অন্ধ্রপ্রদেশে দু.র্ঘটনার জের! ৯০ ঘণ্টা পেরলেও কলকাতায় পৌঁছতেই পারল না ট্রেন, চ.রম ক্ষু.ব্ধ যাত্রীরা  

তবে যত সময় যাচ্ছে, ততই রেলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন যাত্রীরা। তবে এদিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতীক কটাক্ষ করে বলেন, যেভাবে ট্রেন যাচ্ছে, তাতে ২২৬৪১ তিরুবনন্তপুরম সেন্ট্রাল-শালিমার এক্সপ্রেস গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে।

অন্ধ্রপ্রদেশে (Andhra Pradesh) ট্রেন দুর্ঘটনার (Train Accident) জের। যার জেরে এখনও বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা (Rail Service Disrupted)। যার শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। জানা গিয়েছে, ঘটনার জেরে এখনও স্থগিত ও বাতিল একাধিক ট্রেন। আর যেসব ট্রেন ছাড়া হচ্ছে সেইসব ট্রেন গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছতে লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ সময়। এমন ঘটনার জেরে স্বাভাবিকভাবেই চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা। এবার চরম সমস্যার মুখে ২২৬৪১ টিভিসি তিরুবনন্তপুরম সেন্ট্রাল-শালিমার সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে (Thiruvananthapuram Central – Shalimar SF Express) আটকে থাকা যাত্রীরা। আর ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতেই সামনে এল ভয়াবহ ছবি। দীর্ঘ ৯০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও তিরুবনন্তপুরম থেকে শালিমারে পৌঁছতে পারেনি রেল। এরমধ্যেই ট্রেনে দেড় বছরের এক ক্ষুদের অবস্থা খুব খারাপ, এক সাড়ে চার বছরের ছেলের ১০২ ডিগ্রি জ্বর, পাশের কামরার এক বৃদ্ধ মাঝেমাঝেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। বর্তমানে এমনই অবস্থা ওই ট্রেনের যাত্রীদের।

ওই ট্রেনেই রয়েছেন কলকাতার বাসিন্দা প্রতীক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবার। কারণ তাঁরা যে ট্রেনে আছেন, সোমবার বেলা ১২ টা নাগাদ শালিমারে পৌঁছানোর কথা থাকলেও সেটি এখনও পশ্চিমবঙ্গের সীমানায় প্রবেশ করতেই পারেননি। এমনকি কখন ট্রেনটি শালিমারে পৌঁছবে, সেটাও জানেন না কেউ। তবে যত সময় যাচ্ছে, ততই রেলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন যাত্রীরা। তবে এদিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতীক কটাক্ষ করে বলেন, যেভাবে ট্রেন যাচ্ছে, তাতে ২২৬৪১ তিরুবনন্তপুরম সেন্ট্রাল-শালিমার এক্সপ্রেস গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে। দেড় দিনের ট্রেনযাত্রা এখন সাড়ে ৪ দিন পেরতে চলল। ৭৭ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এক কামরায় আটকে তাঁরা। তবে শনিবার তিরুবনন্তপুরম থেকে ট্রেন বিকেল ৫টায় ছাড়লেও সোমবার দুপুরে শালিমারে পৌছনোর কথা ছিল ট্রেনটির। তবে তারপর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি বলে খবর। তবে কলকাতার বাসিন্দা প্রতীক আরও জানিয়েছেন, তবুও আমরা এসিতে আছি বলে বাঁচোয়া। কিন্তু যাঁরা নন এসি-তে রয়েছেন তাঁরা কেমন আছেন জানি না।

তবে এখানেই শেষ নয়, প্রতীক এদিন আরও জানিয়েছেন তিনি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে সকলে ভেবেছিলেন যে সিগন্যাল পায়নি বলে ট্রেন দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু যত সময় গড়াতে থাকে, তত বিষয়টা স্পষ্ট হতে থাকে। রাত ১২টা নাগাদ জানানো হয় যে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজিয়ানগরমে দুই প্যাসেঞ্জার ট্রেনের সংঘর্ষের কারণে তাঁদের ট্রেনের যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। বিজয়ওয়াড়া-নাগপুর দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ফের পিছন দিকে যেতে শুরু করে ট্রেন। আর তখন থেকেই শুরু হয় ভোগান্তি। প্রতীক এদিন আরও জানান, প্রথমে বলা হয়েছিল যে মঙ্গলবার আমরা কলকাতায় পৌঁছে যাব। কিন্তু তা হল না। এদিকে বুধবার বেলা গড়িয়ে বিকেল হতে চললেও এখন ট্রেনটি ঝাড়গ্রাম সীমান্তে রয়েছে। ঝাড়গ্রাম সীমান্ত পেরিয়ে সেটি কখন বাংলায় কখন ঢুকতে পারবে, তা এখনও জানা যায়নি। অন্যদিকে, ট্রেনে থাকা যাত্রীরা আরও জানিয়েছেন, তবে এসবের মধ্যে একটাই রেহাই যে প্যান্ট্রিকারে খাবার মিলছে। এসিও চলছে। তবে সেটা অবশ্য কতক্ষণ মিলবে, তা জানেন না প্রতীকদের মতো বাকি যাত্রীরাও। উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর ০৮৫৩২ বিশাখাপত্তনম-পালাসা প্যাসেঞ্জার ট্রেন এবং ০৮৫০৪ বিশাখাপত্তনম-রায়গাড়া প্যাসেঞ্জার স্পেশ্যাল ট্রেনের সংঘর্ষের ফলেই ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ঘটনার পিছনে চালকের গাফিলতিকেই কাঠগড়ায় তুলেছে রেল। ইতিমধ্যে রেল দুর্ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। আহতও প্রায় শতাধিক।

Previous articleহ্যাকিং সতর্কবার্তা: এবার অ্যাপেলকে তলব করার পথে সংসদীয় কমিটি
Next articleশহরের বুকে ফের যাদবপুরে ছায়া! সিনিয়রদের বিরু.দ্ধে অভি.যোগ আক্রা.ন্ত পড়ুয়ার