‘গীতশ্রী’র বাড়িতে প্রোমোটিংয়ের থাবা! ছিঁড়ছে স্মৃতির সুতো

মৃণাল সেন থেকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সময়কালের তারতম্যেও বাঙালির আত্মবিস্মৃতি স্বভাবের এতটুকু পরিবর্তন হয়নি। কিংবদন্তী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাসভবনও মুছে যাচ্ছে স্মৃতি থেকে।

প্রোমোটিংয়ের থাবা থেকে রেহাল পেল না গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি (Sandhya Mukherjee)। এবার সংগীত জগতের অন্যতম নক্ষত্রের ভিটেতেই, তাঁর বাড়ি ভেঙে বহুতল নির্মাণের অভিযোগ (Complaints about multi-storage construction)উঠল। যে বাড়িতে একের পর এক কালজয়ী সৃষ্টি হয়েছে সেই বাড়ি আজ বিস্মৃতির অতলে? ভারাক্রান্ত পড়শিদের মন। একের পর এক গান সৃষ্টি হয়েছে যেখানে সেই স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি আজ অবলুপ্তির পথে।

বাঙালির সঙ্গীত জগতের মেলোডি কুইন ‘গীতশ্রী’ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। নশ্বর দেহ ছেড়ে পরলোকের পথে পাড়ি দিয়েছেন বছর দেড়েক আগে। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির কথা আজও ভোলেনি বাংলা- বাঙালি। ‘চন্দন পালঙ্কে শুয়ে’ অন্য জগতের পথে পাড়ি দেন সন্ধ্যা। কিন্তু তাঁর লেক গার্ডেন্সের বাসভবন অনেক সৃষ্টির সাক্ষী। এই বাড়িতেই গীতশ্রী নানা গানের সুরে ঘরকন্যা করতেন কবি শ্যামল গুপ্তের সঙ্গে। সেই বাড়ির ‘হেরিটেজ’ তকমা পাওয়ার কথা । অথচ সেখানে প্রোমোটিংয়ের থাবা । এর আগেও বাংলার খ্যাতিমানদের বাসভবন ভেঙে বহুতল উঠতে দেখা গেছে। সময় বদলেছে, কিন্তু মানসিকতা বদলায়নি। তাই মৃণাল সেন থেকে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সময়কালের তারতম্যেও বাঙালির আত্মবিস্মৃতি স্বভাবের এতটুকু পরিবর্তন হয়নি। কিংবদন্তী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাসভবনও মুছে যাচ্ছে স্মৃতি থেকে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টা মেনে নিতে পারছেন না।

সংস্কৃতি গবেষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলছেন, বিদেশে শার্লক হোমসের মতো কল্পিত চরিত্রের জন্যও আলাদা মিউজিয়াম থাকে। কিন্তু এখানে মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, শচীন দেব বর্মণ এঁরা অবহেলিত থাকেন। তাই এটা আজ আর অবাক করে না আম বাঙালিকে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, পারিবারিক কারণে যদি বাড়ি ভাঙা হয় সেখানে তাঁর কিছু বলার নেই। তবে বিষয়টি তিনি একবার খোঁজ নিয়ে দেখবেন। যে বাড়িতে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন, তার এই করুণ দশা দেখে চোখ ছলছল ভক্তদের, কেউ বিরক্তি প্রকাশ করেছেন কেউ আবার উগরে দিচ্ছেন ক্ষোভ। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের একমাত্র কন্যা সৌমী জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগত কারণেই স্বেচ্ছায় প্রোমোটারদের বিক্রি করে দিয়েছেন তাঁর বাবা-মা’র স্মৃতি বিজরিত বাড়ি। এরপর বিতর্কের জায়গা থাকে না। কিন্তু প্রশ্ন থাকে মানুষ চলে গেলে স্মৃতির সুতো এভাবেই ছিঁড়ে যায়?

 

Previous articleগড়িহাটের বহুতলে ভ.য়াবহ অ.গ্নিকাণ্ড! ঘটনাস্থলে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন
Next articleইন্টার মিয়ামির হয়ে আর্সেনালের বিরুদ্ধে অভিষেক হচ্ছে না মেসির