পাঁচতারা হোটেলে কী শর্তে শাহ-শুভেন্দু চুক্তি? ফাঁস করলেন সাক্ষী থাকা প্রাক্তন বিজেপি নেতা!

জয়প্রকাশ মজুমদার তারিখ ধরে ধরে শুভেন্দুর বিজেপির যোগদান রহস্য ব্যাখ্যা করেন। শুভেন্দু অধিকারী ও অমিত শাহের মধ্যে কী কথা হয়েছিল, কোন শর্তে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বা বিজেপি কেন তাঁকে দলে নিয়েছিল তা নিয়ে কার্যত বোমা ফাটান।

কলকাতার (Kolkata) এক পাঁচতারা হোটেল (Five Star Hotel) ঠিক কী শর্তে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন গদ্দার-বেইমান-মীরজাফর শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)? এবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে প্রকাশ্যে তা তুলে ধরলেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা তৃণমূলের বর্তমান রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার (Jayprakash Majumder)। এদিন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও অমিত শাহের (Amit Shah) মধ্যে কী কথা হয়েছিল, কোন শর্তে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বা বিজেপি কেন তাঁকে দলে নিয়েছিল তা নিয়ে কার্যত বোমা ফাটান জয়প্রকাশবাবু। এবং সেই সময় তাঁর সামনেই এমনটি ঘটেছিল বলে দাবিও করেন। তিনি ওই ঘটনার সাক্ষী। জয়প্রকাশ মজুমদার জোর গলায় বলেন, “যদি মিথ্যা বলে থাকি, ক্ষমতা থাকলে মামলা করুক শুভেন্দু বা অমিত শাহ। তখন আদালতেই বুঝিয়ে দেবো কত ধানে কত চাল!”

এদিন জয়প্রকাশ মজুমদার তারিখ ধরে ধরে শুভেন্দুর বিজেপির যোগদান রহস্য ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “২০২০ সালের ৫ নভেম্বর অমিত শাহের সঙ্গে পাঁচতারা হোটেল ডিল করে শুভেন্দু। তখন আমি বিজেপির নেতা হিসেবে আরও অনেকের মতো সেখানে হাজির ছিলাম। তৎকালীন রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন, তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায় সহ আরও অনেকে ছিলেন। সকলের সামনেই শুভেন্দুর তরফে অমিত শাহকে শর্ত ছিল, নারদা ও সারদা মামলায় যেন তাঁকে একদিনের জন্য জেলে যেতে না হয়। সিবিআই-ইডি যেন না ডাকে। অমিত শাহ কথা দিয়েছিলেন শুভেন্দু যেমনটা চাইছে, তেমনটাই হবে। তবে পাল্টা তৃণমূল ভাঙানোর শর্ত দেন অমিত শাহ। শুভেন্দু বুক ঠুকে বলেছিল, দশদিনের মধ্যে ৭০ জন বিধায়ককে ভাঙিয়ে আনবেন। যদিও শুভেন্দু সেটা পারেনি। তবে অমিত শাহ তাঁর কথা রেখেছেন।”

এরপরই ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর মন্ত্রিত্ব থেকে থেকে ইস্তফা দেন শুভেন্দু। ১৬ ডিসেম্বর বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। আর ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে বিজেপির সভায় অমিত শাহের পা ধরে দলবদল করেন। পাশাপাশি জয়প্রকাশ মজুমদারের আরও দাবি, এই তারিখের অনেক আগেই বিজেপিতে যোগদান করার জন্য কথা চালাচ্ছিল শুভেন্দু। কিন্তু অমিত শাহের সঙ্গে জেল না খাটার ডিল পাকা না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকে।

জয়প্রকাশ মজুমদার এদিন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরে বলেন, “২০১৯-এ দু’বার RSS মুখপত্রে মুকুল রায় সহ তৎকালীন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে দলে নেওয়ার বিষয়ে প্রবল আপত্তির কথা লেখা হয়েছিল। পাশাপাশি এ রাজ্যে RSS-এত শীর্ষনেতা দাবি করেছিলেন, দক্ষতা, গ্রহণযোগ্যতা, বিশ্বাসযোগ্যতা কোনওটাই নেই শুভেন্দুর। সেইমতো বঙ্গ বিজেপিতে তৎকালীন জুটি সুব্রত চট্টোপাধ্যায় ও দিলীপ ঘোষও তাঁদের আপত্তির কথা জানান। পরে সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়। এবং শুভেন্দুকে যোগদান করানো হয়।”

সবশেষে জয়প্রকাশ মজুমদারের সংযোজন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একদিন না একদিন বিজেপি কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে চলে যাবে। সেদিন এই CBI, এই ED এই শুভেন্দু বিরুদ্ধে ফাইল বের করে ব্যবস্থা নেবে। নিরপেক্ষ তদন্ত করবে।” বাম-কংগ্রেসকে তোপ দেগে বলেন, “বিকাশ ভট্টাচার্য ও আব্দুল মান্নানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, এরা শুভেন্দুকে নিয়ে কথা বলছে না। তার দুর্নীতি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।কারণ, এ রাজ্যে দুটি পার্টি চলছে বিজেপির টাকায়।”

 

 

 

Previous articleমালদার পর হুগলির জিভে জল আনা আমও পাড়ি দিল বিদেশে
Next articleজাল ভোট ঠেকাতে নয়া কৌশল! আঙুলে কালির বদলে এআই প্রযুক্তিতে ছাপ, ইভিএমে ক্যামেরাও