শিশিরের বিপুল সম্পত্তি বৃদ্ধি! বি.স্ফোরক অভি.যোগ করে তদন্ত চেয়ে মোদি-শাহকে চিঠি কুণালের

কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর সম্পত্তি এক বছরে বেড়েছে ১০ কোটি টাকা! কোন জাদুতে ১০ কোটি টাকা সম্পত্তি এক বছরে বেড়ে গেল? প্রশ্ন তুলে শনিবারই পোস্ট করেন তৃণমূল (TMC) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এর সপক্ষে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একাধিক নথি পোস্ট করেন তিনি। এই সঙ্গে সারদাকর্তার অভিযোগকে জুড়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তৃণমূল মুখপাত্র। সেই সূত্রে ধরেই কাঁথির সাংসদের হঠাৎ করে সম্পত্তি বৃদ্ধির তদন্ত চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) চিঠি দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। একই সঙ্গে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন ইডি-সিবিআই-এর ডিরেক্টরকেও। সেই চিঠিগুলিও নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন কুণাল।

কুণাল (Kunal Ghosh) লেখেন,
“যেহেতু সারদা মালিক অভিযোগ করেছেন যে ২০১১/১২ সালে কাঁথির অধিকারীরা তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করেছিল। বিপুল পরিমাণ অর্থ তাদের দিয়েছিলেন তিনি এবং একই সময়ে সাংসদ শিশির অধিকারী সম্পদের পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে হয় ১০ কোটি টাকা।

সেই কারণে, আমি প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সিবিআই এবং ইডি-এর ডিরেক্টরকে চিঠি লিখেছি, এই বিষয়টি সারদা কেলেঙ্কারি মামলার অধীনে এনে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।“

এর আগে তৃণমূল মুখপাত্র জানান, বাংলায় সবচেয়ে সম্পত্তি বৃদ্ধির নজির শিশির অধিকারীর। এক বছরে তাঁর সম্পত্তি বেড়েছে ১০ কোটি টাকা। কোন জাদুতে ১০ কোটি টাকা সম্পত্তি একবছরে বেড়ে গেল? প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল মুখপাত্র। এরপরেই মেজাজ হারান শিশির অধিকারী। সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেন, কুণালের কথার জবাব দেবেন না।

এদিন, সাংবাদিক বৈঠক করে শিশিরকে তুলোধনা করেন কুণাল ঘোষ। বলেন, কুণাল ঘোষের কথার জবাব দিতে হবে না। কিন্তু যে তথ্য নির্বাচন কমিশনে শিশিরবাবু জমা দিয়েছেন, সেই নথি অনুযায়ী বলুন, কী করে একবছরে ১০ কোটি টাকা সম্পত্তি বাড়ল? ওয়েব সাইটে দেখা যাচ্ছে, ২০০৯ সালে শিশিরের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১৫ লক্ষ টাকা, ২০১১ সালে ১৬ লক্ষ টাকা দেখানো হয়, ২০১২ সালে ১০ কোটির বেশি সম্পত্তি দেখানো হয়। এক বছরে ১০ কোটির বেশি আয় বাড়ে কী করে? এক বছরে ১০ কোটি টাকার বেশি এল? হিসেবে গন্ডগোল থাকলে সংশোধন করালেন না কেন? প্রশ্ন তৃণমূল মুখপাত্রের।

 

এরপরেই কাঁথির অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন কুণাল ঘোষ।  বলেন, “কাঁথির সাংসদের সম্পত্তি ২০০৯ সালের নির্বাচনী হলফনামায় ছিল মাত্র ১০ লক্ষ টাকা। সেখান থেকে মাত্র ৩ বছরে অর্থাৎ ২০১২ সালে শিশিরের সম্পদের পরিমাণই দাঁড়ায় ১০ কোটিরও বেশি! ঠিক যে সময় সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন অধিকারী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে তোলাবাজি করে ব্ল্যাকমেইল করে তাঁর থেকে টাকা তোলার অভিযোগ করেছেন, সেই সময়ই শিশির অধিকারীর সম্পত্তি এত বাড়ল কী করে?”

 

কুণাল প্রশ্ন করন, এক বছরে ১০ কোটি টাকা এল কোথা থেকে? তার পরের বছরগুলিতে আবার রাতারাতি কম দেখান, ৩ কোটি, ১ কোটি-সেই টাকা কোথায় গেল? কাদের দিলেন? মানুষ জানতে পেরে যাবে অধিকারীদের কোটি কোটি টাকা আছে, সেই কারণেই কি চুপিচুপি সরিয়ে চার বছর পর তিন কোটি দেখাচ্ছেন? শিশির অধিকারীর সম্পত্তিবৃদ্ধির যে নথি, লোকসভার রেকর্ডে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ওয়েবসাইটেও রয়েছে।” কটাক্ষ করে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, “শিশিরের সম্পত্তি নিয়ে অভিযোগ আনার পর বিভিন্নভাবে আমাকে আক্রমণ করা হয়েছে। কিন্তু ১০ কোটি টাকা তাঁর আছে কিনা, সেটা বলছেন না কেন? আমি না হয় খারাপ মানুষ, কিন্তু শিশিরবাবু বলুন ১০ কোটির হিসাব ঠিক কিনা? যদি ঠিক হয়, তাহলে সারদার টাকা যে অধিকারী ভাইরা বাবার অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে দেয়নি, সেটা কী করে প্রমাণ করবেন? ওই টাকা সারদার তোলাবাজির টাকা নয়, সেটা কী করে নিশ্চিত হবেন?

 

কুণালের দাবি, “যেহেতু একই সময়ে দুটি ঘটনা ঘটছে তাই অবিলম্বে সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তের সঙ্গে এই সম্পত্তি মামলার তদন্ত করা হোক। সিবিআই-ইডি বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি টাকা খুঁজছে, কাঁথি পুরসভার কোষাগারে এত টাকা পড়ে রয়েছে, সেটা কেন উদ্ধার হচ্ছে না!” প্রশ্ন তৃণমূলের তোলেন।

Previous articleমহিলাদের নিয়ে ‘কু.রুচিকর’ মন্তব্যের জের! ক্ষমা চাইলেও বি.তর্ক পিছু ছাড়ছে না নীতীশের
Next articleগড়ফায় উ*দ্ধার প্রবীণ দম্পতির দেহ! সুই*সাইড নোটে নাতির ভাল থাকার পরামর্শ