শ্রদ্ধার সৌধ! মায়ের স্মৃতিতে দেশের দ্বিতীয় ‘তাজমহল’ নির্মাণ দাউদের

সম্রাট শাহজাহান নিজের ভালোবাসার মানুষের জন্য বানিয়েছিলেন তাজমহল। কিন্তু এই গল্পটা আর পাঁচটা গল্পের থেকে একটু হলেও আলাদা। নিজের মাকে ভালোবেসে তাঁর স্মৃতিতে দেশের দ্বিতীয় তাজমহল গড়লেন চেন্নাইয়ের এক ব্যবসায়ী।

সারা পৃথিবীতে পর্যটকদের চোখে সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম। ভালোবাসার নিদর্শন হিসাবে সবসময় প্রথমের সারিতে রাখা হয়। ভালবাসার মহান নিদর্শন হিসাবে এই স্থাপত্যের নিদর্শন বরাবরই মানুষের মন ছুঁয়েছে। সম্রাট শাহজাহান নিজের স্ত্রী মমতাজকে ভালোবসে গড়ে দিয়েছিলেন শ্বেত সৌধ তাজমহল (Taj Mahal)। আর আগ্রার সেই ঐতিহাসিক তাজমহলের আদলে ফের দেশে তৈরি হল আরও এক তাজমহল। হ্যাঁ, শুনতে একটু অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। সম্রাট শাহজাহান নিজের ভালোবাসার মানুষের জন্য বানিয়েছিলেন তাজমহল। কিন্তু এই গল্পটা আর পাঁচটা গল্পের থেকে একটু হলেও আলাদা। নিজের মাকে ভালোবেসে তাঁর স্মৃতিতে দেশের দ্বিতীয় তাজমহল গড়লেন চেন্নাইয়ের (Chennai) এক ব্যবসায়ী। জানা গিয়েছে ওই ব্যবসায়ীর নাম, অমরউদ্দিন শেখ দাউদ (Amaruddin Seikh Daood)।

চেন্নাইয়ে তিরুভারুর জেলার আম্মাইপ্পানের বাসিন্দা অমরুদ্দিনের বয়স তখন মাত্র ১১ বছর। আর সেই সময় তাঁর বাবার অকালমৃত্যু ঘটে। এরপর থেকে একটি হার্ডওয়্যারের দোকান চালিয়ে চার মেয়ে এবং এক ছেলে অমরুদ্দিনকে নিয়ে একাই সংসারের যাবতীয় কাজ সামলেছিলেন তাঁর মা আব্দুল কাদার জিলানি বিবি। মনের জোরে গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর চেন্নাইয়ে নিজের ব্যবসা শুরু করেন অমরউদ্দিন। এরপর আচমকাই ২০২০ সালে মা মারা যান। আর তারপর থেকেই মায়ের অবদানের কথা মাথায় রেখে এবং মাকে ভালোবেসে জিলানি তাঁর স্মৃতিতে তাজমহলের আদলে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন অমরউদ্দিন। আর যেমন ভাবা তেমন কাজ। ধীরে ধীরে স্বপ্ন সফল হয় অমরউদ্দিনের।

এরপরই তাজমহলের স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করার জন্য রাজস্থান থেকে মার্বেল এবং দক্ষ শ্রমিক আনার ব্যবস্থা করেন তিনি। ২০২১ সালের জুন মাস থেকে শুরু হয় তাজমহল বানানোর কাজ। টানা দু’বছর ধরে শ্রমিকদের সঙ্গে দিন রাত এক করে কাজ করে দুশোরও বেশি মানুষ এই স্মৃতিসৌধ গড়ে তোলেন। এরপর চলতি মাসের ২ তারিখে স্মৃতিসৌধটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মোচন করে দেওয়া হয়েছে। যাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনা চোখে পড়ার মত। ইতিমধ্যে অমরুদ্দিনের তৈরি তাজমহল দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ।

তবে অমরউদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সমগ্র স্মারকটি গড়ে তুলতে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। তাঁর মা নিজেই এই টাকা রেখে গিয়েছিলেন। আর সেই টাকা খরচ করেই মায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তাজমহলের মতো স্মৃতিসৌধ গড়ে তুলেছেন এই ব্যবসায়ী। পাশাপাশি এর প্রাঙ্গণে একটি মাদ্রাসা স্কুলও তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে যেখানে ১০ জন পড়ুয়া থেকে লেখাপড়া করে।

 

 

 

Previous articleস্ত্রীর অভিযোগ দায়েরের পরই বেপাত্তা মুকুটমণি!এড়িয়ে যাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি
Next articleন্যায্য সহায়ক মূল্যের দাবিতে কুরুক্ষেত্রে জাতীয় সড়ক অবরোধ কৃষকদের