ইজরায়েলে হামাসের হামলার প্রতিঘাতে চারিদিক থেকে অবরুদ্ধ করে লাগাতার হামলা চলছে গাজায়। সোমবার এই অসম যুদ্ধের এক মাস পূর্ণ হয়েছে। গত এক মাসে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। এরই মাঝে ইজরায়েল সেনার তরফে জানানো হয়েছে, ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দ্বিখণ্ডিত করে দেওয়া হয়েছে গাজাকে। এখন গাজা উত্তর-দক্ষিণে বিভক্ত। রাতের অন্ধকারে উত্তর গাজায় শক্তিশালী বিস্ফোরণে খবর মিলেছে।

ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দুই ভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে গাজাকে। অখণ্ড গাজা আর নেই, উত্তর দক্ষিণে ভাগ হয়ে গিয়েছে, উল্লেখ করা হয়েছে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে। ইজরায়েলি মিডিয়ার দাবি, সেনারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই গাজার শহর দখল করে নেবে। অন্যদিকে, ইজরায়েলের এক সামরিক মুখপাত্র CNN-কে বলেছেন, সাধারণ নাগরিকরা যাতে নিরাপদে দক্ষিণ দিকে যেতে পারে তার জন্য সেফ করিডর তৈরি করতে পরপর দুই দিন উত্তর গাজায় কয়েক ঘণ্টা গুলিবর্ষণ বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে গাজায় তল্লাশি অভিযান চলাকালীন ইজরায়েল সেনা হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্যালেস্তানি প্রতিবাদী আহেদ তামিমি। ইজরায়েল সেনার দাবি, সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।

অন্যদিকে শনিবার রাতে গাজায় মাঘাজি শরণার্থী শিবিরের ইজরায়েলি সেনা বোমা বর্ষণ করে বলে অভিযোগ। আর তাতেই মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশ মহিলা ও শিশু বলে জানা গিয়েছে। শনিবার রাত থেকে লাগাতার গাজায় বোমাবর্ষণ হয়েছে বলে খবর। কার্যত ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে দু’টি বহুতল। শুধু বোমা বা রকেট বর্ষণই নয়, গাজায় হামাসের মুখোমুখি সংঘর্ষও চলছে বলে জানানো হয়েছে। গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণে ওয়াদি গাজার দিকে সরে যেতে বলা হয়েছে বাসিন্দাদের। আর তার জন্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে চার ঘণ্টার সময়সীমা। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত সময় গাজার বাসিন্দাদের সময় দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে সকলকে এলাকা খালি করে চলে যেতে বলা হয়েছে।
গত ৩০ দিন ধরে চলতে থাকা এই যুদ্ধে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। প্রথম দিন হামাসের হামলায় ১৪০০ ইজরায়েলি নাগরিকের মৃত্যু হয়। এরপর পাল্টা হামলায় এখনো পর্যন্ত গাজায় মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৭০০ জনের। এটাই শেষ নয়, রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে এই যুদ্ধে গাজায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৮৮ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। একক যুদ্ধে এখনো পর্যন্ত যা সর্বোচ্চ।রবিবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে, প্রাণ হারানো ৮৮ জনই রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্যালেস্টাইন শরণার্থীবিষয়ক সংস্থায় (ইউএনআরডব্লিউএ) কাজ করতেন।
