যাদবপুরে গুরু দায়িত্ব পাওয়ার পরই নতুন শপথ ছাত্রনেত্রী রাজন্যার

বছর কয়েক আগে প্রেসিডেন্সিতে তখন তৃণমূলের ছাত্র আন্দোলন চলছে। বাম-অতিবাম শক্তির বিরুদ্ধে এক তরুণী মেইন গেট টপকে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। সেই থেকে শুরু।

রাজন্যা হালদার। তৃণমূলের জনপ্রিয় ছাত্রনেত্রী। এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ৰাক্তনী। বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্রী। একুশে জুলাই তৃণমূলর শহিদ দিবসের মঞ্চে উত্থান হয়েছিল রকেট গতিতে উত্থান হয়েছিল এই তরুণীর। তবে রাজন্যার প্রথম লাইম লাইটে আসা একুশে জুলাই নয়। বছর কয়েক আগে প্রেসিডেন্সিতে তখন তৃণমূলের ছাত্র আন্দোলন চলছে। বাম-অতিবাম শক্তির বিরুদ্ধে এক তরুণী মেইন গেট টপকে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। সেই থেকে শুরু। রাজন্যা আরও বেশি করে প্রচারের আলোয় আসে গতবছর সরস্বতী পুজোর সময়, যখন প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে পুজো করার উদ্যোগ নিয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বাম-অতিবাম ছাত্রদের বাধায় পুজো করা যায়নি ক্যাম্পাসে। কিন্তু হার না মানা মনোভাব নিয়ে মেইন গেটের বাইরে বাগদেবীর আরাধনা করেছিল প্রেসিডেন্সির তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকরা। আর চমক দিয়ে সেই পুজোয় মহিলা পুরোহিতের ভূমিকা পালন করে এই রাজন্যা। এরপর কেন্দ্রের বঞ্চনা ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রতি হিংসামূলক আচরণের প্রতিবাদে রেড রোডে ধর্ণা দিয়েছিলেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে একঝাঁক তরুণ-তরুণী গান গিয়েছিলেন। তার মধ্যে একজন ছিল রাজন্যা। এরপর একুশে জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে লাখ লাখ কর্মী-সমর্থকদের সামনে একুশে জুলাই ঝাঁঝালো বক্তব্য রেখে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের নজর কেড়েছিলেন সোনারপুরের ছাত্রীটি। বাকিটা ইতিহাস।

সম্প্রতি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনার পর TMCP নেতৃত্বের সঙ্গে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে ‘নির্যাতন’-এর মুখে পড়তে হয়, ছিড়ে দেওয়া হয় তাঁর জামাকাপড়। যাদবপুরের ‘মুক্তমনা’ মাটি দখলে রাজন্যার উপর আস্থা রেখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের ছাত্র সংগঠন। এবার নতুন ইউনিটে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই TMCP নেত্রীকে।

এ রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ। প্রায় সমস্ত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রমরমা হলেও যাদবপুরের ‘রাজনৈতিক জমি’ অধরাই থেকে গিয়েছে TMCP-র। বিশ্ববিদ্যালয়ে দলের সংগঠনের হাল বেহাল, একচেটিয়া দাপট বামপন্থী SFI, AISA বা AIDSO-র মতো সংগঠনগুলির। এই পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ে দলের ভিত মজুবত করার কাজটা কী আদৌ সহজ হবে? সংবাদ মাধ্যমের এই প্রশ্নে রাজন্যার সোজা-সাফটা উত্তর, “কাজটা কঠিন। তবে আমি পিছিয়ে আসার মতো মেয়ে নই। বাম-অতিবামদের বাড়বাড়ন্ত কমানোই অগ্রাধিকার। যাদবপুর মেইন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায়, শুক্রবার যারা নতুন করে গ্রেফতার হয়েছে, থানায় ঢোকার সময় তারা সংবাদমাধ্যমের দিকে অশালীন ইঙ্গিত করেছে। ঔদ্ধত্য কোন পর্যায়ে পৌঁছলে এই কাজ করা যায়। এদের অনাচারের হাত থেকে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের রক্ষা করতে হবে।”

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দলের ছাত্র সংগঠনের গুরু দায়িত্ব পেলেও ছাত্রমৃত্যুর বিচার তার কাছে অগ্রাধিকার পাবে বলেই জানিয়েছে রাজন্যা। তার কথায়, “সংগঠন বিস্তারের থেকে গুরুত্বপূর্ণ পড়ুয়া মৃত্যুর বিচার। সেই দাবিতে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ওই ছাত্রের পরিবারকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়া ও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে যাদবপুরের ক্যাম্পাসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের লড়াই আরও জোরদার হবে।”

 

Previous articleবাইক দুর্ঘ*টনার কবলে নে*শাগ্রস্ত নোবেল!
Next article২০ জুন বাদে অন্যদিন পালিত হোক ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’: চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সোমবার