Monday, December 29, 2025

৫ মাসে সরকার পড়বে: শান্তনুর ডেডলাইনের পাল্টা ‘ক্যালেন্ডার ব্যবসা’ কটাক্ষ তৃণমূলের

Date:

Share post:

পঞ্চায়েত নির্বাচনে(Panchayet Election) চূড়ান্ত ভরাডুবি হয়েছে রাজ্য বিজেপির(BJP)। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের(Shantanu Thakur) নিজের গড়েই বেহাল অবস্থা বিজেপির। বিভক্ত হয়ে গিয়েছে মতুয়া ভোট। যার জেরে এই পরাজয় একেবারেই মেনে নিতে পারেননি শান্তনু। এর পরই রাগে ফুঁসে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের পতনের ডেডলাইন ঘোষণা করে দিলেন তিনি। তৃণমূলকে তোপ দেগে শান্তনু জানালেন, “আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে রাজ্যে তৃণমূলের সরকার পড়ে যাবে।” যদিও বিজেপি সাংসদের পাল্টা দিয়ে তৃণমূলের(TMC) তরফে জানানো হল, সরকার পড়ে যাবে, তবে সেটা বাংলার নয়। দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি বিজেপির রাজনীতিকে, ক্যালেন্ডার ভিত্তিক রাজনীতি বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

একদিকে বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে গো-হারা হেরে বাংলায় ৩৫৫ ধারা জারির চেষ্টা করছেন সুকান্ত–শুভেন্দুরা। ঠিক সেই সময়ে বাংলায় সরকার পতনের ডেডলাইন বেধে দিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, “বাংলায় শাসকদল যেভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন করিয়েছে তাতে গণতন্ত্র চলতে পারে না। তৃণমূল সন্ত্রাস না করলে বিজেপি ১০ গুণ বেশি ভোট পেত। এদের ভাবনা এরা চিরস্থায়ী। কিন্তু এরা চিরস্থায়ী নয়, আগামী ৫ মাসের মধ্যেই এদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।” সান্তনুর মন্তব্যের পাল্টা দিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “মানুষের ভোটে নির্বাচনে হারার পর দিবাস্বপ্ন দেখিয়ে দলের কর্মীদের বিভ্রান্ত করে রাখার চেষ্টা বিজেপির। বিজেপি নেতারা আসলে ক্যালেন্ডারের ব্যবসা করছে। কিছুদিন আগে ওরা বলতেন, অমুক সালের ডিসেম্বরে দেখবেন কি হয়, তমুক সালের ফেব্রুয়ারি, অগাস্ট! তারিখ সব পার হয়ে যায়। এদের রাজনীতিটাই ক্যালেন্ডার ভিত্তিক। এদের মানসিকতা হল ভোটে জিতব না, সংগঠন করব না, দিল্লির ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে এজেন্সি লাগিয়ে কী কী ভাবে অস্থিরতা তৈরি করা যায়। তাই হচ্ছে। এই সুকান্ত-শান্তনুরা নিজের বুথে, নিজের ওয়ার্ডে জিততে পারেনি। ফলে এরা এই ধরনের কথা বলে, বস্তাপচা খেলা খেলছে।” এমনকি ঘোড়া-কেনাবেচার জল্পনাকে ফুঁৎকারে উড়িয়ে কুণাল বলেন, “বিধায়করা যাচ্ছেন না। আর তৃণমূল এমন একটা দল যেখান থেকে কেউ চলে গেলে দলের কিছু সমস্যা হয় না। যা বিধানসভার আগে মানুষ দেখেছে। আসলে বালুরঘাট লোকসভায় গোহারা হারবে ভেবে তৃণমূলের এক নেতাকে সুকান্ত বলেছে আমার ব্যাপারটা একটু দেখবেন। শান্তনুও শুনেছি তৃণমূলে আসার জন্য তলে তলে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।”

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সাংসদ তথা মুখপাত্র শান্তনু সেন(Shantanu Sen) বলেন, “বেহায়া, নির্লজ্জ দু’কান কাটা দল। যাদের সব জায়গায় প্রার্থী দেওয়ার ক্ষমতা নেই, যারা প্রার্থী দিলেও জেতাতে পারে না, তারা রাজনীতিতে ভেসে থাকতে এইসবই বলে বেড়ায়। এর আগেও বেহায়া শুভেন্দু, সুকান্তদের মুখে এইসব শুনেছি ওরা একটার পর একটা তারিখ দিয়ে গেল, তারপর গোটাটা দাড়ালো অশ্বডিম্ব। তবে এটা ঠিক ৫ মাসের মধ্যে সরকার পড়ে যাবে। কিন্তু ওটা রাজ্যের নয় দিল্লির বিজেপি সরকার পড়ে যাবে।” পাশাপাশি, বিজেপিকে তোপ দেগে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “বিজেপি যদি ভেবে থাকে, ইডি সিবিআই লাগিয়ে টাকা ঢেলে বাংলায় সরকার ফেলে যেমন তারা মধ্যপ্রদেশ, গোয়ায় করেছিল, তবে ভুল ভাবছে। বাংলায় ওটা চলবে না। এখানে একনাথ শিন্ডে, অজিত পাওয়ারের মতো বেইমানদের জায়গা নেই। মানুষের আশীর্বাদ রয়েছে তৃণমূলের মাথার উপর।”

যদিও বিজেপির তরফে এই ঘটনা নতুন কিছু নয়, এর আগেও এই ধরনের ডেডলাইন শোনা গিয়েছিল শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ–সহ অনেকের মুখে। এর আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, “‌৬ মাস পর তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে না। তার আগেই ডিসেম্বরের মধ্যে ঝাঁপ গুটিয়ে যাবে।” তবে যতবার এই ধরনের মন্তব্য বিজেপির তরফে দেখা গিয়েছে ততবারই গণতান্ত্রিক পথে মানুষের থাপ্পড় খেয়েছে গেরুয়া শিবির।

spot_img

Related articles

দলনেত্রীর নির্দেশে ২৯৪ কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটরের নাম ঘোষণা তৃণমূলের

২৬ ডিসেম্বরের ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন রাজ্যের সবক’টি বিধানসভা কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটরের নাম জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতোই...

সংস্কার, গতিশীলতা ও সিদ্ধান্ত: ২০২৫-এ যে পথে ভারতের অর্থনীতি

গত পাঁচ বছরে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন প্রতিকূল ঘটনাবলী ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৫-এ...

মঙ্গলে বাঁকুড়ায় মমতা, SIR আবহে নির্দেশের অপেক্ষায় নেতা-কর্মীরা

বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্য জুড়ে যখন এসআইআর ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ, ঠিক সেই আবহেই মঙ্গলবার...

বিশেষ সংশোধনীতে প্রবীণ ভোটারদের স্বস্তি! শুনানিতে হাজিরার বাধ্যবাধকতা নয় 

রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রবীণ, গুরুতর অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী ভোটারদের শুনানিতে হাজির হতে বাধ্য...