“কী করে তোকে ভুলবে এই মন, তুই যে আমার জীবন…’’, কবিতার তাল কাটল করমণ্ডলের ধা.ক্কা!

পাতায় পাতায় প্রেমের কাহিনী। কিন্তু কে সেই প্রেমিক, কেই বা প্রেমিকা? প্রশ্নগুলো কবিতার খাতার মতো এ হাত ও হাত হল কিন্তু উত্তর খুঁজে পেল না।

প্রেমের গল্পটা হয়তো এখনও শেষ হয়নি, কিংবা হয়তো সবেমাত্র বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়তে চেয়েছিল। কিন্তু আজ সব ভিজে গেছে রক্তে। অল্প অল্প মেঘ থেকে বৃষ্টি আর ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালবাসার সৃষ্টি হওয়ার আগেই একটা বড় ধাক্কা, ২৩ সেকেন্ডের মধ্যে জীবনে নেমে এল অন্ধকার। বালেশ্বরের কাছে তখন কষ্ট করে বাঁচতে চাওয়া জীবন ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। ছেঁড়া জুতো, মানিব্যাগ , জলের বোতল, বাচ্চার খেলনা, মোবাইলের ইয়ারফোনের পাশে অবিন্যস্ত এক কবিতার খাতা। পাতায় পাতায় প্রেমের কাহিনী। কিন্তু কে সেই প্রেমিক, কেই বা প্রেমিকা? প্রশ্নগুলো কবিতার খাতার মতো এ হাত ও হাত হল কিন্তু উত্তর খুঁজে পেল না। এ দৃশ্যেরও সাক্ষী হল করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express) আর মৃত্যুপুরী বালেশ্বর (Balasore)।

চারিদিকে চাপ চাপ রক্ত, সাদা কাপড়ে ঢাকা দেওয়া সারিবদ্ধ লাশ আর একটা ভালোবাসার গল্প। হতেই পারতো কোনও সিনেমার পটভূমি, কিন্তু বর্তমানে এটাই বাস্তবের কঠিন ক্লাইম্যাক্স। স্বজন হারানোর আর্তনাদ আর হাহাকারে শুকিয়ে গেল চোখের জল। ওড়িশার বালেশ্বরে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। আর পাশাপাশি প্রকাশ্যে আসছে নানা মুহূর্তের ঝলক। ২৪ ঘণ্টা আগেও হয়তো সবটাই জীবন্ত ছিল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেন থেকে জীবন উদ্ধারের মাঝেই খুঁজে পাওয়া গেল এক কবিতার খাতা। কৌতুহলবশত সেখানে চোখ বোলাতেই উঠে এল প্রেমের উপাখ্যান। কিন্তু কে লেখক বা লেখিকা, কার উদ্দেশ্যেই বা এই লেখা কিছুই জানা হল না। তবে অপটু হাতে, সুন্দর করে নকশার কারসাজিতে দক্ষ কলম ব্যক্ত করেছে মনের কথা,

‘‘ভালবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,

আছিস তুই মনের মাঝে

পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।

কী করে তোকে ভুলবে এই মন,

তুই যে আমার জীবন…’’

পাতা ওল্টাতেই ভাঙা রেললাইনে অসমাপ্ত স্বপ্ন, ‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালবাসা সৃষ্টি হয়….’’ কিন্তু তারপর?

 

 

Previous articleনিজের টেস্ট ক্রিকেটে অবসর নিয়ে বড় ঘোষণা ওয়ার্নারের
Next articleভয়া.বহ রেল দুর্ঘ.টনা নিয়ে মোদি সরকারকে তুলোধনা, দিনের মতো কর্মসূচি বাতিল অভিষেকের