বিজেপি VS বিজেপি: অনুপমের উপর গোঁ.সায় খয়রাশোলে ভা.ঙল মঞ্চ, সার্কাস ক.টাক্ষ কুণালের  

তবে অনুপমের এমন অভিযোগ নিয়ে বুধবার সংবাদমাধ্যমকে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) জানান, শীতকালে বাংলায় সার্কাস আসে। আর শীত পড়তেই বিজেপির নতুন সার্কাস শুরু হয়েছে।

বিজেপি VS বিজেপি। সময় যত গড়াচ্ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার বঙ্গ বিজেপি (BJP West Bengal)। কয়েকদিন আগে থেকেই একের পর এক ‘দলবিরোধী’ মন্তব্য করে গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় বিজেপির সম্পাদক অনুপম হাজরা (Anupam Hazra)। আর তার খেসারত যে তাঁকে এভাবে চোকাতে হবে তা হয়তো দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি অনুপম। বুধবারই বীরভূমের খয়রাশোলে বিজয়া সম্মিলনীর এক অনুষ্ঠান করার কথা ছিল অনুপমের। কিন্তু আচমকাই বুধবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে খয়রাশোলের (Khairashol) অনুষ্ঠানে নিজের প্রাণসংশয়ের আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিলেন। আর ঠিক তার ৬ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ভাঙচুর করা হল খয়রাশোলের সেই অস্থায়ী মঞ্চ। পাশাপাশি নিজেদের দলের কর্মীদের মধ্যেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা সামনে আসে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে এলে এল বিজেপির ‘রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা’। তবে এই প্রথম নয়, বঙ্গ বিজেপির করুণ অবস্থা আগেই সামনে এসেছিল। সে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) হোক বা সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) বা দলবদলু শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। আর তার জেরেই একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করতে এতটুকু পিছপা হচ্ছেন না। আর সেই তালিকায় এবার নয়া সংযোজন অনুপম হাজরা। তবে অনুপমের এমন অভিযোগ নিয়ে বুধবার সংবাদমাধ্যমকে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) জানান, শীতকালে বাংলায় সার্কাস (Circus) আসে। আর শীত পড়তেই বিজেপির নতুন সার্কাস শুরু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিজেপির শুধুমাত্র তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলে বড়বড় কথা বলে। কিন্তু ‘পাগল পোষার’ যে কী যন্ত্রণা তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বিজেপি। কুণাল এরপরই মনে করিয়ে দেন, পাগল পোষা এত সহজ কাজ নয়। এই কাজ যথেষ্ট কঠিন। বিজেপি পাগল পুষেছে, পাগলকে রাজার চেয়ারে বসিয়েছে আর তাঁর পরিণাম কী হচ্ছে তা সবাই দেখছে।

তবে দলীয় নেতৃত্বকে নিয়ে অনুপমের একের পর এক মন্তব্যে ইতিমধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।  অনুপমও রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন। যা নিয়ে বুধবার ফেসবুক লাইভ করেন তিনি। সেখানে বেশ কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। অনুপম জানান, তিনি বাংলা থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা। কিন্তু রাজ্য বিজেপির কোনও সভা বা অনুষ্ঠানে তাঁকে ডাকা হয় না। পাশাপাশি আমন্ত্রণ করা হলে তা এমন সময়ে করা হয়, যাতে তিনি পৌঁছনোর আগেই অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। যা নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যে বুধবারই খয়রাশোলে একটি সভা করার কথা ছিল অনুপমের। আর তারপরই অস্থায়ী সভামঞ্চ ভাঙচুরের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তবে অনুপমের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নালিশ করতে চলেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রের খবর, অনুপম যে ভাবে রাজ্যের নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিচ্ছেন, তাতে সার্বিক ভাবে দলেরই ক্ষতি হচ্ছে। তাই অবিলম্বে এ নিয়ে দিল্লিতে দরবার করতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। অন্যদিকে, এদিনের ঘটনার কথা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জে পি নাড্ডার কাছে জানিয়েছেন অনুপম নিজেই।

এদিনের ঘটনায় বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা অমিতাভ চক্রবর্তী ঘনিষ্ঠ ধ্রুব সাহা ও অনুপ সাহার দিকে আঙুল তুলেছেন অনুপম। তবে এদিন সকালেই দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন কেন্দ্রীয় বিজেপির সম্পাদক অনুপম। সুকান্তের উদ্দেশে তাঁর সাফ দাওয়াই বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে বলব আগে নিজের কেন্দ্রে মন দিন, নিজের ওয়ার্ডে ২০ জন লোক নিয়ে ঘোরেন, তার মধ্যে ১৮ জন নিরাপত্তারক্ষী। পাশাপাশি এদিন দলে সিন্ডিকেট চলছে বলে অভিযোগ তুলে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে নিশানা করলেন অনুপম। তিনি বলেন, অমিত শাহ বাংলায় ৩৫ আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দিয়েছেন। যে ভাবে দলে সিন্ডিকেট চলছে তাতে ৩৫ আসন ‘স্বপ্নের মতো’ মনে হচ্ছে। অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, অসংলগ্ন কথা বলছেন যিনি, তাকে ইগনোর করাই ভাল। কেউ ব্লক সভাপতি হোন বা কেন্দ্রীয় সম্পাদক, তার কথায় যদি বিজেপির ক্ষতি হয়ে তৃণমূলের হাত শক্ত হয়, তা হলে বুঝতে হবে ডাল মে কুচ কালা হ্যায়।

 

 

 

Previous articleঅবশেষে “বিদ্যুৎ মুক্ত” বিশ্বভারতী, শেষদিনেও উপাচার্যের নামে থানায় অ.ভিযোগ!
Next articleপ্রাক্তনের হাতে হাত, সম্পর্কে সিলমোহর সুস্মিতা-রোহমনের!