একটা সময় ট্রেন থেকে নামার সময় তাঁর স্যুটকেসও বয়ে নিয়ে যেতেন নরেন্দ্র মোদি, আজ প্রধানমন্ত্রী হয়ে সেই ব্যক্তির আচরণ ফ্যাসিস্টের মতো। দেশে একটি ফ্যাসিবাদী সরকার চালাচ্ছেন মোদি। কলকাতায় বণিকসভার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমনই চাঁচাছোলা ভাষায় প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। যিনি নিজেই বিজেপি নেতা এবং ছ’বারের সাংসদ। একইসঙ্গে তিনি বাংলা তথা দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করলেন। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানালেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সমস্ত যোগ্যতা রয়েছে লড়াকু মমতার।

আরও পড়ুন:কর্নাটকে ক্ষমতায় কি ফের বিজেপি নাকি হাত-বদল?আজ রায় দান ভোটদাতাদের
মঙ্গলবার রবীন্দ্র জয়ন্তীতে কলকাতার সায়েন্স সিটিতে
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন সংস্কৃতি মন্ত্রকের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, ঠিক তখনই ঢিলছোড়া দূরত্বের এক অভিজাত হোটেলে একের পর এক বাক্যবানে মোদি সরকারকে বেআব্রু করলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর কথায়, “এখন আর সংসদে বিতর্ক হয় না। মিডিয়াতেও সরকার বিরোধী খবর হয় না। দিল্লির সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ হয় প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে।” এরপরই প্রধানমন্ত্রীকে তোপ দেগে বিজেপি সাংসদের কটাক্ষ, “মোদি আসলে আমাকে ভয় পান! ‘৭২ সাল থেকে ওর সঙ্গে আমার পরিচয়। এক সময় আমি রেল স্টেশনে নামার পর ও আমার স্যুটকেসও বয়েছিল। সেই ব্যক্তি এখন প্রধানমন্ত্রী। আমাকে কি তাঁর ধারেকাছে রাখবেন? ওই অস্বস্তিকর স্মৃতি তো বারবার মনে পড়বে তাহলে! তাই দলের কোনও কাজে আমাকে রাখা হয় না।”

এখানেই শেষ নয়। মোদির ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ ইমেজকে আরও অস্বস্তির মুখে ফেলে স্বামীর মন্তব্য, “গোধরা কাণ্ডের জন্য আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল মোদির উপর। তখন ও আমাকে বলেছিল, ওবামাকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলার জন্য। কারণ, গুজরাতি সংবাদপত্রে বারাক ওবামার সঙ্গে আমার ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। হার্ভার্ডে ওবামা আমার ছাত্র ছিল!”

চব্বিশের লোকসভার পূর্বাভাসও বিশ্লেষণ করছেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তিনি বলেন, “কর্ণাটকের ফলের দিকে নজর রাখুন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে দক্ষিণ্যের এই রাজ্যের ভোট। বিজেপি যদি কর্ণাটকে হেরে যায়, মোদির জন্য কঠিন সময় আসতে চলেছে।” তাহলে বিকল্প কে? স্বামীর সোজাসাপটা উত্তর, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য যোগ্য প্রার্থী হতেই পারেন। সম্প্রতি ওঁর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যোগ্য বিরোধী মুখ, লড়াকু নেত্রী। কমিউনিস্টদের হটিয়েছে। সিবিআই-ইডির ভয় দেখিয়ে ওঁকে ব্ল্যাকমেল করা যাবে না।” তবে রাহুল গান্ধীর ভারতজোড়ো যাত্রাকে খোঁচা দিয়েছেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর কথায়, “ভারত তো জুড়েই আছে। সংবিধানই জুড়ে রেখেছে। নতুন করে আর কী জুড়বে!”
