সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় (১৯২০-২০১০) এদিন প্রয়াত হন। তিনি সাদা, তিনি কালো। তিনি মন্দ, তিনি ভাল। আর এর সবটাই খোলা খাতা বা স্বচ্ছ আয়নায় প্রতিফলিত। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় এমনই এক বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। রাজনীতি, কূটনীতি, প্রশাসন, ক্রীড়াঙ্গন, এমনকী বংশগৌরব- সব ক্ষেত্রেই তাঁর ওজন ও প্রভাব তাঁকে স্বাতন্ত্র্যে বিশিষ্ট করেছে। ১৯৭২-৭৭ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। মূল স্রোত থেকে সরিয়ে রাজীব গান্ধী তাঁকে অশান্ত পঞ্জাবের রাজ্যপাল করার সিদ্ধান্ত নেন। সাড়ে তিন বছর রাজ্যপাল ছিলেন তিনি, ১৯৮৯ পর্যন্ত। রাজীবের মৃত্যুর পরে নরসিংহ রাও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অল্প দিনের মধ্যেই ফের রাজনীতি থেকে সরে যেতে হয় সিদ্ধার্থশঙ্করকে। এবার তিনি আমেরিকায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। ১৯৯৬ পর্যন্ত প্রায় চার বছর আমেরিকায় কাটিয়ে দেশে ফিরলেও প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব থেকেই যায়। ১৯৯১-এ রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন এবং রাজ্যে উত্থান। কলকাতার অধুনালুপ্ত চৌরঙ্গি কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জিতে বিধানসভায় বিরোধী নেতা হন।
১৯৮৫ সঞ্জীবকুমার (১৯৩৮-১৯৮৫) এদিন প্রয়াত হন। আসলে তিনি হরিহর জেটালাল জরিওয়ালা। গুজরাতের সুরাতে ১৯৩৮ সালে ৯ জুলাই জন্ম হয় তাঁর। পরে মুম্বইয়ে সপরিবার চলে আসেন তিনি। যদিও আসল নামে তাঁকে কোনওদিনই চেনেনি বলিউড। বরং তাঁর ছদ্মনামেই এসেছে জনপ্রিয়তার ঢেউ। মঞ্চে তাঁর নজরকাড়া অভিনয় থেকেই বলিউডে ‘হম হিন্দুস্থানি’ ছবিতে ডাক পান এই অভিনেতা। ১৯৬০-এ মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে খুব ছোট চরিত্রে অভিনয় করলেও দর্শকদের মন জেতেন তিনি। ‘সীতা অউর গীতা’, ‘রাজা আউর রাঙ্ক’, ‘আপ কি কসম’ ‘ত্রিশূল’, ‘রাম তেরে কিতনে নাম’, ‘খিলোনা’, ‘ইয়ে হ্যায় জিন্দেগি’, ‘চরিত্রহীন’, ‘অঙ্গারে’, ‘গৃহপ্রবেশ’ বা ‘আঁধি’-সহ নানা ছবিতে সঞ্জীব অনবদ্য। কেবল হিন্দি নয়, তামিল থেকে হিন্দিতে ডাবিং হওয়া নানা ছবিতেও সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেন সঞ্জীব। হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় নির্দেশিত ‘অর্জুন পণ্ডিত’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কারও লাভ করেন। ‘শোলে’ ছবিতে ‘ঠাকুর বলদেও সিংহ’-এর চরিত্রে সঞ্জীব কুমারের অভিনয় কে-ই বা ভুলতে পারে !
১৯৭০ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় (১৯১৮-১৯৭০) এদিন প্রয়াত হন। খ্যাতকীর্তি সাহিত্যিক ও অধ্যাপক । বাবার দেওয়া নাম অবশ্য ছিল তারকনাথ, লেখালিখির সময় করে নেন নারায়ণ। কবিতা দিয়ে সাহিত্যজীবন শুরু হলেও গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ নাটক গান কিশোরপাঠ্য রচনা সবেতেই সিদ্ধহস্ত ছিলেন তিনি। ‘টেনিদা’ তাঁর অবিস্মরণীয় সৃষ্টি। সাগরময় ঘোষের অনুরোধে ‘দেশ’ পত্রিকায় ১৯৬৩-‘৭০ লেখেন ‘সুনন্দর জার্নাল’ নামে রম্যরচনা। অথচ আনন্দ পুরস্কার ছাড়া অপর কোনও সাহিত্য পুরস্কারই তিনি পাননি।
১৯৩৪ অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯৩৪- ২০১৯) এদিন জন্ম হয় সাবেক পূর্ববঙ্গে, নারায়ণগঞ্জের কাছে রাইনাদি গ্রামে। দেশভাগের পরে সর্বস্ব খুইয়ে কলকাতায় শূন্য থেকে শুরু করা। জাহাজের স্টোকার থেকে শুরু করে নানা চাকরি করেছেন। নানা দেশ দেখেছেন। তাঁর লেখায় সে-সব অভিজ্ঞতা গভীর অনুভবের মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে। আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত ৫০টি গল্প – সংকলনের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন অতীনবাবু। এ ছাড়াও নানা স্বীকৃতি এসেছে লেখক-জীবনে। ওঁর শেষ উপন্যাস ‘পরমেশ্বরী’ও স্মৃতিকথামূলক।
১৯২৬ হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯২৬-২০১৩) এদিন অধুনা বাংলাদেশের কুষ্ঠিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলজীবন শুরু সেইখানেই, ছাত্রজীবন শেষ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কর্মজীবন শুরু গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিতে। পরে একটি জীবনবিমা কোম্পানিতে যোগ দেন। ১৯৪৮-এ অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ‘দেবদূত’ দিয়েই চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ তাঁর। মঞ্চশিল্পী হিসাবেও তিনি যথেষ্ট খ্যাত ছিলেন। উৎপল দত্তের ‘ফেরারি ফৌজ’ নাটকে তাঁর অভিনয় সাড়া ফেলে দিয়েছিল। শেষ দু’টি ফেলুদার ছবিতে তিনি ছিলেন ‘সিধু জ্যাঠা’। সত্যজিৎ রায়ের ‘কাপুরুষ ও মহাপুরুষ’ হোক বা ‘শাখাপ্রশাখা’, ‘সোনার কেল্লা’ থেকে ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’, ‘সীমাবদ্ধ’-সহ বেশির ভাগ ছবিতেই হারাধনবাবুর অভিনয় নজর কেড়েছে আপামর বাঙালির। ২০০৫ সালে শ্রেষ্ঠ সহকারী অভিনেতা হিসাবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১১-য় পেয়েছেন বঙ্গবিভূষণ সম্মান।
আরও পড়ুন:ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ চলাকালীন বে.টিং! শহরে গ্রে.ফতার ৫