ক্যাগ রিপোর্টে আগেই একাধিক ত্রুটি, পাত্তাই দেয়নি রেল!

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রবিবার বলেন, ‘‘এই কাজ যাঁরা করেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করা গিয়েছে।’’ অর্থাৎ, ট্রেন দুর্ঘটনার পিছনে যে মানুষের হাত আছে, তার ইঙ্গিত ছিল মন্ত্রীর ওই কথায়। দুর্ঘটনার মূল কারণ জানা গিয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। সন্ধ্যায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যা কিছু প্রশাসনিক তথ্য পাওয়া গিয়েছে, সব মাথায় রেখেই এই দুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার সুপারিশ করেছে রেলওয়ে বোর্ড।’’

কিন্তু পরিসংখ্যান ও তথ্য বলছে,২০২২ সালে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)। রেলমন্ত্রক ট্রেন লাইনচ্যুত এবং ট্রেন সংঘর্ষ রোধে কোনও সুস্পষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা বা এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে কিনা তা জানতে চেয়েছিল ক্যাগ। ট্র্যাক পরিদর্শনে বড় মাপের ঘাটতি, দুর্ঘটনার পরে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বা গ্রহণ করতে ব্যর্থতা, অগ্রাধিকারমূলক কাজের জন্য রেলের নির্ধারিত তহবিলের অপব্যবহার, ট্র্যাক পুনর্নবীকরণের জন্য তহবিলের ঘাটতি এবং নিরাপত্তার জন্য অপর্যাপ্ত কর্মীর মতো একাধিক বিষয় নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ক্যাগ।
ক্যাগের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, রেলওয়ে ট্র্যাকের জ্যামিতিক এবং কাঠামোগত অবস্থা মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ট্র্যাক রেকর্ডিং গাড়ির মাধ্যমে পরিদর্শন ৩০-১০০ শতাংশ হ্রাস হয়েছে বলে লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি ট্র্যাক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের ব্যর্থতাগুলিও উল্লেখ করা হয়েছিল। যা ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনার পরে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছিল, ট্র্যাক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (টিএমএস) ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রমের জন্য অনলাইন নিরীক্ষণের জন্য একটি ওয়েব-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে হবে। তবে ওই পরামর্শ কার্যকর হতে দেখা যায়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, এপ্রিল ২০১৭ থেকে মার্চ ২০২১ পর্যন্ত প্রযুক্তিগত কারণে ৪২২টি লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে। বগি লাইনচ্যুত হওয়ার প্রধান কারণগুলি ছিল ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণে (১৭১টি ক্ষেত্রে) গাফিলতি। উপরন্তু সীমার বাইরে ট্র্যাক প্যারামিটার বিচ্যুতিও (১৫৬ ক্ষেত্রে) দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ছিল। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে বেড স্পিডিংও লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনার পিছনে আরও এক কারণ।

ক্যাগের রিপোর্ট বলছে, রেলের অপারেটিং ডিপার্টমেন্ট-এর ব্যর্থতার জন্য ২৭৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও, পয়েন্টের ভুল সেটিং এবং শান্টিং অপারেশনে অন্যান্য ভুল ৮৪ শতাংশ ঘটনার জন্য দায়ী।

Previous articleস্বজনহারাদের পাশে দাঁড়াতে ছয় সদস্যের কমিটি গড়লেন অভিষেক
Next article“বন্দেভারতের সাফল্য নিলে, রেলের গাফিলতির দায় নেবেন না কেন!” মোদিকে তো.প অভিষেকের