হরিয়ানার গুরুগ্রামের কাছে নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের(VHP) জলাভিষেক শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় হিংসাত্মক পরিস্থিতি। আর এই হিংসার পিছনে উঠে আসছে বজরং দলের নেতা মনু মানেসর(Manu Manesar)। জানা যায়, ওই সভায় উপলক্ষ্যে মনু মানেসর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি উস্কানিমূলক পোস্ট করেন। তাঁর উপস্থিতির গুজবকে কেন্দ্র করেই সোমবার দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারন করে। যার জেরে দুই হোমগার্ডসহ চারজন নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। হিংসা ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গুরুগ্রামে, যেখানে রাতারাতি একটি মসজিদে আগুন দেওয়া হয়। কিন্তু কে এই মনু! যার উস্কানিমূলক ভিডিও বার্তাকে কেন্দ্র করে এত ভয়াবহ আকার ধারন করল পরিস্থিতি।
জানা যাচ্ছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত বছর ৩০-এর মনু মানেসর। দিন কয়েক আগে এই ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বার্তা দেন। যেখানে উস্কানি মূলক বার্তার পাশাপাশি তিনি দাবি করেছিলেন, নুহতে আয়োজিত ওই ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দেবেন তিনি। এবং তাঁর সমর্থকদেরও বিপুল সঙ্খ্যায় ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। যদিও সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, শেষ পর্যন্ত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পরামর্শে ওই সভায় তিনি যোগ দেননি। কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছিল, ওই সমাবেশে মনুর উপস্থিতি ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। তবে শেষরক্ষা হয়নি।
মনু মানেসার সম্পর্কে পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভিওয়ানিতে একটি পোড়া গাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া দুই মুসলিম ব্যক্তিকে। যারা ছিলেন পশু ব্যবসায়ী জুনায়েদ ও নাসির। সেই ঘটনায় মনুর বিরুদ্ধে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ আনার পর থেকেই পলাতক ছিল এই বজরং নেতা। রাজস্থানের ভরতপুরে মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বজরং দলের সদস্যরা পিটিয়ে হত্যা করেছে তাঁদের, যদিও বজরং দল সে অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দেয়। রাজস্থান পুলিশের দাবিও মনুকে ধরতে একাধিকবার পুলিশের তরফে অভিযান চালানো হলেও, পুলিশি অভিযানের খবর আগাম পেয়ে যাওয়ায় বারবার পালাতে সক্ষম হয় মনু। পুলিশের দাবি, মনু মানেসার ওরফে মোহিত যাদব মেওয়াতে একটি গোরক্ষক গোষ্ঠীর মেতা এবং গো হত্যাকারীদের উপর হামলা চালানোর ভিডিও পোস্ট করার জন্য কুখ্যাত। ‘লাভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্যেও সক্রিয় মনু।
উল্লেখ্য, মনু মানেসার ২০১৯ সালে প্রথম খবরের শিরোনামে আসেন, যখন গরু পাচারকারীদের তাড়া করার সময় পাচারকারীরা তাকে গুলি করে। 2015 সালে গো সুরক্ষা আইন কার্যকর হওয়ার পরে মনুকে হরিয়ানা সরকার কর্তৃক গঠিত জেলা গো-সুরক্ষা টাস্ক ফোর্সের সদস্য করা হয়। মনু মানেসারের ইউটিউব এবং ফেসবুকে হাজার হাজার অনুগামি। এবং প্রায়শই তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে নিজের অস্ত্র এবং গাড়ির ছবি পোস্ট করেন।