Wednesday, August 20, 2025

“সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম ম.রেই যাব”! ভ.য়াবহ অভিজ্ঞতা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রীদের

Date:

ঘড়িতে সন্ধে ৬:৫০ মিনিট। আচমকাই প্রবল চিৎকার, তারপরেই ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে গেল ট্রেন! দুর্ঘটনার ১ সেকেন্ড আগে ঠিক কী ঘটল, হাড়হিম করা সেই অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসের (Coromandel Express) যাত্রীরা। পেশায় পেন্টার এক ব্যক্তি যিনি কলকাতার বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তাঁরা চেন্নাই (Chennai) যাচ্ছিলেন নিজেদের কাজে। কিন্তু তা আর যাওয়া হল না। আপাতত বাড়ি ফেরার প্রহর গুণছেন আটকে থাকা যাত্রীরা।

এক যাত্রী সংবাদ জানিয়েছেন, শুক্রবার হাওড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এস৫-কোচে ছিলেন তিনি। সন্ধ্যা ৬:৫০ মিনিট নাগাদ আচমকা বিকট শব্দ হয়। দাঁড়িয়ে যায় ট্রেন। তারপরেই শুরু হয় আর্তনাদ, চিৎকার, চেঁচামেচি, হাহাকার। যদিও তিনি যে কামরায় যাচ্ছিলেন সেই কামরায় তেমন তীব্র প্রভাব পড়েনি দুর্ঘটনার। তবে সকলেই কম-বেশি আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, কাঁপা কাঁপা গলায় বাড়িতে ফোন, বেঁচে আছি। চিন্তা করো না। কেউ আবার স্টেশনে বসে রীতিমতো কাঁপছেন। স্থানীয় বাসিন্দার হাত ধরে বলছেন, একটু বলে দেবেন বাড়িতে, বেঁচে আছি আমি। বেঁচে থাকার যে এত আনন্দ তা বোধ হয় আগে বোঝেননি তাঁরা।

জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন গোবিন্দ মণ্ডল নামে এক যাত্রী। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমি সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম হয়তো মরেই যাব। একটা ভাঙা জানলা দিয়ে কোনওরকমে বেরিয়ে এসেছি। প্রথমে একটি ডিসপেন্সরিতে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে এখন বিপদ থেকে বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছি।

অপর এক যাত্রী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার আগেও বুঝতে পারলাম না এত বড় কিছু হতে পারে। কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে এটাও বুঝতে পারলাম না। তাহলে তো প্রচন্ড ঝাঁকুনি হত। কিন্তু এটা বুঝতে পারলাম ট্রেনটি লাইন থেকে নেমে গিয়েছে। পাশাপাশি অপর এক যাত্রী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার আগেও বুঝতে পারলাম না এত বড় কিছু হতে পারে। কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে এটাও বুঝতে পারলাম না। তাহলে তো প্রচন্ড ঝাঁকুনি হত। কিন্তু এটা বুঝতে পারলাম ট্রেনটি লাইন থেকে নেমে গিয়েছে।

উল্লেখ্য, রেললাইনে সাদা কাপড়ে ঢাকা মৃতদেহের সারি। ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। ট্রেনের দুমড়েমুচড়ে যাওয়া কামরা থেকে একের পর এক দেহ বের করেন নিয়ে আসছেন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ২৮৮, আহত প্রায় ১০০০ জন। তবে উদ্ধারকারীদের অনুমান মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আহতের সংখ্যাও আরও বাড়বে। ওড়িশার রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলী বাহিনী, সেনাবাহিনী, রেল পুলিশ, একাধিক এনজিও-র পাশাপাশি উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

 

 

Related articles

শিয়ালদহে ফিল্মি ড্রামা! কাঞ্চনার ‘রণচণ্ডী’ রূপে চমকাল যাত্রীরা

সকালের ব্যস্ত শিয়ালদহ স্টেশন হঠাৎ যেন সিনেমার সেট! নিত্যযাত্রীদের ভিড়ের মধ্যেই হাজির টলিপাড়ার পরিচিত মুখ কাঞ্চনা মৈত্র। গায়ে...

পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে কেন্দ্রকে চিঠি রাজ্যপালের, পাল্টা দাবি তৃণমূলের

রাজ্যের প্রায় ২১ লক্ষাধিক পরিযায়ী শ্রমিকের দুর্দশা নিয়ে কেন্দ্রকে সরাসরি চিঠি দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজভবন...

সুন্দরবনে বাড়ল কুমিরের সংখ্যা

সুন্দরবনে বাড়ল নোনা জলের কুমিরের সংখ্যা। বন দফতরের সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী এখন এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ২৪২-এ। এর...

খড়্গপুর স্টেশনে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, লোহার বিমে চাপা পড়ে প্রাণ গেল ৮ বছরের শিশুর

খড়্গপুর রেলস্টেশমে মর্মান্তিক ঘটনা। লোহার বিম পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল আট বছরের এক শিশুর। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর রেলস্টেশনের...
Exit mobile version