৮ কোটির আয়কর নোটিশ ডেলিভারি বয়কে! প্র.তারণা চক্রের পর্দাফাঁস পুলিশের

তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে এক অভিনব জালিয়াতির সন্ধান মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। ঘটনার জেরে বুধবার রাতেই সুরজিৎ দত্ত নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ডেলিভারি বয়ের (Delivery Boy) কাজ করে মাসে মেরেকেটে উপার্জন হয় ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু আয়কর বিভাগের (Income Tax Department) নোটিশ দেখেই এবার মাথায় হাত হাওড়ার (Howrah) চামরাইলের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা এক যুবকের। জানা গিয়েছে হাওড়ার বাসিন্দা ওই যুবকের নাম শৌভিক ঘোষ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি আয়কর বিভাগের পাঠানো বকেয়া কর জমা দেওয়ার নোটিশ পেয়ে চমকে গিয়েছেন শৌভিক। সেই নোটিশে তথ্য দিয়ে জানানো হয়, শৌভিক এমন একটি কোম্পানির মালিক যার বার্ষিক লেনদেন সাড়ে ৮ কোটি টাকারও বেশি। মুনাফার অঙ্ক ১৪ লক্ষ টাকা! পাশাপাশি কলকাতার আর্মেনিয়ান স্ট্রিটে ওই কোম্পানির দফতরের ঠিকানাও দেওয়া ছিল আয়কর বিভাগের নথিতে।

এরপরই আয়কর দফতরের নোটিশ পেয়ে টনক নড়ে শৌভিকের। এরপরই নিজের দায়িত্বে সেই কোম্পানির খোঁজ নিতে গিয়ে দেখে সেটি একেবারেই ভুয়ো। এরপর আয়কর বিভাগ, বিক্রয়কর বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয় লিলুয়া থানাতেও অভিযোগ জানান তিনি। আর সেই তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে এক অভিনব জালিয়াতির সন্ধান মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। ঘটনার জেরে বুধবার রাতেই সুরজিৎ দত্ত নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শৌভিকের দাবি, কয়েক মাস আগে তাঁর পরিচিত ভোলা ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে ‘ট্রেড লাইসেন্স’ করাতে দিয়েছিলেন তিনি। সেকারণে আধার, প্যান কার্ড, ব্যাঙ্কের কাগজপত্র-সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় নথিও দিয়েছিলেন। এরপরই তাঁর অজান্তে সেই নথি ব্যবহার করে অভিযুক্ত ব্যক্তি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন শৌভিক। তিনি অভিযোগপত্রে লিখেছেন, আমার নথি ব্যবহার করে ‘শিব ট্রেডিং কোম্পানি’ নামে একটি সংস্থা খোলা হয়েছিল। পরে ট্রেড লাইসেন্স করানোর জন্য আমি এক অ্যাকাউন্ট্যান্টের সঙ্গে কথা বলি। তিনিই এ বিষয়ে আমাকে জানান।

এদিকে হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (নর্থ) অনুপম সিংহ বৃহস্পতিবার জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক ব্যক্তি লিলুয়া থানায় অভিযোগ করেন। তিনি জানান, নতুন একটি কোম্পানি খোলার জন্য বৈধ কাগজপত্র বানাতে গিয়ে দেখেন যে তাঁর প্যান কার্ড, আধার কার্ড ব্যবহার করে তাঁর অপরিচিত এক ব্যক্তি অন্য একটি কোম্পানি খুলেছেন। ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর কোনও পরিচয় নেই। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম সুরজিৎ দত্ত। তিনি নিজেকে ‘চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট’ পরিচয় দিয়ে কোম্পানি খুলেছেন। তবে সেই কোম্পানি আদতে ভুয়ো। এরপরই বুধবার রাতে লিলুয়া থানার পুলিশ সুরজিৎকে গ্রেফতার করে। তবে কোন উদ্দেশ্যে অন্যের পরিচয়পত্র দিয়ে ভুয়ো কোম্পানি এবং অ্যাকাউন্ট খোলা হল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি কত টাকা লেনদেন হয়েছে এবং কেন হয়েছে, এর পিছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে, সব কিছু তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

 

 

 

 

Previous articleফিফা র‍্যাঙ্কিং-এ শীর্ষে মেসির দেশ, ১০০ বাইরে টিম ইন্ডিয়া
Next articleফিল্ম ফেস্টিভালে প্রথম সুযোগ পেতেই দর্শক মন জয় করল ‘দেবাংশী প্রোডাকশন হাউজ’ নির্মিত ছবি ‘ছায়া’