সেই ১৯৯৬ সাল, ওই একবারই ওয়ানডের বিশ্বকাপ জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। এরপর কেটে গেছে লম্বা সময়। কিন্তু আর ঘরে তুলতে পারেনি তারা বিশ্ব সেরা মুকুট। এবার তো তাদের পারফরম্যান্স বেশ বাজে। সেমিফাইনালে খেলার দৌড় থেকে প্রায় ছিটকে পড়েছে দলটি।
বিশ্বকাপে খারাপ খেলেছে দল। শুধু খারাপ খেলা নয়, ভারতের কাছে ৩০২ রানের লজ্জার হার হয়েছে তাদের। এই হার মেনে নিতে পারেনি শ্রীলঙ্কা সরকার। ভারতের কাছে দুরমুশ হওয়ার জন্য পুরো ক্রিকেট বোর্ডকেই বরখাস্ত করে দিয়েছে তারা। শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী রোশন রনসিংহে সোমবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে। ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে প্রধান করে এসএলসির ৭ সদস্যের পরিচালনা কমিটি করা হয়েছে। দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৯৭৩ সালে প্রণীত শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া আইনের অধীন মন্ত্রী এই কমিটি নিয়োগ দিয়েছেন।
বিশ্বকাপের আগে থেকে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একের পর এক অভিযোগ উঠেছিল। তার পরেও বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে সেই কমিটিকে দায়িত্বে রেখে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বকাপে দলের এই পারফরমেন্স মেনে নিতে পারেননি ক্রীড়ামন্ত্রী। তাই কড়া পদক্ষেপ করেছেন তিনি।
ভারতের কাছে ৩০২ রানে হারার পরেই পুরো বোর্ডকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন রনসিংহে। প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ারই নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। রনসিংহে বলেছিলেন, ‘‘ওরা দুর্নীতি ছাড়া কিছু বোঝে না। দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ওদের উচিত পদত্যাগ করা। শ্রীলঙ্কাবাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত ওদের।’’ গত শনিবার থেকে শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল বার করেছে ক্ষুব্ধ জনতা। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের দফতরের বাইরেও বিক্ষোভ দেখিয়েছে তারা।
রনসিংহের বার্তার পরে রবিবার বোর্ডের এক কর্তা মোহন ডি’সিলভা পদত্যাগ করেন। কিন্তু বাকিরা কোনও পদক্ষেপ করেননি। ফলে নিজেই সিদ্ধান্ত নেন ক্রীড়ামন্ত্রী। এমন একটি দিনে তিনি এই পদক্ষেপ করলেন যে দিন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে শ্রীলঙ্কা। খাতায়-কলমে টিকে থাকলেও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়া শ্রীলঙ্কার কাছে প্রায় অসম্ভব। এখন দেখার দেশের বোর্ডে এই ডামাডোলের প্রভাব দলের খেলায় পড়ে কি না।
জানা গিয়েছে, নতুন কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট উপালি ধর্মদাসা, অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এস আই ইমাম, রোহিণী মারাসিংহে ও ইরাঙ্গানি পেরেরা, আইনজীবী রাকিথা রাজাপক্ষে এবং ব্যাবসায়ী হিশাম জামালদিন।