“তৃণমূলের ভাঙিয়ে নেতা নয়কো সহজ ভোটে জেতা”, দলবদলু মিতালির বুথেও বিজেপির হার

একুশের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য-এর সেই বিখ্যাত 'খেলা হবে' স্লোগানের কয়েকটি লাইন ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের ফলাফলে ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

উপনির্বাচনের মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগে চমক দেখিয়ে শুক্রবার গণনার দিন মুখ থুবড়ে পড়ছে বিজেপি। ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে বিজেপির আসন ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির এই হারের পিছনে অনেকেই কাঠগড়ায় তুলছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

বিষয়টি ঠিক কী? ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে আদি বিজেপি নেতা তথা গেরুয়া শিবিরের প্রাক্তন জেলা সভাপতি দীপেন প্রামানিককে তৃণমূলে যোগদান করিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেককে টেক্কা দিতে গিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক মিতালি রায়কে যোগদান করিয়ে ছিলেন সুকান্ত মজুমদার। মিতালিকে দলে টানার জন্য কলকাঠি নেড়ে ছিলেন শুভেন্দু। মূলত শুভেন্দুর উদ্যোগ ও যোগাযোগেই মিতালি ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দেন। কিন্তু জেলা নেতৃত্বকে এড়িয়ে গিয়ে মিতালির যোগদান একেবারে ভালোভাবে নেয়নি স্থানীয় নেতৃত্ব। বিজেপির নিচুতলার কর্মীরাও এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ছিলেন।

প্রাক্তন বিধায়ককে দলে নিয়ে ভোটের আগে শাসকদলকে ‘ঝটকা’ দিতে চেয়েছিল পদ্মশিবির। কিন্তু এই যোগদান ঘিরে ভোটের ঠিক আগে বিজেপির শিবিরের অন্দরের ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়। রবিবারই মিতালির যোগদানের পর নীচুতলার বিজেপি কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ সামনে এসেছিল। গত, রবিবার রাতেই মিতালী রায়ের যোগদান নিয়ে দলের শীর্ষনেতাদের নেতাদের নিশানা করেন কোচবিহারের বিজেপির জেলা সম্পাদক অজয় সাহা। মিতালির যোগদানের পর তাঁর আক্ষেপ- “২০২১ থেকে বিজেপি এখনও পর্যন্ত কোনও শিক্ষাই নেয়নি।”

২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের অনেক নেতা-বিধায়ক যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। এ রকম দলত্যাগী অনেকেই বিধানসভা ভোটে পদ্মশিবিরের টিকিট পেয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বাংলা দখল সম্ভব হয়নি। বদলে ভোটের পর অনেকে আবার ফিরেছিলেন তৃণমূলে। মিতালি রায়ের যোগদানের পর এই বিষয়টির উল্লেখই নিজের ফেসবুক পোস্টে করেচিলরন কোচবিহারের জেলা সম্পাদক। নিজের ফেসবুক পোস্টে অজয় সাহা লিখেছেন, “তৃণমূলে গুরুত্ব না পেয়ে বিজেপিতে। ২০২১ থেকে বিজেপি এখনও পর্যন্ত কোনও শিক্ষাই নেয়নি। ২০২১এ বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী যে মিতালি রায়কে ধূপগুড়িবাসী প্রত্যাখ্যান করল এবং পরাজিত হল বিজেপির কাছে। ২০২৩ এ এসে সেই কি না বিজেপিকে জেতাবে?”

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূলের আইটি ও সোশ্যাল মিডিয়া সেলের প্রেসিডেন্ট তথা মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। শাসক দলের এই যুবনেতা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন। মনে করিয়ে দিয়েছেন, একুশের বিধানসভা ভোটের আগে তাঁর সেই বিখ্যাত ‘খেলা হবে’ স্লোগানের কয়েকটি লাইন। দেবাংশু লিখছেন, ‘শেষ মুহূর্তে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মিতালি রায়ের বুথের ফলাফল জানেন? Booth No: 203, AITC: 484,
BJP: 288, Lead: 196. এরপরই খেলা হবে স্লোগানের লাইন মনে করিয়ে দিয়ে দেবাংশু লেখেন, ‘তৃণমূলের ভাঙিয়ে নেতা নয়কো সহজ ভোটে জেতা; দিদির ছবি সরবে যবে বন্ধু সেদিন খেলা হবে!’

উল্লেখ্য, একুশের ভোটে বিজেপির জেতা ধূপগুড়ি আসন শেষমেশ উপনির্বাচনে ছিনিয়ে নিল তৃণমূল কংগ্রেস। গত বিধানসভা ভোটে এই ধূপগুড়ি আসনে তৃণমূলকে ১৩০০ ভোটে হারিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু তা ধরে রাখতে পারল না গেরুয়া শিবির। উপনির্বাচনে চার হাজারেরও বেশি ভোটে বিজেপির প্রার্থী তাপসী রায়কে হারালেন তৃণমূল প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়।

আরও পড়ুন:তিন ঘন্টা পর স্বাভাবিক মেট্রো পরিষেবা, অফিস টাইমে নাকাল নিত্যযাত্রীরা

 

 

 

 

 

 

Previous articleতিন ঘন্টা পর স্বাভাবিক মেট্রো পরিষেবা, অফিস টাইমে নাকাল নিত্যযাত্রীরা
Next articleকোয়েলিস বুটিকের অনন্য প্রদর্শনী, তুলে ধরা হয়েছে শিল্পকে