বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে জেলে পাঠানো উচিত, বিজেপি নেতার পোস্ট ঘিরে চাঞ্চল্য

বিশ্বভারতী একটি স্বশাসিত সংস্থা এবং উপাচার্য এখনও অবধি যা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা সম্পূর্ণ তাঁর নিজের দায়িত্বে

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে সরব বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা।

ফেসবুকে ‘#বিশ্বভারতী’ ও ‘#বিদ্যুতের_বেয়াদপি’ দিয়ে তিনি লেখেন, ‘শুনলাম নাকি তপশিলি জাতিভুক্ত অধ্যাপক/আধিকারিক’এর পদোন্নতি আটকানোর চেষ্টা/হেনস্থা করার অভিযোগে থানায় FIR দায়ের করা হয়েছে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে! একজন তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষ হিসেবে বলছি, পূর্ণাঙ্গ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করে যদি প্রমাণ হয় যে এতে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী যুক্ত, তাহলে পুলিশের উচিত আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া, প্রয়োজনে জেলে পাঠানো! উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বারবার নেতিবাচক কারণে খবরের শিরোনাম এসেছে বিশ্বভারতী, একটি মানুষের ঔদ্ধত্যের জন্য – ১. কবিগুরুর প্রতিষ্ঠা করা আন্তর্জাতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীর নাম খারাপ হবে. ২. একই সঙ্গে বিশ্বভারতীর পঠন-পাঠনের গুণগত মানের অবনতি ঘটবে, ৩. উপাচার্যের বেয়াদপির জন্য আচার্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বোলপুর শান্তিনিকেতনের স্থানীয় মানুষজন, প্রাক্তনী তথা আশ্রমিকদের কাছে বারবার সমালোচিত হতে হবে, এগুলো বারবার মেনে নেওয়া যায় না!

অনুপম আরও লিখেছেন, ‘শান্তিনিকেতনের একজন স্থানীয় বাসিন্দা হিসাবে, বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী হিসেবে, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপক হিসেবে এবং বোলপুরের প্রাক্তন সংসদ হিসেবে বোলপুরের মানুষজনকে একান্ত অনুরোধ, বিশ্বভারতীর উপাচার্যের কর্মকাণ্ডের জন্য দয়া করে বিশ্বভারতীর আচার্য তথা ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করবেন না। কারণ বিশ্বভারতী একটি স্বশাসিত সংস্থা এবং উপাচার্য এখনও অবধি যা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা সম্পূর্ণ তাঁর নিজের দায়িত্বে, এতে অন্তত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কোনও ইন্ধন নেই।’

তার ব্যাখ্যা, ‘এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠতে পারে, বিজেপির অন্য কোনও নেতা তো উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তেমন মুখ খোলেন না, কিন্তু আপনি বারবার বলেন কেন? উত্তরটা হল, আমি নিজে তপশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত, ছোট থেকে বিশ্বভারতীতে আমার পড়াশোনা, শৈশব থেকে কৈশোর পুরোটাই কেটেছে বিশ্বভারতীতে, বিশ্বভারতীতে অধ্যাপক ছিলাম, পরবর্তীতে বোলপুরের সাংসদ হই, তার সঙ্গে তৎকালীন লোকসভার স্পিকার মনোনীত বিশ্বভারতীর কোর্ট মেম্বারও ছিলাম বেশ কিছু সময়ের জন্য। বিশ্বভারতীর সঙ্গে এতগুলো শিকড় আমি ছাড়া আমার দলের আর কারোর আছে বলে তো আমার জানা নেই। তাই আমি বিশ্বভারতীকে নিয়ে যতটা আবেগ অনুভব করতে পারি আমার দলের কোনও নেতা বা সদস্যের পক্ষে সেটা অনুভব করা সম্ভব নয়।’
এই ফেসবুক পোস্টের পর বিশ্বভারতী জুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতার সঙ্গে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সংঘাত এখন প্রকাশ্যে চলে এল।
এর পাল্টা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বক্তব্য, ‘এতো চোরের মায়ের বড় গলা! উপাচার্যের জন্যই বিশ্বভারতীর মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের মান তলানিতে ঠেকেছে। এটা আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ অনুপমের দলের সব নেতারাই জানেন। তা হলে কী কেন্দ্রীয় সরকার জেগে ঘুমোচ্ছে? বিশ্বভারতীকে কালিমালিপ্ত করার দায় এড়াতে পারেন না প্রধানমন্ত্রী।’ তবে, অনুপমের পোষ্ট নিয়ে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে গিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

 

Previous article৪৮-এ অনস্ক্রিন চুমু খেলেন কাজল, বাংলার হিরোর জন্য পলিসি ব্রেক!
Next article৫ মাসে সরকার পড়বে: শান্তনুর ডেডলাইনের পাল্টা ‘ক্যালেন্ডার ব্যবসা’ কটাক্ষ তৃণমূলের