Wednesday, December 24, 2025

কয়েকশো কোটি টাকার দু.র্নীতিতে অভিযুক্ত অজিত উপমুখ্যমন্ত্রী! কোথায় মুখ লুকোবেন মোদি?

Date:

Share post:

দুর্নীতির প্রশ্নে তিনি নি সব সময় বিরোধীদের আক্রমণ করেন। তৃণমূল, কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধী দলগুলিকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে হামেশাই মন্তব্য করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু মহারাষ্ট্রে এনসিপি থেকে বিদ্রোহী অজিত পওয়ারকে উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব দেওয়ায় প্রশ্নের মুখে মোদি এবং মহারাষ্ট্র বিজেপি। কারণ, একসময় মোদির গলাতেই শোনা গেছিল অজিতকে নিয়ে একগুচ্ছ দুর্নীতির অভিযোগ।

দীর্ঘদিনের জল্পনাকে সত্যি করে রবিবারই দলবল নিয়ে বিজেপির ছত্রছায়ায় গিয়ে উঠেছেন অজিত। সরাসরি উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু একসময় যাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরব ছিল বিজেপি, যাঁর ৬৫ কোটি টাকার সম্পত্তি পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্তে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বিজেপি-কে।  আবারও বিজেপিকে ‘ওয়াশিং মেশিন’ বলে আক্রমণ করতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।

মহারাষ্ট্র সমবায় ব্যাঙ্ক দুর্নীতি মামলায় অতি সম্প্রতিই চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। তাদের অভিযোগ, জরান্দেশ্বর সুগার মিল নামের একটি চিনিকল সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে মোট ৮২৬ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিল।এর মধ্যে ৪৮৭ কোটি টাকা মেটানোই হয়নি। পরবর্তী কালে ওই চিনিকল বিক্রি করে দেওয়া হয় একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থাকে। ইডি-র দাবি আখচাষিদের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতাই ছিল না ওই চিনিকলের। অন্য উদ্দেশ্য নিয়েই সেটি খোলা হয়েছিল এবং সময় মতো হস্তান্তরও করে দেওয়া হয়।
শুধুমাত্র এখানেই থেমে থাকেনি অজিতের দুর্নীতি। এর পাশাপাশি, জলসম্পদ বিভাগের দায়িত্বে থাকার সময় বাজারদরের চেয়ে নামমাত্র মূল্যে জলাধার ইজারা দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। ২০০৪ সালে নির্বাচন কমিশনে নিজের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩ কোটি বলে জানিয়েছিলেন অজিত।
অজিতের সঙ্গে রবিবার মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্ডের শিবসেনা এবং বিজেপি-র জোট সরকারে শামিল হয়েছেন হাসান মুশরিফ এবং প্রফুল্ল পটেলও। কোলাপুর চিনিকল থেকে ৪০ কোটি সরানোর অভিযোগ রয়েছে হাসানের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইডি। ঘুরপথে ওই টাকা সরানো হয় বলে অভিযোগ। প্রাক্তন বেসমারিক পরিবহণ মন্ত্রী প্রফুল্লকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। বিমান পরিবহণ মন্ত্রী থাকাকালীন, এমিরেটস, এয়ার আরাবিয়া এবং কাতার এয়ারওয়েজকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে ২৭২ কোটি টাকার দুর্নীতিতে তিনি যুক্ত ছিলেন বলে সামনে আসে।

তাই অজিত, হাসান এবং প্রফুল্লকে নিজেদের ছত্রছায়ায় টানার জন্য বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়ছেন মোদি এবং তাঁর দল বিজেপি।

আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিং বলেন, “নরেন্দ্র মোদি দেশে দুর্নীতিগ্রস্তদের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক।” কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, “বিজেপি আবার ওয়াশিং মেশিনের ভূমিকায় অবতীর্ণ। বিজেপি-জোটের নতুন সদস্যদের বিরুদ্ধে দু্র্নীতির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। ইডি, সিবিআই, আয়কর আধিকারিকরা এতদিন পিছনে পড়েছিলেন। এবার ক্লিনচিট পেয়ে গেলেন।” এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি বিজেপি। তবে প্রায় সব রাজ্যেই একই অভিযোগ উঠছে তাদের বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বেছে বেছে বিরোধীদের পিছনে তদন্তকারীদের লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তবে বিজেপি-র হাত ধরলেই সকলে মুক্তি পেয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি বিজেপি-বিরোধী প্রায় সব দলেরই।

spot_img

Related articles

উৎসবেও অব্যাহত উন্নয়ন: বুধে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী

বছর শেষে উৎসবে মাতোয়ারা গোটা বাংলা। অন্যদিকে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। এই পরিস্থিতিতে কোনও ভাবেই উৎসবের আনন্দে থমকে যেতে...

জনজাতি এলাকায় বেআইনি দখলদারি, উচ্ছেদের দাবি তুলতেই অসম পুলিশের গুলি, মৃত ২

বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে উপজাতি বা জনজাতির মানুষের অধিকার যে একেবারেই রক্ষিত হয় না তার প্রমাণ আগেও মিলেছে। ফের...

তাম্রলিপ্ত পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচন অবৈধ, পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ হাইকোর্টের

তাম্রলিপ্ত পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে বড়সড় পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। চেয়ারম্যান চঞ্চল কুমার খাঁড়ার নির্বাচন পদ্ধতিকে অবৈধ ঘোষণা করল কলকাতা...

ফের রক্তাক্ত কোচবিহার: দিনহাটায় গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা

ফের দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য কোচবিহারে। দিনহাটার (Dinhata) বাড়ি থেকে বেরোতেই গুলি চালানো হয় তৃণমূল নেতা মিঠুন রাজভরকে লক্ষ্য করে।...