Saturday, November 8, 2025

২১৩ বছরেও কাদা খেলার মাটি দিয়ে ময়নাগুড়ির বসুনিয়া বাড়ির দুর্গা প্রতিমা তৈরি হয়!

Date:

Share post:

পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে । যদিও ময়নাগুড়িতে দিন দশেক আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে সলতে পাকানোর পর্ব। জানলে অবাক হবেন, প্রতিবছর জন্মাষ্টমীর দিন কাদা খেলার মধ্য দিয়ে ময়নাগুড়ির আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বসুনিয়া বাড়ির দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয়। ময়নাগুড়ির বসুনিয়া বাড়ির পুজো এ বছর ২১৩ বছরে পদার্পণ করল। ঐতিহাসিক এই পুজো কোচবিহারের রাজা প্রাণনারায়ন শুরু করেছিলেন। বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন দীপু বসুনিয়া।

 

ময়নাগুড়িতে প্রাচীন দুর্গাপুজো হিসেবে পরিচিত বসুনিয়া বাড়ির দুর্গাপুজো। জানা গিয়েছে, বসুনিয়া বাড়ির পূর্বপুরুষ ধনবর বসুনিয়া কোচবিহারের রাজবাড়িতে হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন। আজ থেকে ২১৩ বছর আগে কোচবিহারের রাজা প্রাণ নারায়ণ বাংলাদেশ থেকে প্রতিমা নিয়ে কোচবিহারের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। তিনি যখন চাপগর এলাকায় তার সেনাপতির গড়ে বিশ্রামের জন্য আসেন সে সময় অবিরাম ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। প্রতিমা নিয়ে কোচবিহারে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। তিনি তার সৈন্যদের রাজবাড়িতে পাঠান এবং বলেন প্রতিমা নিয়ে আসা সম্ভব নয়। এরপর রাজা তার হিসেবরক্ষক ধনবর বসুনিয়ার বাড়িতে মূর্তি পুজো করেন। সেই সময় থেকেই এই পুজা শুরু হয়। কথিত আছে, সেই সময় বসুনিয়া বাড়িতে প্রতিমা দিয়ে পুজো হলেও রাজ বাড়িতে ঘট পুজো হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, বর্তমানে বসুনিয়া বাড়ির প্রতিমা গড়েন সীমান্ত রায়। তিনি গত ১০বছর ধরে মূর্তি তৈরি করছেন। এর আগে তার পূর্বপুরুষেরা মূর্তি তৈরি করতেন। বসুনিয়া বাড়ির প্রতিমা অন্যান্য প্রতিমার থেকে আলাদা। এখানে দেবী দুর্গা রাজবংশী বধূর সাজে আসেন। সাধারণ ঘরের মেয়েদের মতোই সাজানো হয় দেবী দূর্গাকে।
এক সময় এই পুজো উপলক্ষে বসুনিয়া বাড়িতে পালাটিয়া গান, কুশাণ গান হতো। তবে এখনো এই পুজোয় প্রচুর আনন্দ করেন এলাকার মানুষ। অসম, নেপাল, কোচবিহার থেকেও প্রচুর বিদ্বজনেরা পুজোর সময় বসুনিয়া বাড়িতে আসেন। এখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সুনীল বসুনিয়া বলেন, আমাদের এই পুজো বহু পুরাতন পুজো হিসেবে পরিচিত। আমাদের আমগুড়ি এলাকায় প্রচুর লোকজন আমাদের বাড়ির পুজোর জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে। প্রতিবছর কাদা খেলার যে মাটি সেই মাটি দিয়েই দেবীর মূর্তি তৈরি হয়। অত্যন্ত নিয়ম নিষ্ঠার সাথে আমাদের এই পুজো হয়। পুজোর সময় আমাদের সমস্ত আত্মীয় পরিজনেরা একত্রিত হই। আমাদের মূর্তি গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের এই পুজোর সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে।

আরও পড়ুন:অপহৃ.ত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী ছাত্র! শুরু পুলিশি তদন্ত

spot_img

Related articles

আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা, অনুশীলনই বন্ধ রাখল মোহনবাগান

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে মোহনবাগানের(Mohun Bagan) সিনিয়র দলের অনুশীলন। খবর অনুযায়ী, আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা। টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয়...

জন্মদিনে মানুষের ভালবাসা মনে করিয়ে দেয় কর্তব্য: ভিড়ে মিশে গেলেন অভিষেক

সকাল হওয়ার অপেক্ষা নয়। রাত ১২টা বাজার অপেক্ষায় ছিল বাংলার বিপুল জনতা। জননেতা, তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক...

ফলপ্রকাশ SSC একাদশ-দ্বাদশের: ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ, দাবি ব্রাত্যর

বাংলায় কর্মসংস্থানে সদা সচেষ্ট প্রশাসন ও প্রশাসনের সব দফতর। ফের একবার তার প্রমাণ মিলল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এসএসসি-র...

দুর্নীতির অভিযোগ তোলা চিকিৎসকই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত! সাসপেন্ড আখতার আলি

আরজিকরের চিকিৎসক তরণীর ধর্ষণ খুনের ঘটনার মধ্যেই আর্থিক দুর্নীতি ঘিরে শোরগোল শুরু হয় আর জি কর হাসপাতালে। গ্রেফতার...