বজবজের বেআইনি বাজি কারখানায় বি.স্ফোরণ! তদন্ত শুরু CID-র, নমুনা সংগ্রহ ফরেনসিক দলের

ডিএসপি নিরুপম ঘোষের নেতৃত্বে রবিবার রাত থেকে মহেশতলা ও বজবজ থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। এলাকা জুড়ে চলে তল্লাশি অভিযান। এরপরই বেশ কয়েকটি দোকানের দরজা ভেঙে পুলিশ একাধিক নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করে বলে খবর। সব মিলিয়ে ২০ হাজার কেজির বেশি বাজি উদ্ধার হয় এদিন।

বজবজের (Budge Budge) বেআইনি বাজি কারখানায় (Illegal Crackers Factory) ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তভার নিল সিআইডি (CID)। গত সপ্তাহে মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় যে বিস্ফোরণ হয়েছিল, তার তদন্ত আগে থেকেই শুরু করছে রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার (Egra) পর এবার রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। সেই ঘটনারও তদন্ত শুরু করল সিআইডি। এদিন বজবজের ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সিআইডির একটি দল। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এছাড়া, ফরেন্সিকের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করে। এদিন ঘটনাস্থল সরজমিনে খতিয়ে দেখে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদের (Interrogation) কাজ শুরু করেছে সিআইডি। পাশাপাশি এদিন মহেশতলা থানার পুলিশের সঙ্গেও কথা বলছেন তাঁরা। তবে এদিন সিআইডি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।

এদিকে, ডিএসপি নিরুপম ঘোষের নেতৃত্বে রবিবার রাত থেকে মহেশতলা ও বজবজ থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। এলাকা জুড়ে চলে তল্লাশি অভিযান। এরপরই বেশ কয়েকটি দোকানের দরজা ভেঙে পুলিশ একাধিক নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করে বলে খবর। সব মিলিয়ে ২০ হাজার কেজির বেশি বাজি উদ্ধার হয় এদিন। এদিকে, ঘটনায় ৫টি আলাদা আলাদা মামলা রুজু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বজবজের চিংড়িপোতা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনাতেও দুজনকে গ্রেফতার (Arrest) করা হয়েছে বলে খবর। তবে বাজি ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, অসাবধানতার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। ছাদের মধ্যে রাখা হয়েছিল বাজি। আর তাতেই কোনওভাবে আগুন লেগে যায়।

উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যায় বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয় একই পরিবারের তিনজনের। এছাড়া দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন একজন। তবে এদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এরপরেই বেআইনি বাজি উদ্ধারে তৎপর হয়েছে পুলিশ। আর এদিন এই ঘটনার তদন্ত শুরু করল সিআইডি। রবিবার রাত আটটা নাগাদ বজবজের চিংড়িপোতা এলাকায় বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এরপরই রাতভর ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়ে বেআইনি বাজি বিক্রির অভিযোগে বজবজের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে ২০ হাজার কেজিরও বেশি বাজি। গত সপ্তাহেই এগরার ঘটনার পরে সেই জেলার বেআইনি বাজি কারখানাগুলিতে অভিযান চালাতে এসপি ও কমিশনার এলাকায় সিপিদের নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। বেআইনি বাজি ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আর বজবজের ঘটনায় ফের একবার এসপি-সিপিদের একই নির্দেশ দেওয়া হল। বেআইনি বাজি কারখানায় অভিযানের পাশাপাশি, লাইসেন্স প্রাপ্ত বাজি কারখানাগুলিতেও সারপ্রাইজ ভিজিট করার কথা বলা হয়েছে তাঁদের, যাতে কেউ বেআইনি বাজি কোনও ভাবে মজুত করতে এবং তৈরি করতে না পারে।

পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া বাজি ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বেআইনি বাজি উদ্ধারের ঘটনায় এলাকা থেকে মোট ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তাদের আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে। যে কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছে সেখানে ছাদের ঘরে মজুত করা ছিল বাজি এবং বাজির মশলা। তবে সবই নিষিদ্ধ শব্দবাজি। রবিবার সন্ধ্যায় সেখানে চলছিল পুজোপাঠ। তাই জ্বালানো হয় মোমবাতি–ধূপ। তখনই আচমকা ধূপের আগুনের ফুলকি লেগে যায় বাজির মশলায়। আর তাতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাতে তিনজন মারা যান।

 

 

Previous articleবাগানের চিঠির পাল্টা কেকেআরের, বিবৃতিতে জানান হল, আইপিএলের নীতিবিরুদ্ধে কোন কাজ নয়
Next articleমঙ্গলে আদালতে হাজিরা: ফের গ্রেফতারির আশঙ্কা ইমরানের