Sunday, November 2, 2025

২০ জুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়নি, ১ বৈশাখই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’: বিধানসভায় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

Date:

২০জুন ১৯৪৭ পশ্চিমবঙ্গ প্রতিষ্ঠাই হয়নি। বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথমদিন, যেদিন মানুষ শুভদিন হিসেবে পালন করে, সেদিনই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে “বাংলার মাটি, বাংলার জল” রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব সমর্থন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই এই প্রস্তাব পাশ হয়ে বিধানসভায়। এদিন অধিবেশনে বিজেপি বিধায়করা বলেন, তাঁরা রাজ্যপালকে এই বিলে স্বাক্ষর করতে বাধা দেবেন। এর বিরোধিতায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাতেও কিছু যায় না। কারণ সরকার সেদিনই পালন করবে।

এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্র। এর বিরোধিতা করে রাজ্যপালের কাছে আবেদন করে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই বিষয়ে কর্ণপাত না করে বিজেপি কথা মেনে ২০ জুনই পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন হয় রাজভবনে। এদিন এই নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, গত ৭৫ বছরে ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবসের কথা শুনিনি। এবার কেন্দ্র নোটিফিকেশন জারি করলেই তার বিরোধিতা করি। রাজ্যপালের কাছেও আবেদন করি। কিন্তু তিনি কথা শোনেনি। এরপরেই হুঙ্কার দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিধানসভায় আনা প্রস্তাবে রাজ্যপাল স্বাক্ষর না করলেও ১ বৈশাখ দিনটিই ‘বাংলা দিবস’ হিসাবে পালন করা হবে। “কে কে সমর্থন করবে জানি না, কিন্তু আমাদের নির্দেশ থাকবে ওই দিনই বাংলা দিবস হিসাবে পালন করার।“ তিনি বলেন, “বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথমদিন, যেদিন মানুষ শুভদিন হিসেবে পালন করে, সেদিনই ‘বাংলা দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে।“

মুখ্যমন্ত্রীর আগে বক্তব্য রাখতে উঠে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেন, “এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করতে রাজ্যপালকে নিষেধ করব।” এর উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”বিরোধীরা বলেছে রাজ্যপালকে সই করতে দেব না। আমাদের কিচ্ছু যায় আসে না। রাজ্যপাল সই না করলেও সরকার ওই দিনই পালন করবে। দেখি কার জোর বেশি।”

কেন রাজ্যের জন্য বাংলা দিবস হবে? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অন্য রাজ্যগুলির প্রতিষ্ঠা দিবস উল্লেখ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি জানান, ২০জুন ১৯৪৭ পশ্চিমবঙ্গ প্রতিষ্ঠাই হয়নি। ওইদিন অবিভক্ত বাংলার বিধানসভায় একটা প্রস্তাব আসে। কিন্তু সেই প্রস্তাব ২ মাস কার্যকর হয়নি। এরপরেই বিজেপিরপ নাম না করে তীব্র আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “স্বাধীনতায় অংশ না নিয়েও অনেকে স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলছেন।” নাম না করে বিরোধী দল বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, যাদের সঙ্গে বাংলার মাটির কোনও যোগাযোগ নেই তারা কী করে বাংলার কথা বলবে! স্বাধীনতা দিবসে যাদের কোনও অবদান ছিল না, যারা জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর ঘাতককে সমর্থন তাদের থেকে ইতিহাস শিখব!

আরও পড়ুন:ইন্ডিয়া মুছে শুধুই ভারত নামে ‘না’, সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছিল মোদির সরকার

পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের ক্ষেত্রে হিংসা, দেশভাগের স্মৃতি মুছে দেওয়ার কোনও দিনকে বেছে নেওযা হয়। বিভিন্ন মহল থেকে নানা প্রস্তাব আসে। তার মধ্যে পয়লা বৈশাখ-কেই প্রায় ৯৯ শতাংশ সমর্থন আসে। একই সঙ্গে “বাংলার মাটি, বাংলার জল” রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবও পাশ হয়।

তাঁর ভাষণে এদিন রাজ্যের নাম বাংলা করার বিষয়েও বিরোধীদের তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পাকিস্তানেও পঞ্জাব প্রদেশ আছে, আবার ভারতেও আছে পঞ্জাব রাজ্য। সেক্ষেত্র কোনও অসুবিধা হয় না। অথচ বাংলাদেশ একটা দেশ আর বাংলা একটা রাজ্য- এই নিয়ে জলঘোলা করা হচ্ছে। অথচ WEST BENGAL নাম সবার পিছনে আসে বলেই রাজ্যের নাম বাংলা করার প্রস্তাব পাশ হয় বিধানসভায়। কিন্তু কেন্দ্রের কাছে তা এখনও পড়ে আছে।

১৬৭ – ৬২ ভোটে পাশ হয়ে গেল বাংলা দিবস ও রাজ্য সঙ্গীতের প্রস্তাব। এদিন অধিবেশেনের শেষে মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিধায়করা “বাংলার মাটি, বাংলার জল” গানটি গান।

 

 

Related articles

বৃষ্টি – দুর্যোগ কাটতেই দার্জিলিংয়ে ফের শুরু সরস মেলা 

ভারী বৃষ্টিতে ফের বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতল। শনিবার রাতের বৃষ্টিতে কালিম্পং জেলায় একাধিক স্থানে ধস নামে। বন্ধ...

শুভেন্দুর স্বাস্থ্য শিবিরে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা! নিরপেক্ষতা কোথায়? প্রশ্ন তৃণমূলের

জাতীয় মহিলা কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। অভিযোগ, বিজেপির নির্দেশ মেনে ও রাজনৈতিক স্বার্থে কাজ করছে...

SIR আবহে প্রকাশিত ‘আমি কী নাগরিক?’, বিজেপির পর্দাফাঁস ব্রাত্যর

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও বিশিষ্ট নাট্যকার ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) হাতে রবিবার প্রকাশিত হলো নাগরিকত্ব, দেশভাগ ও সাংবিধানিক অধিকার...

বেঙ্গালুরুতে সিগন্যাল ভেঙে ছুটল অ্যাম্বুল্যান্স, মৃত ২

বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) রাস্তায় সিগন্যাল ভেঙে ছুটল একটি অ্যাম্বুল্যান্স। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল ২ জনের। সামনে দাঁড়িয়ে...
Exit mobile version