Friday, November 28, 2025

সমলিঙ্গ বিবাহের বৈধতা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সহমত নয় সুপ্রিম কোর্ট

Date:

Share post:

ভারতে সমলিঙ্গ বিবাহ বৈধ কিনা, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হল মঙ্গলবার। এর আগে শীর্ষ আদালতে একটি হলফনামা দাখিল করে কেন্দ্রের তরফে আগেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই ইস্যুগুলি জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বোধবুদ্ধির উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। তাই সমলিঙ্গ বিবাহের স্বীকৃতি চাওয়া পিটিশনগুলি অবিলম্বে খারিজ করুক সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, বিয়ে শুধুমাত্রই একজন পুরুষ ও নারীর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান।

যদিও মঙ্গলবার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, ভারতের সংবিধানই প্রথা ভেঙেছে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, বর্তমানে অস্পৃশ্যতা, জাতিভেদ প্রথা উঠে গিয়েছে। মেনে নিতে হবে বিয়ের ধারণা আগের থেকে অনেক জটিল হয়েছে।কেন্দ্রের মতে, দেশে বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটির আসল ভিত্তি অনেক গভীরে। হিন্দু ধর্মে তো বটেই, ইসলাম ধর্মেও বিয়ে বলতে দুই বিপরীত লিঙ্গের মানুষের মধ্যে পবিত্র সম্পর্ককেই মান্যতা দেওয়া হয়।
অবশ্য আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, সমলিঙ্গে বিয়ের বিষয়টি সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়াই ভাল। কারণ, পণ প্রথার সংস্কারের ক্ষেত্রে বিষয়টি আইনসভার ওপরেই ছেড়ে দিয়েছে আদালত।
সমকামী যুগলদের বিয়ে করার অধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পার্সোনেল ল অনুযায়ী বিয়ের অধিকার রয়েছে অসমকামীদের।
সমলিঙ্গ বিবাহকে আইনি আইনি বৈধতা দেওয়া হোক, এই মর্মে ইতিমধ্যেই ১৫টি পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে।
শুধুমাত্র একজন পুরুষ এবং একজন মহিলার মধ্যে বিবাহকে স্বীকৃতি দেওয়া আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে বেশ কয়েকটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল।
এদিন বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট মন্তব্য করেন, দুজনের বিয়ে কী? দুই ব্যক্তি ঐচ্ছিকভাবে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেন। সন্তান ধারণ করা হবে কিনা, সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেন দম্পতিরা। এমন বিয়েও হতে পারে, যেখানে দম্পতিরা একসঙ্গে বাস করেন না। বিয়েতে কোনও শারিরীক সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। ফলে বিয়ের মূল ভিত্তি কী, সেটা দম্পতির ওপরেই নির্ভরশীল।
এদিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর্যবেক্ষণ, বিয়ের মূল ভিত্তির উল্লেখ রয়েছে সংবিধানে। প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রথমত, বিয়ে দুই ব্যক্তির সহবাসের মধ্যে হয়। দ্বিতীয়ত, বিয়ের সঙ্গে পরিবারের ধারণা যুক্ত রয়েছে। তৃতীয়ত, বিয়ে সন্তানধারণের অন্যতম উপায়। যদিও আমরা জানি বিয়ের বৈধতা কোনও শর্তাধীন নয়। চতুর্থত, বিয়ে অন্য সব সবকিছু ছাড়াই হয়। পঞ্চমত, বিয়ের অস্তিত্ত্বের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা। সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা সেই ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল নয় বরং সেই প্রতিষ্ঠানকে সমাজ কীভাবে দেখে সেটার ওপর নির্ভর করে।
আবেদনকারীদের যুক্তি, এই বিষয়গুলি এলজিবিটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে। এই আইনগুলি বৈষম্যমূলক এবং তাদের মর্যাদা এবং গোপনীয়তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে৷ আর সেকারণেই তাঁদের দাবিকে গুরুত্বসহকারে মান্যতা দেওয়া হোক।

 

 

 

spot_img

Related articles

সমস্যা মিটিয়ে বিয়ে করবেন স্মৃতি-পলাশ? বড় ঘোষণা সুরকারের মায়ের

বিগত কয়েক দিন ধরেই স্মৃতি মান্ধানা-পলাশ মুচ্ছলের(Palash muchhal-Smriti Mandhana) সম্পর্ক নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। বিয়ের দিনেই ঘটেছে বিপর্যয়। তারপর...

একনজরে আজ পেট্রোল-ডিজেলের দাম 

২৮ নভেম্বর (শুক্রবার), ২০২৫ কলকাতায় লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১০৫.৪১ টাকা, ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৯২.০২ টাকা দিল্লিতে...

ইচ্ছা থাকলেই উচ্চশিক্ষা: স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে পড়ূয়াদের সংখ্যা পেরলো ১ লক্ষ! খুশি মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী

আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের পাশে দাড়িয়েছিল বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(mamata banarjee) সরকার। উচ্চশিক্ষায় সহায়ক হওয়ার লক্ষ্যে তৃতীয়বার ২০২১ সালে...

এসআইআরের চাপে হার্ট অ্যাটাক, কাজ করতে করতে মৃত্যু মুর্শিদাবাদের বিএলও-র 

রাজ্যে এসআইআরের (SIR) বলি আরও এক। স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের কাজের অত্যাধিক চাপ সহ্য করতে না পেরে এবার হার্ট...