মতুয়া নয়, পাঁচবছরে শুধু নিজের উন্নয়ন করেছেন! বনগাঁয় শান্তনুর কাঁটা নির্দল সুমিতা!

তিনি রাজনীতির লোক নন, তাই রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চান। এমনকী, ঠাকুর নগরের মতুয়া ঠাকুরবাড়িকে রাজনীতি মুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। কিন্তু পুরোটাই ছিল লোক দেখানো। তাঁর কথার জাদুতে জড়িয়ে পড়েছিল মতুয়া সমাজ। নিমেষে অর্জন করেছিলেন জনপ্রিয়তা। ঠাকুরবাড়ির এই সদস্যকে ভরসা করেছিলেন মতুয়া ভক্তরা। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হয়েছিলেন শান্তনু। সেই ২০১৯ সালের কথা। ভোটে দাঁড়ানোর যুক্তি হিসেবে মতুয়া সমাজের কাছে তখন শান্তনু ঠাকুরের বার্তা ছিল, “মতুয়া সমাজের উন্নয়ন চাই। আর তার জন্য সংসদে গিয়ে ১১ দফা দাবি পূরণ করব।”

এরপর ভোটে জিতে শান্তনু ঠাকুর সাংসদ হয়েছেন। মন্ত্রীও হয়েছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি রাখেননি। করেননি দাবি পূরণ । নিঃশর্ত নাগরিকত্ব নয়, এখন দেশবাসী হতে গেলে শর্তের বোঝা বইতে হবে। তাতেই আতঙ্কিত মতুয়া সমাজ। ফের বে-নাগরিক হতে হবে না তো? এমন ধোঁয়াশার আবহে মতুয়া সমাজ থেকেই ভোট ময়দানে এসেছেন সুমিতা পোদ্দার (Sumita Poddar)। প্রচারে তুলে ধরছেন শান্তনু ঠাকুরের ভোলবদলের কাহিনি। প্রশ্ন তুলছেন, বাস্তবে কার উন্নয়ন চেয়েছিলেন শান্তনুবাবু? মতুয়া সমাজের নাকি নিজের পরিবারের? জানতে চাইছেন মুখ আর মুখোশের ফারাক।

২০১৯ সালে বিজেপি প্রার্থী হওয়ার পর এক দফা বিশ্বাসভঙ্গ হয়েছিল মতুয়া মানুষদের। কিন্তু সেবার তিনি বলেছিলেন, ভক্তদের সম্মিলিত দাবিতে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। বিজেপি মতুয়া সমাজের উন্নয়নে ১১ দফা দাবি মেনে নিয়েছে। সেই দাবিগুলির মধ্যে কী ছিল? নিঃশর্ত নাগরিকত্ব, হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে রাষ্ট্রীয় ছুটি, গুরুচাঁদ ঠাকুরকে মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদান, মতুয়া গোঁসাই ও পাগলদের মাসিক আড়াই হাজার টাকা ভাতা। এছাড়া হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, ঠাকুরনগরকে মডেল স্টেশন ঘোষণার মতো দাবিও ছিল তালিকায়। এই ১১ দফা ‘ভরসা’র উপর ভর করেই জিতেছিলেন শান্তনু। সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হয়েছেন তিনি।

কিন্তু পাঁচ বছরে সাধারণ মতুয়াদের কী উন্নয়ন হয়েছে? এই প্রশ্ন তুলে মতুয়াগড়ে প্রচারে ঝড় তুলছেন সুমিতা পোদ্দার। বলছেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালাই। সাধারণ মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের অসহায়তা দেখেছি। সাধ্য মতো তাঁদের পাশে থেকেছি। ঠাকুরবাড়ির সদস্য হিসেবে শান্তনুবাবুর প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু বিজেপির সাংসদ ও মন্ত্রী হিসেবে তিনি চূড়ান্ত ব্যর্থ। ১১ দফা দূবি তিনি পূরণ করেননি। মতুয়া সমাজের উন্নয়নের জন্য কোনও উদ্যোগও নেননি।”

 

Previous articleগরমকে উপেক্ষা করেই আজ মুকুটমণির সমর্থনে রানাঘাটে জোড়া সভা মমতার
Next articleকৈখালির গেঞ্জি কারখানায় বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড! ঘন্টাখানেকের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে