Friday, December 19, 2025

ভূগোল পরীক্ষা দেওয়া হতো না, পৌঁছে দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ, সেই মেয়ে মাধ্যমিকে স্কুল টপার

Date:

Share post:

ঘটনা গত ২৫ ফেব্রুয়ারির। মাধ্যমিকে ভূগোল পরীক্ষা। এক ছাত্রীর পথে হল দেরি। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার আসরে দিশাহারা। ঠিক তখনই সেই ছাত্রীর পাশে কলকাতা পুলিশ।

মুশকিল আসান। গাড়িতে চাপিয়ে রীতিমতো গ্রিন করিডর করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছিলেন হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের ওসি ইনস্পেক্টর সৌভিক চক্রবর্তী। তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়েছে জল। সেই ছাত্রী-ই মাধ্যমিকে নজরকাড়া ফলাফল করেছে। কিন্তু সময় মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছেতে না পারলে, হয়তো বছরটাই নষ্ট হতো। প্রশ্নের মুখে পড়তো একাডেমিক কেরিয়ার!

আজ, মঙ্গলবার ফেসবুক পোস্টে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেদিন সময়মতো না পৌঁছলে ভূগোলের পরীক্ষায় বসা হত না তার। ঘটনাচক্রে সেদিনের সেই পরীক্ষায় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সে। শুধু তাই নয় মাধ্যমিকে তার স্কুলে সে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এমন খুশির খবর দিতে হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের অফিসে পরিবারের কয়েকজন সদস্য সমেত উপস্থিত হয়েছিল সেই ছাত্রী। তাঁকে সংবর্ধনা জানান সৌভিকবাবু। ভবিষ্যতে অঙ্ক নিয়ে পড়তে চায় সে। আর সমাজের স্বার্থে কলকাতা পুলিশে যোগদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে সে। তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছিল, শ্যামবাজারে আদর্শ শিক্ষা নিকেতন ছিল ওই ছাত্রীর মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র। নেতাজি সুভাষ রোডের বাসিন্দা সে। পরিবারের সকলে সেদিন দাদুর শেষকৃত্য করতে গিয়েছিলেন। সেকারণে একাই পরীক্ষা দিতে বেরিয়েছিল ছাত্রীটি। কিন্তু সব কিছু করতে গিয়ে দেরি হয়ে যায়। সে পুলিশের কাছে সহায়তা চেয়েছিল। আর দেরি করেননি ইনস্পেক্টর সৌভিক চক্রবর্তী। একেবারে গ্রিন করিডর করে সেদিন তিনি ছাত্রীকে পৌঁছে দিয়েছিলেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে এগারোটায় পুলিশের গাড়ি গিয়ে পৌঁছয় পরীক্ষাকেন্দ্রে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। চোখের জল মুছে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেছিল ছাত্রী। “বেস্ট অফ লাক” বলে বেরিয়ে এসেছিলেন ইনস্পেক্টর সৌভিক।

আরও পড়ুন- নিওমোনিয়া নিয়ে কাঠমাণ্ডু হাসপাতালে ভর্তি পিয়ালী বসাক, জানাল পরিবার

সেই ঘটনা এদিন কলকাতা পুলিশ তুলে ধরে। নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পোস্টে তারা জানায়, “আপনাদের অনেকের হয়তো মনে থাকবে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক কিশোরীকে তার পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছিলেন হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের ওসি ইনস্পেকটর শৌভিক চক্রবর্তী। সেদিন সময়মত না পৌঁছলে ভূগোলের পরীক্ষায় বসা হত না তার। ঘটনাচক্রে সেদিনের সেই পরীক্ষায় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সে। শুধু তাই নয়, মাধ্যমিকে তার স্কুলে সে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। গতকাল এই আনন্দ সংবাদ দিতে হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের অফিসে পরিবারের কয়েকজন সদস্য সমেত উপস্থিত হয় সেই ছাত্রী, এবং তাকে যথাসাধ্য সংবর্ধনা জানান শৌভিক। বিদায় নেওয়ার আগে সে জানায়, ভবিষ্যতে অঙ্ক নিয়ে পড়তে চায় সে, এবং সমাজের স্বার্থে পুলিশে যোগদান করার ইচ্ছেও প্রকাশ করে। আমাদের অফুরন্ত শুভেচ্ছা রইল।”

 

spot_img

Related articles

বাংলাদেশে ভারতীয় উপদূতাবাসে হামলা! চিন্তা বাড়ছে নয়াদিল্লির 

ফের উত্তপ্ত প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশের দুই সংবাদপত্রের দফতরে ভাঙচুর আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনার পর হামলা চট্টগ্রামের ভারতীয় উপদূতাবাসে...

হিজাব বিতর্কে নয়া মোড় ,সরকারি চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন না মহিলা চিকিৎসক!

বিহারের সরকারি অনুষ্ঠানে মহিলা চিকিত্‍সকের মুখ থেকে হিজাব টেনে নামিয়ে দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ...

কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো-র সংবাদপত্রের দফতরে হামলা! 

বাংলা দৈনিক প্রথম আলো-র দফতরে হামলা! বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে একদল অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি সংবাদপত্রটির দফতরে ঢুকে একাধিক তলায় ব্যাপক...

জলপাইগুড়ির আকাশে ভিনগ্রহীদের যান! রহস্যময় আলো ঘিরে বাড়ছে জল্পনা

বৃহস্পতিবার রাতের আকাশে হঠাৎ রহস্যময় আলো ঘিরে চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ি জেলায় (Jalpaiguri District)। কেউ বলছেন উল্কা কেউ বলছেন ইউএফও...