কেন্দ্রীয় এজেন্সি মানেই বিজেপির কমফোর্ট জোন, দাঁড়িভিটে NIA নিয়ে শুভেন্দুদের খোঁ.চা কুণালের

খুব স্বাভাবিকভাবেই হাইকোর্টের এমন রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি। রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী এমন রায়ের পর এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন। আবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইট করেছেন।

এবার দাঁড়িভিটকাণ্ডে এনআইএ (NIA) তদন্তের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা (Rajashekhar Mantha)। দাঁড়িভিটে স্কুলে গুলি ও সেই গুলিতে দুই ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরে দাঁড়িভিট হাইস্কুলে গুলিতে মৃত্যু হয় দুই ছাত্রের। অভিযোগ, গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে দুই ছাত্র তাপস বর্মন ও রাজেশ সরকারের। এনআইএ তদন্তের পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে অবিলম্বে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা। পাশাপাশি, দাঁড়িভিট মামলায় ২০২২ সালে CID-র দাখিল করা চার্জশিট এখনই কার্যকর নয়। আর নিহত ও আহত দুই পরিবারকে দু’মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ রাজ্যকে।

খুব স্বাভাবিকভাবেই হাইকোর্টের এমন রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি। রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী এমন রায়ের পর এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন। আবার
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইট করেছেন। তিনি লিখছেন, ”রাষ্ট্রীয় মদতে দাড়িভিটের দুই প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ ও তাপসকে খুনের তদন্ত করবে এনআইএ। কলকাতা হাইকোর্টের এনআইএ তদন্তের নির্দেশকে স্বাগত জানাই। মমতা-সরকার স্কুলে উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করায় দুজনকে খুন করা হয়। ২০১৮-এর ২০ সেপ্টেম্বর স্কুল চত্বরে তাপস-রাজেশকে খুন করে পুলিশ। সত্য প্রকাশ্যে আসবে, বাংলা ভাষার দুই শহিদ রাজেশ-তাপস বিচার পাবে”!

পাল্টা বিজেপি নেতৃত্বকে খোঁচা কুণাল ঘোষের। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র বলেন, ”কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর কোনও মন্তব্য করবো না। যে কোনও মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক। তবে দাঁড়িভিটের ঘটনাটি উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ভাবে বিজেপির প্ররোচনায় ঘটেছিল।”

এরপর বিজেপিকে খোঁচা মেরে কুণাল প্রশ্ন তোলেন, “মনিপুর জ্বলছে, এনআইএ এখন কোথায়? কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তিনি মণিপুরে যাচ্ছেন না কেন? বাংলায় কথায় কথায় সিবিআই, এনআইএ, কেন্দ্রের কমিশন, তারা কেন মণিপুরের ঘটনা দেখতে পাচ্ছে না? হাতরাস, উন্নাও, প্রয়াগরাজ, গুজরাতের বিলিকিস বানোর ধর্ষকরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, তখন কোথায় থাকে এজেন্সি?”

কুণালের আরও দাবি, “নিজেদের সুরক্ষার জন্যই বিজেপি সবসময় কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত দাবি করে। কারণ তারা জানে এজেন্সি তাদের পাপ ঢাকা দেবে। তাই লাফায়, মিষ্টি বিতরণ করে। এই যেমন শুভেন্দু অধিকারীর নারদার তোলাবাজিতে সিবিআইয়ের এফআইআর-এ নাম রয়েছে। তাকে কিছু করে না এজেন্সি। কারণ বিজেপিতে নাম লিখিয়েছে। এজেন্সিগুলি বিজেপির শাখা সংগঠনের কাজ করে। এজেন্সি মানেই বিজেপির কমফোর্ট জোন, প্রোটেকশন, রক্ষাকবচ। এজেন্সি তদের আড়াল করবে বলেই বিজেপি লাফাচ্ছে।” এজেন্সি দিয়ে তদন্তের ফলপ্রসূ কিছু দেখা যাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন কুণাল।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বাংলার শিক্ষকের দাবিতে ইসলামপুরের দাঁড়িভিট হাইস্কুলে বিক্ষোভ চলছিল। সেই বিক্ষোভেই গুলি চলে। গুলিতে মৃত্যু হয় দুই ছাত্রের। স্থানীয়রা অভিযোগ করে পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে দুই ছাত্র তাপস বর্মন ও রাজেশ সরকারের। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল পরিবার। সেই মামলাতেই এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। পাশাপাশি, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকাতেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আদালত। পুলিশের গুলি চালনা-ই শুধু নয়, দাঁড়িভিটে বোমা বিস্ফারণের অভিযোগও ছিল। সেই কারণেই এনআইএ তদন্তের নির্দেশ বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।


 

Previous articleমহারাষ্ট্রে NEET পরীক্ষায় উলটো পোশাক পরার নির্দেশ, অ.স্বস্তিতে ছাত্রীরা!
Next articleসবংয়ে রাম বাম জোটের বৈঠক, কটাক্ষ মানস ভুঁইয়ার