চাকরি হারিয়ে কেঁদে ফেললেন ববিতা, গাড়ি কেনার টাকা শোধ করব কী করে?

গোটা বিষয়ে তাঁর ভুল না কমিশনের সেটাও তিনি বুঝতে পারছেন না। যদিও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেছেন, তিনি আরও অনেক কঠোর পদক্ষেপ করতে পারতেন।

টানা চার বছরের অপেক্ষার পর চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি বাতিল হওয়ার পর সেই জায়গায় চাকরি পান তিনি। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী হল না। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এমনটা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই ববিতার চাকরিই চলে গিয়েছে এবং তারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

কারণ কী? স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে যে তথ্য আদালতে জমা দেওয়া হয়েছিল এবং বাকি সব তথ্য খতিয়ে দেখে ববিতা সরকারের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে স্বাভাবিকভাবেই এতে মোটে খুশি নন ববিতা সরকার।আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি বলছেন, এটা কাম্য ছিল না।

ববিতার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তাঁর স্নাতকস্তরের শতকরা নম্বর নির্দিষ্ট নম্বরের চেয়ে বেশি দেখানো হয়েছে। এর ফলে তাঁর ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ও বেড়ে যায়। সব দিক খতিয়ে দেখে তাঁর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। কিন্তু এই নির্দেশ সোনার পরই ভেঙে পড়েছেন ববিতা। তিনি এদিন আদালত চত্বরে কেঁদেও ফেলেন।নিজেই বলতে থাকেন, গাড়ি কিনেছি। সেই টাকা কোথা থেকে দেব! তাঁর বক্তব্য, এক বছর চাকরি করার পর তা কেড়ে নেওয়া মোটেই কাম্য নয়। তিনি এও বলেন, গোটা বিষয়ে তাঁর ভুল না কমিশনের সেটাও তিনি বুঝতে পারছেন না। যদিও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেছেন, তিনি আরও অনেক কঠোর পদক্ষেপ করতে পারতেন।

প্রসঙ্গত, ববিতা মূলত স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছিলেন৷ যার শতকরা হিসাবে দাঁড়ায় ৫৫ শতাংশ। অথচ, তাঁর আবেদনপত্রে স্নাতক স্তরের প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাব ৬০ শতাংশ বা তার বেশি দেখানো হয়। সেখানেই ঘটে হিসেবের গন্ডোগোল এবং ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ গণনাতেও ভুল হয়ে যায়। এদিকে ববিতার জায়গায় চাকরি পাওয়া অনামিকার বক্তব্য ছিল, ববিতার র‍্যাঙ্কিং পিছলে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে ২০ জনের তালিকার ২০ নম্বরে উঠে আসবে তাঁর নাম। সেক্ষেত্রে চাকরির প্রকৃত দাবিদার হবেন তিনিই। অবশেষে তাই হয়েছে।

কলকাতা হাইকোর্টের তরফে বলা হয়েছে, ববিতার কাছে জমা থাকা ১৫ লাখ টাকা রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ১৯ মে জমা দিতে হবে। তবে ববিতার আর্জি ছিল, এসএসসি একবারও তাঁকে জানায়নি এটি ভুল ছিল। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাঁর কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান ববিতা। আদালতে ববিতা জানান, ১১ লাখ টাকা তিনি আজই জমা দিতে পারবেন। কিন্তু বাকি টাকার জন্য আদালতের কাছে তিন মাস সময় চান তিনি। সেক্ষেত্রে আদালত বাকি টাকা ৫ জুনের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত আরও জানিয়েছে ববিতা চাকরি পাওয়ার যে অর্জিত কয়েক মাসের বেতন ফেরত দিতে হবে না অনামিকাকে।

 

Previous articleGold Silver Rate: আজ সোনা রুপোর দাম কত? জেনে নিন এক ঝলকে
Next articleমোদির আগেই বাইডেনের দেশে যাচ্ছেন রাহুল, নিউইয়র্কে রয়েছে ভারতীয়দের সমাবেশ