মাত্রাতিরিক্ত দূষণের (Pollution) জন্য শুধুমাত্র চাষিদের (Farmers) দায়ী করে তাদেরই খলনায়ক (Culprit) বানানো হচ্ছে। রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকার বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ চাষের জমিতে থাকা ফসলের গোড়া পোড়ানো বলেই আগেভাগে জানিয়েছিলেন পরিবেশবিদেরা। সম্প্রতি খড়কুটো পোড়ানো রুখতে দিল্লি (Delhi) ও পাঞ্জাব (Punjab) সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, কীভাবে এই ফসল পোড়ানো বন্ধ করা যাবে তা নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত। এদিন দিল্লি ও পাঞ্জাব প্রশাসনকে দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, হরিয়ানাকে দেখে শিখতে হবে কীভাবে কৃষকদের সাহায্য করা যায়। উল্লেখ্য, নভেম্বরের শুরু থেকে দূষণের সমস্যায় জেরবার দিল্লি। সেই নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India)।

মঙ্গলবার কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানান, ফসলের গোড়া নষ্ট করা নিষিদ্ধ হলে কৃষিকাজ ধাক্কা খাবে। এ নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও নেই কেন্দ্রের। তবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এসকে কৌল ও বিচারপতি এস ধুলিয়ার বেঞ্চ জানিয়েছে, চাষিদের উপর দোষ না চাপিয়ে কীভাবে আগাছা নষ্ট করা যাবে সে উপায় বের করা উচিত পাঞ্জাব ও হরিয়ানা সরকারের। কারণ এই খড়পোড়া ধোঁয়াই দিল্লির ভয়ঙ্কর দূষণের অন্যতম কারণ। পাঞ্জাব সরকার দাবি করেছিল, ফসলের গোড়া তুলে ফেলার জন্য ১৮ হাজার যন্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু ওই কাজে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনওরকম সাহায্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে হরিয়ানা সরকারের দাবি, আগাছা তোলার যন্ত্রের দাম দু’হাজার টাকা। তাই চাষিরা কিনতে রাজি হচ্ছেন না। তবে এদিন সব পক্ষের বক্তব্য শুনে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, যন্ত্র কেনার জন্য চাষিদের হাতে টাকা দিতে হবে দুই রাজ্যের সরকারকেই। এই যন্ত্র কিনে বিকল্প উপায়ে যাতে ফসলের গোড়া নষ্ট করা যায় সে ব্যবস্থা সরকারি উদ্যোগেই করতে হবে। তা না হলে ফসলের গোড়া নষ্ট করার অন্য বিকল্প উপায় ভাবতে হবে।

তবে এখানেই শেষ নয়। এদিন দূষণের প্রধান কারণ হিসাবে কৃষকদের দায়ী করার প্রবণতাকেও চরম ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিরা বলেন, কোনও কারণ আছে বলেই ফসল পোড়াচ্ছেন কৃষকরা। কিন্তু কৃষকদের কোনও প্রতিনিধি এখানে নেই বলে তাঁদের কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি না। পাশাপাশি এদিন সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়েছে, গত তিন বছরের জন্য দিল্লি সরকারের বিজ্ঞাপনের জন্য কত খরচ হয় তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কেজরি সরকার জানায়, গত তিন বছরে ১,১০০ কোটি এবং চলতি বছরে ৫৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
