টার্গেট ৪ লাখ: ২০২৪-এর ডায়মন্ড হারবারে জয়ের ব্যবধান বেঁধে দিলেন অভিষেক

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজ কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের টার্গেট বেঁধে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডায়মন্ড হারবারের সরিষা ও মশাট খাজেরপোলে বস্ত্র বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের ‘ডঙ্কা’ বাজিয়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অতীতের নির্বাচনী রিপোর্ট তুলে ধরে নিজের কেন্দ্রের মানুষের কাছে আবেদন জানালেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ছিল ৩ লক্ষ ২১ হাজার। ২০২৪ সালে সেই ব্যবধান ৪ লক্ষ পার করতে হবে। আপনাদের কাছে এটাই আমার চাওয়া।

সোমবার ডায়মন্ড হারবারে বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২০২১ সালের নির্বাচনের আগে ওরা বলেছিল অভিষেকের অফিসে তালা পড়ে যাবে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ১ মাস ডায়মন্ড হারবারে পড়ে ছিল। মোদি এসে বলেছিল অভিষেক হারছে। তবে আপনারা বিজেপির বাড়া ভাতে ছাই দিয়ে ২০১৪ সালে ৭১ হাজারে জিতিয়েছিলেন এবং ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলাম আমি। সংখ্যাটা ছিল ৭ লক্ষ ৯৪ হাজার। রাজ্যের ৪২ টা লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে যা ছিল রেকর্ড। মার্জিনের হিসেবে ৩ লক্ষ ২১ হাজার ভোটের ব্যবধানে আপনারা আমায় জিতিয়েছিলেন। আমি সেদিন কথা দিয়েছিলাম। ভোটের নিরিখে আপনারা আমায় প্রথম করেছেন কাজের নিরিখেও ডায়মন্ডকে প্রথম করব। আমরা যে কাজ করেছি প্রতি বছর তাঁর খতিয়ান প্রকাশ করেছি।” সাংসদ হিসেবে নিজের কাজের খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি অভিষেক বলেন, “যারা নির্বাচনের সময় এসে বড় বড় ভাষণ দিয়েছিল ২০২১ সালের পর এতগুলো বছরে তাঁদের কোনও টিকি দেখা যায়নি। তাই বলেছিলাম বহিরাগত আসে যায় বাংলা নিজের মেয়েকে চায়। ২০২১ সালে ওরা চেয়েছিল মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে পদ্ম ফোটাতে। ২০১৯ সালে আপনারা বিধানসভার নিরিখে বিরোধীদের ৭-০ করেছেন। ২০২১ সালেও একইভাবে ৭-০ হয়েছে। ২০২৪ সালে ৩ লক্ষ ২১ হাজার ভোটের ব্যবধান বড়িয়ে ৪ লক্ষ করতে হবে। এটা আপনাদের কাছে আমার চাওয়া। আমার যা দরকার আমি আপনাদের কাছে চাইব, আপনাদের যা প্রয়োজন আপনারা আমায় বলবেন আমি সাধ্যমত তা আপনাদের কাছে পৌঁছে দেব।”

এর পাশাপাশি নিজের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে অভিষেক বলেন, “করোনার সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কমিউনিটি কিচেনের মাধ্যমে খাবার দিয়েছি আমরা, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় ১ দিনে ৫০ হাজার টেস্ট করে দেশের মধ্যে নজির গড়েছিল ডায়মন্ড হারবার। ১২ শতাংশ পজেটিভিটি রেট ৭ দিনে ২ শতাংশের নামিয়ে আনি। ডায়মন্ড হারবার মডেল সারা ভারতে দৃষ্টান্ত গড়েছিল। অথচ ২০২১ সালে এরা বাংলার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে ৮ দফায় নির্বাচন করেছিল। শুধুমাত্র ডায়মন্ড হারবারে ৩ দফায় নির্বাচন করেছিল। ওরা চেয়েছিল মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে পদ্ম ফোটাতে। কিন্তু ওদের বাড়াভাতে আপনারা ছাই দিয়েছেন। ডায়মন্ডের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক মাঝে কোনও দেওয়াল নেই। ২০২২ সালে একডাকে অভিষেক চালু করেছি। কথাও কোনও সমস্যা থাকলে আমাকে জানান।” এর পাশাপাশি সিপিএমকে আক্রমণ শানিয়ে অভিষেক বলেন, “৯ বছর আগে যখন এখানে প্রথম প্রচারে এসেছিলাম জায়গায় জায়গায় গিয়ে মানুষের দুর্দশা দেখেছিলাম। এখানে সিপিএম দীর্ঘ ৪০ বছর ছিল ২০০৯ সাল পর্যন্ত। কোনও কাজ করেনি। আমরা আসার পর ৯ বছরে ৩০০০ কোটি টাকার বেশি রাস্তার কাজ হয়েছে, ১৪০০ কোটি টাকা খরচ করে দেশের সর্ব বৃহৎ জল প্রকল্প হচ্ছে, মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, আইআইটি হয়েছে। এখানকার সার্বিক উন্নয়নে আমি সর্বদা আপনাদের পাশে।” বাংলার বকেয়া টাকা আদায়েও এদিন কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ করেন অভিষেক। বলেন, “কেন্দ্রের বৈমাতৃসুলভ আচরণের বিরুদ্ধে দিল্লিতে আন্দোলন করেছিলাম। তবে যেটুকু হয়েছে সেটা ট্রেলার আসল সিনেমা শুরু হবে ১ নভেম্বর থেকে। আপনাদের আমি জানাচ্ছি, ৬ মাস সময় দিন আপনার টাকা আমরা ফেরত আনব, যদি আনতে না পারি তবে আমাদের সরকার আপনাদের পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করবে।”

Previous articleমুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে রোনাল্ডিনহো: উত্তরীয় দিয়ে বরণ মমতার, জার্সি উপহার ফুটবল তারকার
Next articleভারতীয় সমর্থকদের ভালোবাসায় মন কেড়েছে আফগান ক্রিকেটারদের, ম‍্যাচ শেষে বিশেষ বার্তা রশিদ-গুরবাজদের