ভূগোল পরীক্ষা দেওয়া হতো না, পৌঁছে দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ, সেই মেয়ে মাধ্যমিকে স্কুল টপার

সময় মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছেতে না পারলে, হয়তো বছরটাই নষ্ট হতো। প্রশ্নের মুখে পড়তো একাডেমিক কেরিয়ার!

ঘটনা গত ২৫ ফেব্রুয়ারির। মাধ্যমিকে ভূগোল পরীক্ষা। এক ছাত্রীর পথে হল দেরি। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার আসরে দিশাহারা। ঠিক তখনই সেই ছাত্রীর পাশে কলকাতা পুলিশ।

মুশকিল আসান। গাড়িতে চাপিয়ে রীতিমতো গ্রিন করিডর করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছিলেন হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের ওসি ইনস্পেক্টর সৌভিক চক্রবর্তী। তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়েছে জল। সেই ছাত্রী-ই মাধ্যমিকে নজরকাড়া ফলাফল করেছে। কিন্তু সময় মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছেতে না পারলে, হয়তো বছরটাই নষ্ট হতো। প্রশ্নের মুখে পড়তো একাডেমিক কেরিয়ার!

আজ, মঙ্গলবার ফেসবুক পোস্টে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেদিন সময়মতো না পৌঁছলে ভূগোলের পরীক্ষায় বসা হত না তার। ঘটনাচক্রে সেদিনের সেই পরীক্ষায় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সে। শুধু তাই নয় মাধ্যমিকে তার স্কুলে সে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এমন খুশির খবর দিতে হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের অফিসে পরিবারের কয়েকজন সদস্য সমেত উপস্থিত হয়েছিল সেই ছাত্রী। তাঁকে সংবর্ধনা জানান সৌভিকবাবু। ভবিষ্যতে অঙ্ক নিয়ে পড়তে চায় সে। আর সমাজের স্বার্থে কলকাতা পুলিশে যোগদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে সে। তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছিল, শ্যামবাজারে আদর্শ শিক্ষা নিকেতন ছিল ওই ছাত্রীর মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র। নেতাজি সুভাষ রোডের বাসিন্দা সে। পরিবারের সকলে সেদিন দাদুর শেষকৃত্য করতে গিয়েছিলেন। সেকারণে একাই পরীক্ষা দিতে বেরিয়েছিল ছাত্রীটি। কিন্তু সব কিছু করতে গিয়ে দেরি হয়ে যায়। সে পুলিশের কাছে সহায়তা চেয়েছিল। আর দেরি করেননি ইনস্পেক্টর সৌভিক চক্রবর্তী। একেবারে গ্রিন করিডর করে সেদিন তিনি ছাত্রীকে পৌঁছে দিয়েছিলেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে এগারোটায় পুলিশের গাড়ি গিয়ে পৌঁছয় পরীক্ষাকেন্দ্রে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। চোখের জল মুছে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেছিল ছাত্রী। “বেস্ট অফ লাক” বলে বেরিয়ে এসেছিলেন ইনস্পেক্টর সৌভিক।

আরও পড়ুন- নিওমোনিয়া নিয়ে কাঠমাণ্ডু হাসপাতালে ভর্তি পিয়ালী বসাক, জানাল পরিবার

সেই ঘটনা এদিন কলকাতা পুলিশ তুলে ধরে। নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পোস্টে তারা জানায়, “আপনাদের অনেকের হয়তো মনে থাকবে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক কিশোরীকে তার পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছিলেন হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের ওসি ইনস্পেকটর শৌভিক চক্রবর্তী। সেদিন সময়মত না পৌঁছলে ভূগোলের পরীক্ষায় বসা হত না তার। ঘটনাচক্রে সেদিনের সেই পরীক্ষায় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সে। শুধু তাই নয়, মাধ্যমিকে তার স্কুলে সে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। গতকাল এই আনন্দ সংবাদ দিতে হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের অফিসে পরিবারের কয়েকজন সদস্য সমেত উপস্থিত হয় সেই ছাত্রী, এবং তাকে যথাসাধ্য সংবর্ধনা জানান শৌভিক। বিদায় নেওয়ার আগে সে জানায়, ভবিষ্যতে অঙ্ক নিয়ে পড়তে চায় সে, এবং সমাজের স্বার্থে পুলিশে যোগদান করার ইচ্ছেও প্রকাশ করে। আমাদের অফুরন্ত শুভেচ্ছা রইল।”

 

Previous articleনিওমোনিয়া নিয়ে কাঠমাণ্ডু হাসপাতালে ভর্তি পিয়ালী বসাক, জানাল পরিবার
Next articleমোহনবাগানে পেলে-মারাদোনা-সোবার্সের নামে গেট উদ্বোধন করবেন মার্টিনেজ