কুণালের বিরুদ্ধে নিজে মামলা করলেন না মান্থা, ছাড়লেন সিপিএম কর্মী উকিলের উপর

কালিয়াগঞ্জ নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলায় তদন্তে অবসরপ্রাপ্ত দুই আইপিএসকে রেখে সিট গঠন করায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিবৃতি রাজনৈতিক নেতার। আদালতে বিষয়টি উত্থাপন এক আইনজীবীর। আদালতকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করার আবেদন।

শুক্রবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিবৃতি দেওয়ায় কুণালের বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। আদালতকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করার আবেদন জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা জানিয়েছেন, কেউ নিজেদের সম্মান নষ্ট করলে আদালতের কিছু করার নেই। উল্লেখ্য, কালিয়াগঞ্জ নিয়ে বৃহস্পতিবারই সিট গঠনের নির্দেশ দেয় আদালত। প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস ও রাজ্যের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত ওই আইপিএস অফিসারকে নিয়োগ করা হয়। আদালত জানিয়েছে, এরা প্রয়োজন মতো অফিসারদের সদস্য হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে। আদালতের নজরদারিতে এই গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া চলবে বলেই জানিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সিআরপিসি অনুযায়ী সিটকে সব ধরনের ক্ষমতা দিয়েছে আদালত। তদন্ত চলকালীন সিটের সদস্যরা কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না বলও জানায় আদালত।

আদালতের এই রায় নিয়েই আপত্তি ছিল তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের। আদালত নিযুক্ত সিটের সদস্যদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন না তুলেও নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কুণাল। তিনি বলেন, এঁদের কারও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু এঁদের অনেকেই টেলিভিশন চ্যানেলে বসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারও তৃণমূলের বিরেোধিতা করে। টেলিভিশন শোয়ের প্যানেলে সরকারে বিরোধিতা করার যদি একমাত্র মাপকাঠি হয়, তবে আমি বলব এটা ঠিক নয়। রাজ্যে অনেক অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস রয়েছেন। কোর্ট যাঁকে ইচ্ছা বসিয়ে দেবে, এটা কোনওভাবেই হয় না। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, জাস্টিস মান্থা ও হাই কোর্টের উপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে। তবে সিট আধিকারিকদের নাম নথিভুক্তকরণের ক্ষেত্রে এদিন কুণাল ঘোষ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থাকে মনে করিয়ে দেন, আপনি আপনার সম্মান রাখার চেষ্টা করুন। এদিন কুণাল প্রশ্ন তোলেন, বিচারপতি মান্থা কীভাবে পিক অ্যান্ড চুজ করে পঙ্কজ দত্তকে বসাতে পারেন? সারা বাংলার সবাই জানেন পঙ্কজ দত্ত এমন একজন প্রাক্তন আইপিএস যিনি লাগাতার টিভি শোতে শিক্ষা দফতর থেকে পুলিশ, মুখ্যমন্ত্রী সকলের বিরোধিতা করছেন এবং তারপরও কীভাবে তাঁকে নিয়োগ করা হল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। কুণাল এরপরই অভিযোগ করেন, বিচারপতি মান্থা হাই কোর্টের সম্মান নষ্ট করছেন।

বিচারপতির মন্তব্য, নিজেরা যদি নিজেদের সন্মান নষ্ট করেন কেউ, তাহলে কোর্ট কি করবে।আদালতকে অসন্মান করতে গিয়ে নিজেদের যে অসন্মান করছেন, কেউ কেউ সেটা তারাই বুঝতে পারছেন না, বা বুঝেও সেটাই করে চলেছেন। কোর্ট তো আলাদা আলাদা করে সবাইকে বিধি সেখাবে না। এর পরে আদালত আইনজীবীকে অনুমতি দেন, যদি বিহিত চান, তাহলে আলাদা করে আদালত অবমাননার আবেদন করুন। কোর্ট বিবেচনা করবে।

Previous article‘যশস্বীর দুরন্ত ইনিংসের কাছেই ম‍্যাচ হারলাম’, ম‍্যাচ শেষে বললেন নীতীশ
Next articleকনভয়ে রাজ্য পুলিশের গাড়ি ২ বছর আগেই বাতিল করেন শুভেন্দু! আদালতে দাবি রাজ্যের