অভিষেককে সামলাতে প্রথমদিনই হিমশিম ৩ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী! ‘নৈতিক জয়’ দেখছে তৃণমূল

বাংলার বকেয়া আদায়ে গিয়ে দিল্লি কাঁপাবে তৃণমূল। আগেই জানিয়েছিলেন শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার প্রথমদিনের কর্মসূচিতেই নাভিশ্বাস বিজেপি নেতৃত্বের। তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের প্রথমদিনের কর্মসূচি সামলাতেই হিমশিম খেলেন ৩ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। একই দিনে তিন তিনটে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার মরিয়া চেষ্টা করলেন গিরিরাজ সিং, অনুরাগ ঠাকুর এবং সুভাষ সরকাররা। গেরুয়া শিবিরের এই দশায় নৈতিক জয় দেখছে তৃণমূল।

এদিন বিজেপির তিনটি সাংবাদিক বৈঠকের দুটি হয় দিল্লিতে, একটি বিহারে। তৃণমূলের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)-সহ অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্বকে রাজঘাটে চূড়ান্ত বিরক্ত করে দিল্লি পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর সেই চ্যালেঞ্জে এবং রাজধানীর বুকে তৃণমূলের সত্যাগ্রহে পায়ের তলার মাটি কেঁপে যায় বিজেপির। তৃণমূলের কর্মসূচি যে বিশাল আকার নেবে সেই আঁচ পেয়ে আগেভাগেই দিল্লি উড়ে যান বাংলার বিজেপি (BJP) সাংসদরা। সংবাদ দুপুরে দিল্লিতে বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ও হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করেন। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ বন্ধ করার জন্য হিসাবে দুর্নীতিকেই দায়ী করেন বিজেপি নেতৃত্ব।

এরপর দুপুরে বিহারে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন এবং পঞ্চায়েতিরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিং কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করার সময় এসে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এর উত্তর দেন অভিষেক তিনি বলেন সিবিআই তদন্ত হোক তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু আজ পর্যন্ত যত সিবিআই তদন্ত হয়েছে তার বেশিরভাগই নিট ফল শূন্য।

বিকেলে তৃতীয় সাংবাদিক করেন আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে দোতলা-তিনতলা বাড়ির মালিকদের প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার টাকা দেওয়া হয়েছে।’’ প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কেন্দ্রীয় দল এসে পরিদর্শনের পর কীভাবে বাংলাকে ক্লিনচিট দিল? কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথার থেকে নিয়োগ প্রতিনিধি দলের কথা একেবারেই মিলছে না।

বিজেপি (BJP) নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের এইভাবে ময়দানে নেমে পড়া নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। দিল্লিতে তিনি বলেন, ‘‘এটাই তৃণমূলের সাফল্য। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস বাংলার দাবিতে দিল্লি কাঁপিয়ে দিচ্ছে, আর বিজেপি নেতাদের দিল্লি উড়ে আসতে হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের নিয়ে বাংলার দিল্লি অভিযান সর্বভারতীয় রাজনীতিতে গভীর ছাপ ফেলেছে। বিজেপি কোণঠাসা হচ্ছে। তাই বাংলার অপদার্থ বিজেপি নেতাদের দিল্লি উড়িয়ে এনে ভুল, মিথ্যা বিবৃতি দেওয়াতে হচ্ছে।’’

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই বোঝা যাচ্ছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপি ভয় পেয়েছে। অভিষেককে ডেকে পাঠানো, ট্রেন না দেওয়া, বিমান বাতিল করা, রামলীলা ময়দানে অনুমতি না দেওয়া, গিরিরাজ সিংয়ের অ্যাপয়েন্টমেন্ট না দেওয়া থেকে বোঝা যাচ্ছে তারা ভয় পেয়েছে। এটা অবশ্যই আমাদের নৈতিক জয়।’’

Previous article‘অর্থের অপচয়’! জব কার্ড হোল্ডারদের সেন্ট্রাল ভিস্তা ঘুরিয়ে দেখাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা
Next articleগুরুতর অভিযোগ স্বপ্নার, জবাব নন্দিনীর