ফেসবুক লাইভে স্বামীর বিরুদ্ধে নি.র্যাতনের অভিযোগ মহিলার! তুমুল শোরগোল স্যোশাল মিডিয়ায়

২০০৬ সালের ৯ অগাস্ট হাওড়ার বাসিন্দা সমাগতার সঙ্গে বিয়ে হয় নবগ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ ভট্টাচার্যের। বর্তমানে অভিজিৎ রাইটার্সে কর্মরত।

সুমন করাতি, হুগলি

কোন্নগরের (Konnagar) নবগ্রামের এক মহিলার ফেসবুক লাইভ (Face Book) ঘিরে তুমুল চাঞ্চল্য। স্বামী, তাঁর বন্ধু এমনকী নিজের ছেলের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে সরব হন সমাগতা ভট্টাচার্য (Samagata Bhattacharya)। শনিবার, রাতের সেই লাইভ মুহূর্তে ভাইরাল হয়। ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ও স্থানীয় জন প্রতিনিধি। সেই পর্যায়ে বিষয়টি মিটে গেলেও, রবিবার সকাল তেকে ফের ফেসবুক লাইভে নিগ্রহের অভিযোগ তোলেন ওই মহিলা। তাঁর বাড়ি যান মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি। সমাগতা মানসিক রোগী বলে অভিযোগ তাঁর স্বামীর। কিন্তু নিজেকে সুস্থ বলে দাবি করে উল্টে পরিবারে বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন ওই মহিলা।

২০০৬ সালের ৯ অগাস্ট হাওড়ার (Howrah) বাসিন্দা সমাগতার সঙ্গে বিয়ে হয় নবগ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ ভট্টাচার্যের। বর্তমানে অভিজিৎ রাইটার্সে কর্মরত। তাঁর অভিযোগ, সমাগতা মানসিক রোগী। কিন্তু সেটা লুকিয়ে তাঁদের বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন। ২০১২ সাল থেকে স্ত্রীর চিকিৎসা শুরু করান। অভিজিতের দাবি, তাঁর স্ত্রী এমনই একটা মানসিক রোগে আক্রান্ত যেখানে যাকে বাইরে থেকে দেখে কিছুই বোঝা যায় না। সমাগতা ওষুধ খেতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। তাঁর বাবার বাড়িতে জানিয়েই সমাগতার চিকিৎসা করানো হত। শনিবার, স্ত্রীর মানসিক অবস্থা ঠিক ছিল না বলে অভিযোগ অভিজিতের। তাঁকে এবং তাঁর ১৫ বছরের পুত্র সন্তানের দিকে বটি নিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন স্ত্রী। তখন তাকে আটকাবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু উপর অত্যাচার করা হয়নি। স্ত্রীকে আটকাতে গিয়ে তাঁকে স্ত্রীর কামড় খেতে হয়েছে বলে অভিযোগ অভিজিতের।

তবে, সমাগতার বয়ান আলাদা। তাঁর মতে, ঘটনার সূত্রপাত স্বামীর থেকে ১০০ টাকা ফোনের রিচার্জের জন্য চাওয়ার সময়। আগেও তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন স্বামী। কিন্তু সংসারের শান্তি বজায় রাখতে চান বলে কিছু বলেননি। কিন্তু শনিবার, তাঁকে অভিজিৎ প্রবল মারধর করেন। তিনি বিষয়টি সোশ্যাল সাইটের সাহায্যে মানুষের কাছে সাহায্যের আর্তি জানান। সমাগতার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাঁকে কড়া ওষুধ খাইয়ে মানসিক রোগী সাজিয়ে রাখার চেষ্টা চালান তাঁর স্বামী। তিনি ওষুধ খেতে অস্বীকার করলে তাঁর উপর চলে অত্যাচার। স্বামী অভিজিতের সঙ্গে সমাগতার দিদির একটা সম্পর্ক আছে বলেও তাঁর অভিযোগ। বারংবার বাবা-মাকে এই বিষয়ে জানান সমাগতা। শনিবার, অত্যাচারের মাত্রা এতটাই বেশি ছিল যে তিনি নিজেকে বাঁচাতে তাঁর স্বামীকে কামড়ে দিয়ে ভয়ে নিজেকে একটি ঘরে বন্দি করে ফেসবুক পোস্ট করে বাঁচানোর আর্জি জানান। এমনকী ১৫ বছরের পুত্র সন্তান বাবার কথা শুনে তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ করেন ওই মহিলা।

ফেসবুক লাইভ দেখে সমাগতার এক ফেসবুক বন্ধু হাওড়ার বাসিন্দা সোমা দাস রবিবার সকালেই যান কোন্ননগরে তাঁদের বাড়িতে। সমাগতাকে তাঁর বাবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিয়ে যান পূজা দাস বলে ওই মহিলা। পূজার কথায়, আগেও অনেকবার ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে সমাগতার সঙ্গে কথা হয়েছে কিন্তু কখনও কেউ বুঝতে পারেননি যে উনি মানসিকভাবে অসুস্থ। কিন্তু এখন তার শ্বশুর বাড়িতে এসে এসব কথা শুনতে বিশ্বাস করতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। এদিন বন্ধু পূজার সঙ্গে নিজের বাবার বাড়ি হাওড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন সমাগতা। এখন কোন পথে এই সমস্যর সমাধান হয়ে সেটাই দেখার।

 

 

Previous articleছুটিতে বাড়ি এসে আচমকাই নিখোঁজ! কাশ্মীরের জওয়ানকে নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা, উদ্ধার র.ক্তাক্ত গাড়ি
Next articleক‍্যারিবিয়ানদের কাছে ম‍্যাচ হেরে কী বললেন ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়?