অশা.ন্ত মণিপুরে তিন মাসে নিখোঁজ অন্তত ৩০, হদিশ দিতে ব্যর্থ বিজেপি পুলিশ

মণিপুরে হিংসার ঘটনায় আরও ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ্যে। কুকি- মেইতেই জাতি সংঘর্ষের জেরে বহু মানুষ ঘরছাড়া। তিনমাসে নিখোঁজ ৩০ জনেরও বেশি। এদের মধ্যে কেউ সাংবাদিক, কেউ গবেষক, কেউ আবার সমাজকর্মী। এমনকি নিখোঁজ ডায়েরি করা সত্ত্বেও কোনও হদিশ দিতে পারেনি পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ মণিপুর নিয়ে মোদিকে চাপে রাখতে আজই রাষ্ট্রপতির সাক্ষাতে INDIA জোট

গত ৩ মে থেকে গোষ্ঠী হিংসায় দীর্ণ মণিপুর। এই সময়ে সে রাজ্যে একাধিক খুন, গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই ৬০০০ জিরো এফআইআর দায়ের হয়েছে। উল্লেখ্য যে, এই এফআইআর-এর ক্ষেত্রে রাজ্যের যে কোনও থানাতেই অভিযোগ দায়ের করা যায়। পরে পুলিশ যে থানা এলাকায় অপরাধ হয়েছে বা তেমন অভিযোগ রয়েছে, সেখানে বিষয়টি পাঠিয়ে দেন। নিখোঁজ ডায়েরি খতিয়ে দেখেই জানা গিয়েছে, ৩০ জনের সন্ধান এখনও মেলেনি। তবে এই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত ৬ মে , তখন সবে কুকি-মেইতেই সংঘর্ষ শুরু হয়েছে মণিপুরে। বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ৪৭ বছর বয়সি অ্যাটম সমরেন্দ্র সিং। পেশায় একজন সাংবাদিক, গবেষক এবং সমাজকর্মী সমরেন্দ্র সেই যে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন, আর ফেরেননি। আজ ৩ মাস পরেও তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। স্ত্রী কবিতা এখন ভয়ঙ্কর কোনও দুঃসংবাদের জন্য নিজের মন শক্ত করছেন ।
শুধু সমরেন্দ্র নয়, সেদিনই নিখোঁজ হয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে থাকা বন্ধু ইউমখাইবাম কিরণকুমার সিং। দুজনে গাড়ি চালিয়ে কাংপোকপি জেলার পাদদেশের সীমান্তবর্তী মণিপুর অলিম্পিক পার্ক সংলগ্ন সাহেবুং এলাকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর থেকেই তাঁদের মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। তারপর বহু খোঁজাখুঁজির পরেও দুজনের সন্ধান মেলেনি আর। সমরেন্দ্রর স্ত্রী কবিতা জানিয়েছেন, রাজ্যের হিংসা উপদ্রুত এলাকায় খবর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। আপাতত তাঁর ফেরার অপেক্ষায় বসে রয়েছে পরিবার। সমরেন্দ্রর ছেলে থইহেনবার কথায়, “বাবা চেয়েছিলেন যে আমি বিজ্ঞানী হই। বাবাই ছিলেন সংসারের এক মাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। জানি না, বাবা কবে ফিরবে।”

চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ছিল ১৭ বছর বয়সি হিজাম লুয়াংবি লিনথোইনগামবির। গত ৬ জুলাই সকালে কার্ফু আংশিক শিথিল করার পর সে ভেবেছিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। তাই প্রায় দু’মাস পর বন্ধুর বাইকে চেপে নিটের কোচিং নিতে বেরিয়েছিল সে। কিন্তু তার পরিবার পথ চেয়ে বসে রইলেও এখনও ঘরে ফেরেনি বাড়ির ছেলে।
গত ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় মণিপুরে। সে দিন রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। তার পর থেকে তিন মাস কেটে গেলেও এখনও সেই হিংসায় লাগাম পরানো যায়নি।

 

 

Previous articleরাতভর বৃষ্টিতে রেললাইনে ধস, ব্যাহত শিয়ালদহ-নৈহাটি শাখার ট্রেন চলাচল
Next articleদাপটের সঙ্গে সিরিজ জয়, কোহলিকেই কৃতিত্ব দিলেন হার্দিক!