঞ্চল থেকে। যার জোগান দিত কয়লা মাফিয়ারা। কোটি কোটি টাকা পার্টি ফান্ডে জমা দিলেই পাওয়া যেত কয়লার চোরাই কারবারের লাইসেন্স।

তবে অনেকেই মনে করছেন গাড়ি বিক্রি করে রাজনৈতিক কর্মসূচি নেওয়ায় সিপিএমের লোক দেখানো। মানুষকে নতুন করে বোকা বানানো ছাড়া আর কিছু নয়। সিপিএমের এখনও যা সম্পদ রয়েছে, তাতে কয়েক পুরুষ চলে যাবে সর্বহারা পার্টির।

spot_img

Related articles

ফর্ম বিলি করতে গিয়ে ব্রেন স্ট্রোক! SIR-আতঙ্কে মৃত্যু এবার BLO-র

কারো নাম নেই ভোটার তালিকায়, কারো পরিচয়ে ভুল। এই সব আতঙ্কে যখন রাজ্যে একের পর এক সহনাগরিকদের মৃত্যু...

সংকটে ভারতীয় ফুটবল, কঠিন সময়ে সরব হলেন ইস্টবেঙ্গলের দুই তারকা

ভারতীয় ফুটবলে বিপণন করার কেউ নেই।দেশের সর্বোচ্চ লিগ না হলে একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে ভারতীয় ফুটবল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।...

কীভাবে দত্তাবাদে খুন স্বর্ণ ব্যবসায়ী: এবার তদন্তে গোয়েন্দা বিভাগ

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের বাসিন্দা। সোনার ব্যবসা করতেন নিউটাউনের দত্তাবাদে। দেহ পাওয়া গেল যাত্রাগাছির কাছে। খুনে নাম জড়ালো জলপাইগুড়ির...

‘ভূত বিড়াল’ কি শুধুই কল্পনার কাহিনী? বাস্তবে কোথায় দেখা গেল চাঁদনি রাতের বিড়াল

কালো নয়। ডোরা কাটাও নয়। বন বিড়াল। তবে সাদা। দেখা যায় শুধুই চাঁদনি রাতে। মানুষের থেকে ভূতের সঙ্গেই...