অঙ্গদানের নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত! মৃ.ত যুবকের অঙ্গ প্রতিস্থাপনে বেঁচে থাকুক স্মৃতি

আজ শনিবার সকাল থেকে সৌমেনের শরীর থেকে হার্ট, দু’টি কিডনি ও লিভার বের করে অন্য রোগীর দেহে প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হয়ে যায়।

২৭ বছরের তরতাজা যুবক দেড় বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে সকালেও খেলা করেছেন, সন্তানকে তারার দেশের গল্প শুনিয়ে রাতে নিজেই চলে গেলেন আকাশের তারা হতে। সেরিব্রাল স্ট্রোক (Cerebral Stroke) মস্তিষ্কে এমন ছোবল দিল যে আর জ্ঞান ফেরার কোনও লক্ষণই দেখলেন না চিকিৎসকেরা। তবে এর পরের কাহিনীটা অনেক বেশি অনুপ্রেরণামূলক। ব্রেন ডেথ (Brain Death) ঘোষণা হওয়ার পরেই তড়িঘড়ি অঙ্গদানের (Organ Donation)সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে মৃত যুবকের পরিবার। এক বাড়ির সন্তান চলে গেছেন কিন্তু বাকি অনেক মায়ের কোল আলো করে যে সন্তানরা আছেন তাঁদের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন এই যুবক।

মৃত যুবকের নাম সৌমেন ভদ্র (Soumen Bhadra), তিনি একটি বেসরকারি ব‌্যাংকের পদস্থ আধিকারিক ছিলেন। বাড়ি বর্ধমানের (Bardwan) পূর্বস্থলী এলাকায়। গত ১৯ তারিখ রাতে অসম্ভব মাথার যন্ত্রনা শুরু হয়। সৌমেনের শ‌্যালক টুপাই দাস জানিয়েছেন রাত এগারোটা নাগাদ জামাইবাবুকে অ‌্যাম্বুল‌্যান্সে করে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরের কালনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তখনই দেখে জানিয়ে দেন ম‌্যাসিভ সেরিব্রাল স্ট্রোক হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কলকাতা স্থানান্তরিত করা ছাড়া আর অন্য কোনও উপায় ছিল না। অ‌্যাপোলো হাসপাতালে (Apollo hospital) পরের দিনই ভর্তি করা হয়। যদিও চিকিৎসকেরা কোনও ভাল খবর শোনাতে পারেননি। অবস্থার অবনতি হচ্ছিল প্রতিমুহূর্তে। বৃহস্পতিবার সেই চরম খবরটি জানিয়ে দিলেন ডাক্তাররা। এরপর নিজেদের সব থেকে কাছের মানুষকে হারিয়েও সৌমেনের মা আর স্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন, সৌমেন নেই কিন্তু ওঁর শরীরের অঙ্গ থেকে যেন আর পাঁচজন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারেন।

আজ শনিবার সকাল থেকে সৌমেনের শরীর থেকে হার্ট, দু’টি কিডনি ও লিভার বের করে অন্য রোগীর দেহে প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হয়ে যায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দু’টি কিডনির মধ্যে একটি এসএসকেএম হাসপাতালের (SSKM) ২৭ বছরের এক যুবক এবং অ‌্যাপোলো হাসপাতালের ২৮ বছরের এক যুবকের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। অ‌্যাপোলো হাসপাতালের এক রোগীর দেহে লিভারও প্রতিস্থাপিত হয়েছে । যুবক সৌমেনের হৃদয় পেয়ে নতুন জীবন শুরু করার ভাবনায় আরএনটেগোর হাসপাতালের (RN Tagore Hospital) এক যুবক। বিনা মেঘে বজ্রপাত হয়ে আসা একটা খবর যে পরিবারকে চিরতরে তছনছ করে দিতে পারে, সেই পরিবার অন্য চারটি পরিবারকে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়ে দিল।

 

 

Previous articleরবিবার মাহি বনাম হার্দিকের ম‍্যাচ ঘিরে টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে
Next articleবাড়িতে বাইবেল রাখার ভ.য়ানক শা.স্তি! কিমের রো.ষানল থেকে বাদ গেল না একরত্তিও